E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

শিরোনাম:

উপকূলীয় এলাকার গোলপাতা গাছ বিলুপ্ত

২০১৮ অক্টোবর ০১ ১৬:৪৫:৩১
উপকূলীয় এলাকার গোলপাতা গাছ বিলুপ্ত

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর গলাচিপার উপকূলীয় এলাকা থেকে ক্রমেই গোলপাতা গাছ বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তন, প্রয়োজনীয় চাষাবাদ ও সংরক্ষণ ও পরিচর্যার  অভাবে গোলপাতা গাছ বিলুপ্তের অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। ফলে এ অঞ্চলের লোকালয় থেকে গোলপাতা গাছ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

জানা গেছে, পটুয়াখালী ও বরগুনার উপকূলীয় অঞ্চলের লোকালয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বেড়ে ওঠতো এই গোলপাতা গাছ। খাল, বিল, নদীর তীরসহ জলাশয়ের কাছে সর্বত্র গোলপাতা গাছ পাওয়া দেখা যেত। গাছের নাম গোলপাতা হলেও দেখতে নারিকেল গাছের পাতার আকৃতির মতো। এর উচ্চতা প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুটের বেশি। সাধারণ লবণাক্ত পলিযুক্ত মাটিতে গোলপাতা ভালো জন্মায়। বিস্তীর্ণ এলাকাসহ খালের পাড়, নদীর চরাঞ্চল গোলপাতা গাছ চাষের উপযুক্ত স্থান। গোলপাত গাছের বীজ (গাবনা) মাটিতে পুঁতে রাখলেই চারা জন্মায়। গলাচিপার উপজেলার সোনারচর, ছোট বাইশদিয়া, বড় বাইশদিয়া,চর মোন্তাজ,চরকাজল ও চালিতাবুনীয়া ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ এলাকার মাঠ,খাল ও নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রকৃতিগতভাবে এ গোলপাতা জন্মে থাকে।

চরমোন্তাজ এলাকার মো. হালিম মিয়া জানান,এক একটি গাবনায় ১২৫-১৫০টি পর্যন্ত বীজ থাকে।। গোলপাতা গাছ চাষে মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করতে হয় না। সহজলভ্য এবং ব্যয় কম হওয়ায় চাষাবাদ অত্যন্ত লাভজনক। গোলপাতা গাছ চাষে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও কোনো ধরনের পরিচর্যা প্রয়োজন হয় না। এছাড়াও গোলপাত গাছের রস দিয়ে গুড় উৎপাদন করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

এ অঞ্চলের বিস্তীর্ণএলাকায় গোলগাছ চাষের অনুকূল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও সম্ভাবনাময় এ প্রজাতির উদ্ভিদ প্রয়োজনীয় চাষাবাদ ও রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে বিলুপ্ত হতে চলেছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে এখনও গোলগাছের চাষাবাদ হয়। এলাকার বেশিরভাগ পরিবার গরিব ও হতদরিদ্র। এ অঞ্চলের প্রায় ১০ লক্ষাধিক গরিব ও হতদরিদ্র পরিবারের বসতবাড়ির ঘরের চাল ও চিংড়ি ঘেরের স্থাপনার ছাউনির একমাত্র অবলম্বন গোলগাছের পাতা। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদী ভাঙনসহ পরিচর্যা ও রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে লোকালয় থেকে গোলগাছ হারিয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলা কৃষি দফতরের উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা মো. নরুুল আমিন জানান, দক্ষিণাঞ্চলের গোলগাছ চাষাবাদের সরকারি উদ্যোগ নিলে এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়ক হতে পারে। এ অবস্থায় গোলপাতা গাছ রক্ষার জন্য আরও বেশি যতœশীল হওয়ার ।

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আহম্মেদ পারভেজ বলেন,উপকুলীয় এলাকায় লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়া গোলপাতা বন মরে যাচ্ছে। এছাড়া গোলপাতা গাছের আগামরা রোগের প্রাদুর্ভাবের কারনে এ গাছ মরারও একটি কারন। পরিকল্পিত আবাদ ও পরিচর্যা না থাকায় গোলগাছ ক্রমশঃ বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে।

(এসডি/এসপি/অক্টোবর ০১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০২ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test