E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

“ঘরে বাবাও বোন অসুস্থ্য, কলেজে ভর্তি হমু ক্যামনে”

২০১৪ আগস্ট ১৭ ১৩:২০:৩১
“ঘরে বাবাও বোন অসুস্থ্য, কলেজে ভর্তি হমু ক্যামনে”

কলাপাড়া প্রতিনিধি : দারিদ্রকে জয় করে হাসান মোল্লা সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। অন্যের বাসায় লজিং থেকে সে কলাপাড়ার আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে অসুস্থ্য বাবা ও বোনের মুখে হাসি ফোঁটালেও তার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন এখন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক সত্তার মোল্লার তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় হাসান। দারিদ্রতার কারনে বড় ভাই নেছারউদ্দিনের লেখাপড়া হয়নি। সে এখন তেগাছিয়া বাজারে দর্জির কাজ করে। ছোট বোন মাকসুদা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্য। টাকার অভাবে অসুস্থ্য বাবা ও বোনের চিকিৎসা করাতে পারছে না। কিন্তু হাসানের সফলতা তাদের মুখে হারিয়ে যাওয়া হাসি ফিরিয়ে আনলেও এখন হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে কিনা এ নিয়ে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। তাদের একমাত্র স্বপ্ন এখন হাসানের উচ্চ শিক্ষা।

হাসানের ভাই নেছারউদ্দিন জানান, যেখানে তারা টাকার অভাবে বাবা ও বোনের উন্নত চিকিৎসা ও ঠিকমতো দু’বেলা খেতে কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে সেখানে হাসান কিভাবে ভর্তি হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে চিন্তিত। ২০১২ সালে টাকার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেও টাকার অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি হতে না পেরে গ্রামের এই কলেজে ভর্তি হয়। কিন্তু দারিদ্রতার করালগ্রাসে তার মেধাকে আটকে রাখা যায়নি।

হাসান জানায়, এইচএসসিতে ভর্তি হওয়ার পর একই গ্রামের জহির মেম্বার বাড়িতে লজিন থেকেছি। সেখানে থেকে লেখাপড়া করা এবং খাওয়ার সুযোগের বিনিময়ে মেম্বারের দুই শিশুকে প্রাইভেট পড়াতে হয়েছে। তার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। কিন্তু তার পরিবারের পক্ষে তা অসম্ভব। এখন যে অবস্থা তাতে এইখানেই কোন কলেজে ভর্তি হয়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য কিছু একটা কাজ করতে হবে। কিন্তু এখন ঘরে বাবা ও বোন অসুস্থ্য। কলেজে ভর্তি হমু ক্যামনে।

সরেজমিনে আজিমউদ্দিন গ্রামে গিয়ে দেখাযায়, হাসানের এ ফলাফলে এলাকার সবাই খুশি হলেও তার পরিবারের কারো মুখে হাসি নেই। ঘরে অসুস্থ্য কৃষক পিতা সত্তার মোল্লা(৬০) শুইয়ে আছে। ছেলের এ রেজাল্টে মায়ের চোখ থেকে খুশির অশ্রু ঝড়লেও তাতে সন্তানের ভবিষতের চিন্তার ভাবনা স্পষ্ট।

হাসানের মা আমেনা বেগম জানায়, পরীক্ষার সময় পোলাডারে ঠিকমতো খাওনও দিতে পারি নাই। মোর স্বপ্ন ছিল পোলাডারে ইঞ্জিনিয়ার বানামু। কিন্তু ঘরে নুন আনতে পানতা ফুড়ায় অবস্থা, ঘরে ওর বাবা ও বোন অসুস্থ্য । পোলারে এ্যাহন ল্যাহাপড়া করাই ক্যামনে।

আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কলেজের প্রভাষক মো. ইউসুফ আলী জানান, হাসান খুবই মেধাবী। এখন একটু সহায়তা পেলে সে ভবিষতের ভালো রেজাল্ট করবে বলে আশা করছেন।

(এমকেঅার/এটিআর/আগস্ট ১৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ আগস্ট ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test