E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

মধুপুরে অবৈধ করাত কলে বন উজাড় 

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ১৫ ১৮:২০:৫১
মধুপুরে অবৈধ করাত কলে বন উজাড় 

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : দেশের তৃতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক বন মধুপুর শালবন আজ চরম হুমকির মুখে। এই বনের বেশিরভাগই উজাড় হয়ে গেছে। যেসব কারণে এই বৃহত্তর বন উজাড় হচ্ছে, এর মধ্যে অবৈধ করাতকল অন্যতম। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় বনের বুকে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি অবৈধ করাতকল। রাতের আঁধারে বন উজাড় করে এই অবৈধ করাতকলেই চিড়াই করে হজম করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রশাসন ও বনবিভাগ দুর্বৃত্তদের সহায়তা করে থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার যোগসাজশে অবৈধ করাতকলের মালিকরা নির্বিঘ্নে তাদের মিল চালিয়ে যাচ্ছেন। করাতকলের মালিকরা সমিতির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে দিচ্ছেন ওই নেতার পকেটে। তবে করাতকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু এসহাক জানান, বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে কিছু চাঁদা তুলে দেই তাকে।

বন এলাকার মধ্যে কোনো প্রকার করাতকল না থাকার কথা থাকলেও উপজেলার চারটি বিটে অনেক করাতকল চোখে পড়বে। শুধুমাত্র মহিষমারা বিটের মধ্যেই রয়েছে বেশ কয়েকটি করাতকল। শালিকা বাজারের করাতকল মালিক মোতালেব হোসেন, মিস্টার আলী ও আমজাদ আলী জানান, বন কর্মকর্তা এবং নেতাদের টাকা-পয়সা দিয়ে মিল চালাতে হয়।

কুড়ালিয়া বাজারের সোহেল রানা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে টাকা দিয়ে অবৈধভাবে সোহেল স’মিল নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন। অবৈধ করাতকলকে ইউনিয়ন পরিষদ ট্রেড লাইসেন্স দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে কুড়ালিয়া ইউপি সচিব মো. আনোয়ার হোসেন জানান, অবৈধ ব্যবসাকে লাইসেন্স দেয়ার নিয়ম নেই। তিনি বলেন, এমনটি হয়েছে কিনা খোঁজ নিয়ে দেখব।

কড়াত কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু এসহাক জানান, ইউএনও একবার করাতকল বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি।

চাড়ালজানি বিট কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান অবৈধ করাতকল বন্ধ করতে না পারায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, একবার পাঁচটি করাতকলের চাকা খুলে আনলে স্থানীয় নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে।

সহকারী বন কর্মকর্তা (এসিএফ) এমএ হাসান বলেন, আমরা বনের ভেতর অবৈধ করাতকল বন্ধের চেষ্টা করছি। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় নেতারা সজাগ না হলে প্রশাসনের একার পক্ষে বন রক্ষা করা সম্ভব হবে না। এসিএফের সঙ্গে আলোচনা করে দেখব, কিভাবে এই ঐতিহ্যবাহী বন রক্ষা করা যায়। স্থানীয় জনসাধারণ অবৈধ করাতকল বন্ধে উর্ধ্বতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপের জোর দাবি করছেন।

(আরকেপি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৫ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test