E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

লোহাগড়ায় মাদক নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা কমিটির অভিযোগ

২০১৮ জানুয়ারি ০৮ ১৭:৩৭:৫১
লোহাগড়ায় মাদক নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা কমিটির অভিযোগ

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া পৗরসভা সহ উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হচ্ছে, অথচ পুলিশ ধরছে না। খোদ পুলিশের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মাদক ব্যবসায় চলছে। অথচ পুলিশ নিরীহ মানুষকে ধরে এনে মাদক মামলায় দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। আবার পুলিশ মাদক সেবন করে না এমন মানুষকে মাদক দিয়ে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ এনে টাকা আদায় করছে। এসব অভিযোগ করেছেন উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা।

সোমবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বক্তারা এসব অভিযোগ করেন ।

ইতনা ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান বলেন, আতশপাড়া গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী শোয়াইবকে ইতনা থেকে ধরে এনে পুলিশ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে। মাদকের স্পট ও মাদক ব্যবসায়ীদের নাম বহুবার পুলিশকে দিয়েছি। কিন্তু লাভ নেই। পুলিশ তাঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলে মাদক নির্মুল কীভাবে হবে ?

মল্লিকপুর ইউপি চেয়াম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, দোয়ামল্লিকপুর গ্রামের অশোক বিশ্বাস (৫৫) নিরীহ ব্যক্তি। তিনি মাদকের সঙ্গে জড়িত নন। অথচ গত শনিবার (৬ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় লোহাগড়া থানার সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) লুৎফর রহমান তাঁকে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ধরে আনেন। আমি তাঁকে ছাড়ানোর জন্য থানায় গেলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা ২৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন, না হলে ২০ পিচ ইয়াবা দিয়ে মামলা দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন। ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁকে ছাড়িয়ে আনা হয়।

শালনগর ইউপি চেয়ারম্যান খান তসরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, এ ইউনিয়নে মন্ডলবাগ বাজার, মাকড়াইল, আপিলগেট ও রামকান্তপুর গ্রামে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হচ্ছে। সেখানে পুলিশ যায়, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে চলে আসে। এ ইউনিয়নে ছয়জন বড় মাদক ব্যবসায়ী আছে। তাঁরা পাইকারী বিক্রেতা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাঁদের নাম-ঠিকানা বহুবার পুলিশকে দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ তাদের আটক করে না।

জয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বলেন, জয়পুর ইউনিয়নে মাদকের ডিলার ও সাবডিলার আছে। তাঁদের ধরা হয় না। ধরা হয়, যারা এক পুরিয়া গাঁজা খায় তাঁদের। জানি না পুলিশ মাসহারা পায় কি না।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফকির মফিজুল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলা সভায় সবাইূ মুখ খুলেছে, ঝড় তুলেছে। তাতেই বোঝা যায় কী ভয়াবহ অবস্থা। তিনি আরো বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা মোড়ে মোড়ে টাঙ্গিয়ে দেওয়া হোক। এতেও মাদক নির্মুল হবে।

লোহাগড়া থানার এসআই কে এম জাফর আলী বলেন, ঢালাওভাবে অভিযোগ করা হলো। এ উপজেলায় বড় ডিলার নেই। ছোট ছোট ডিলার আছে। তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মাদক নির্মুলের আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু কাছে মাদক না পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।

উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ইউএনও মনিরা পারভীন বলেন, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সভায় উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শেখ নজরুল ইসলাম, নলদী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, লোহাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল শিকদার, লাহুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন, উপজেলার কর্মকর্তা ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।

(আরএম/এসপি/জানুয়ারি ০৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০২ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test