সালথা থানার ওসি আশিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ফরিদপুরের সালথা উপজেলা পরিষদ, ইউএনও অফিস ও বাসভবন ও সালথা থানা ভবনে তান্ডবের ঘটনার এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ (৫ এপ্রিল) মঙ্গলবার। গত বছর এই দিন সন্ধা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত সালথার গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে সরকারি এসব ভবনে তা-ব চালায়। আগুন ধরিয়ে দেয় দুটি সরকারি গাড়িসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে। এই ঘটনায় মোট আটটি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে দুটি মামলার বাদী পুলিশ। মামলাগুলোকে পূজি করে গত এক বছরে সালথা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে।
এই বছরটি সালথাবাসীর কাছে মুর্তিমান আতঙ্কের নাম ছিল ওসি। তিনি তাণ্ডবের ঘটনায় শতশত মানুষকে জিম্বি করে তাদের অত্যাচার-নির্যাতন করেছিলেন অমানুষিকভাবে। মামলা-রিমান্ডের ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ওসির ভয়ে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়। যোগদানের এক বছর পার হওয়ার সেই বিতর্কিত ওসির বদলির খবরে আনন্দের জোয়ার বইছে সালথাবাসীর মধ্যে। ওসিকে ঢাকা অর্মড পুলিশ হেকোয়ার্টারে বদলি করা হয়েছে। আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করার কথা।
এলাকাবাসী সুত্রে অভিযুক্ত ওসির বিষয় জানা গেছে, গেল বছর ১প্রিল সালথা থানার ওসি হিসেবে যোগদান করেন মো. আশিকুজ্জামান। যোগদানের পর প্রথম দিন তিনি নিজেকে একজন সৎ মেধাবী পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে এলাকাবাসী একটি বার্তা দেন। তা হলো- থানায় মামলা বা অভিযোগ করতে কোনো টাকা-পয়সা লাগবে না। লাগবে না থানায় ঢুকতে কারো অনুমতি। এমন একটি বার্তা কাগজে লিখে থানার দেয়ালে দেয়ালে টানিয়েও রাখেন।
ধর্মীয়ভাবেও তার জ্ঞানের অভাব ছিল না তার। পাশাপাশি থানায় সেবা নিতে কোনো দালাল বা কাউকে একটি টাকাও দিতে নিষেধ করতেন। থানায় সেবা নিতে কেউ টাকা-পয়সা চায় কি না, তাও জানতে চাইতেন। যে কারণে গ্রাম এলাকার সাধারন কিছু সহজ-সরল মানুষের প্রশংসাও কুড়িয়েছেন তিনি।
কিন্তু গত ১৪ মার্চ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে- চাঁদা না দেওয়ায় উপজেলার ভাবুকদিয়া গ্রামের জিহাদ নামে এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে ধরে এনে থানা আটকে রেখে নির্যাতনের। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা হয়। লিখিত অভিযোগ দেয় পুলিশ সুপারের করাবর। অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন।
এরপর একে একে বেরিয়ে আসে ওসির আসল রূপ। সরকার দলীয় নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষ মূখ খুলতে শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নামলে বেরিয়ে আসে ওসির ঘুষ-বাণিজ্য, আটক-বাণিজ্য, সাধারন মানুষকে নির্যাতন ও প্রতারণার ব্যাপক অভিযোগ। ইতিমধ্যে ওসির ঘুষ-বাণিজ্যসহ নানা অপকর্মের বিষয় তথ্যের খোজে মাঠে নেমেছেন জেলা পুলিশ।
এলাকাবাসী সুত্রে আরও জানা গেছে, ওসি থানায় যোগদানের চারদিন মাথায় ৫এপ্রিল লকডাউনের মধ্যে সালথা এলাকায় জরিমানা আদায় নিয়ে ম্যাজিট্রেট ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয় এলাকাবাসীর। সেই ঘটনায় সালথার উত্তেজিত জনতা সালথা ইউএনও অফিস ও বাসভবন, সালথা থানা ও উপজেলা ভবনে তান্ডব চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তাণ্ডবের ঘটনায় মোট আটটি মামলা হয়। মামলাগুলোকে পুজি করে সালথাবাসীকে জিম্বি করে ফেলেন ওসি। হত্যা, চুরি, ছিনতাই, মাদক, পারিবারিক, জমি সংক্রান্ত ঝামেলা, ভাইয়ে-ভাইয়ে মারামারি ও সংঘর্ষসহ যেকোনো ঘটনায় যে কেউ থানা পুলিশের হাতে আটক হলেই তাদেরকে তাণ্ডবের মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখি এবং নির্যাতন করে মোটা অংকের টাকা দাবী করতেন ওসি। যারা টাকা দিতে পারতেন না, তাদেরকেই তাণ্ডবের মামলায় ফাঁসিয়ে দিতেন। জিজ্ঞাসাবাদের নামে রিমান্ডে এনে ওসি নিজেই করতেন চরম নির্যাতন। আর যারা টাকা দিতেন, তাদের নরমাল ধারায় মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জামিনে আসার সুযোগ করে দিতেন। আবার মোটা অংকের অর্থের বিনিময় অনেককে ছেড়েও দিতেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে, মামলাগুলো ছাড়াও তিনি যোগদানের পর থানার দুই এসআইয়ের উপর হামলা ঘটনার মামলা, ৪টি হত্যা মামলা, ইউপি নির্বাচন ও বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনায় লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করেছেন। থানার মধ্যে ঘর নির্মাণের কথা বলে সালথা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রড, সিমেন্ট, ইট ও খোয়া নিয়েছে ওসি। একই কথা বলে সরকার দলীয় একাধিক নেতা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
সুত্র আরও জানায়, ঘুষ-বাণিজ্যের এসব অর্থ ওসি নিজের হাতে নিতেন না। থানার কার্যালয়েও কোনো লেনদেন করতেন না। সরাসরি তার বাসায় গিয়ে দেন-দরবার করতেন ভুক্তভোগিরা। তার বাসায় রয়েছে একটি কাঠের টেবিল। কাগজের খামের মধ্যে টাকা ভরে ওই টেবিলের ডয়ারে ফেলে আসতে হতো। চুক্তি অনুয়ায়ী কেউ টাকা কম দিলে পরে তাকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ফোন করে ভয়ভীতি দেখাতেন। অভিযোগ আছে- ওসি ঠিকমত তার কার্যালয় বসতেন না। লুঙ্গী-গেঞ্জি পড়ে বাসার সামনেই বসে থাকতেন বেশির ভাগ সময়। অপেক্ষায় থাকতেন কখন আসবে ভুক্তভোগী পার্টি। একাধিক ভুক্তভোগির সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
একটি সুত্র থেকে জানা গেছে, ৫ এপ্রিল তাণ্ডবের ঘটনার পর প্রতারনার অভিযোগে আটক হয় সোনাপুরের জোগারদিয়া গ্রামের ফরহাদ মোল্যা। আটকের পর তাকে থানা ভাঙচুরের মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ওসি মোটা অংকের টাকা দাবী করে তার পরিবারের কাছে। পরিবারের পক্ষ থেকে ওসিকে প্রথমে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেয়। তারপরেও ফরহাদকে ভাঙচুর মামলায় আসামী করা হয়। ফরহাদ গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে সোনাপুর ইউনিয়নে নৌকার বিপক্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী হলে ওসি তাকে নানাভাবে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। তখন এক নেতার মাধ্যমে ওসিকে ৫ লাখ টাকা দেয়।
অপরদিকে ওই ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাবু গণমাধ্যমকে বলেন- নির্বাচনের সময় ওসি আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়েছে। আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারন মানুষের নানা সমস্যার জন্য থানায় তদবির করা লাগে। সালথার তা-বের ঘটনার আসামী আমার ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামের ডা. কাউছার ও তার ছেলে টুকুকে গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের অন্য মামলায় আসামী না করার জন্য ওসিকে ১ লাখ টাকা দেওয়া হয়। মামলায় তাদের রিমান্ডে আনার পর আরও ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ওই গ্রামের আরেক আসামী হাসান মেম্বারের পরিবারের কাছ থেকেও ওসিকে মোটা অংকের টাকা দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন- মিনহাজদিয়া গ্রামের নজমাল ও তার ভাই বিল্লালকে তা-বের মামলায় ফাঁসানোর কথা বলে প্রতিপক্ষের চান মাতুব্বরের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নেয় ওসি। কি বলবো, ওসি টাকা ছাড়া কিছু বুঝে না। তাণ্ডবের ঘটনায় বিভিন্ন আসামীদের পক্ষে ওসিকে আমি ১০-১২ লাখ টাকা দিয়েছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জনপ্রতিনিধি, সরকার দলীয় নেতা, ও সাধারন ভুক্তভোগী জানান, তাণ্ডবের মামলার আসামী সালথা গ্রামের আইয়ুব মাতুব্বর ও ছেলে ইমরানকে গ্রেফতার না করার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ৬ লাখ, অন্য মামলায় দেওয়ার কথা বলে জালালের কাছ থেকে ১ লাখ ও মোস্তফা মাতুব্বরের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নেয় ওসি। তাণ্ডব মামলার আসামী বাহিরদিয়া মাদ্রাসার মোহমিম হেফাজত নেতা মাওলানা আকরাম আলীকে গ্রেফতার না করার কথা বলে তার কাছ থেকেও ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ওসি। মামলার আরও দুই আসামী কুমারপট্টি গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি নেতা শাহ আলম ও তার ভাই মুক্ত মাতুব্বরকে গ্রেফতারের পর তাদের অন্য মামলায় না দেওয়ার কথা বলে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তবে এই টাকা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকের মাধ্যমে ওসিকে দেওয়া হয় বলে জানা যায়।
যদুনন্দীর খারদিয়া গ্রামের গ্রাম্য দলনেতা রফিক মোল্যাকে সংঘর্ষের ঘটনায় আটক করে এনে তাণ্ডবের মামলায় আসামী করার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবী করে ওসি। পরে ওসিকে রফিকের মা জেকেরুন নেছা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয়। তারপরেও রফিককে ভাঙচুর মামলা আসামী করে। বিষয়টি রফিকের মা পুলিশের জেলা কর্মকর্তাদের জানালে ওসি তাকে ধরে থানায় এনে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করিয়ে ভিডিও নেয়। ওই ভিডিও পরে পুলিশের জেলা কর্মকর্তাদের দেখিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন ওসি।
রফিক বলেন, তাণ্ডবের মামলায় আমি জেল থেকে বেরিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। নির্বাচনের সময় ও গত ২৩ অক্টোবর খারদিয়ার গ্রামের মারিজ শিকদার হত্যা মামলা ঘটনায় আমার কাছ থেকে ৪-৫ লাখ টাকা নিয়েছে ওসি। মারিজ হত্যার মামলার আসামী ইমরুল খার কাছ থেকেও ওসি ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
যদুনন্দী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন কাইয়ুম মোল্যা। নির্বাচেনর আগে মারামারি ঘটনায় তাকে ধরে এনে তা-বের মামলার আসামী করার ভয় দেখিয়ে তার পরিবারের কাছ প্রথমে ৫০ হাজার, পরে আরও ৩০ টাকা নেয় ওসি। তারপরেও তাকে তাণ্ডব মামলায় আসামী করে। কাইয়ুমকে রিমান্ডে এনে নিয়াতন না করার কথা বলে ১০ হাজার নেয়।
ওসিকে এসব টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে কাইয়ুম মোল্যা বলেন, আমি গ্রেফতার হওয়ার আগে থানার উন্নয়ন কাজের জন্য ওসিকে দুই কিস্তিতে ৯০ হাজার টাকা দেই। ইউপি নির্বাচনে কয়েক দফায় ওসিকে আমি ২ লাখ টাকা দেই। টাকা না দিলে আমি এলাকায় ভোট চাইতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, ২৫ ডিসেম্বর সংঘর্ষে গোলাম মওলা নামে আমার প্রতিপক্ষের এক ব্যক্তি নিহত হয়। ওই মামলা থেকে রক্ষা পেতে আমি গাজী কামরুল নামে আমাদের দলের এক লোকের মাধ্যমে ওসিকে ৯০ হাজার টাকা দেই। ওই মামলা থেকে সাজ্জাদ নামে এক যুবলীগ নেতার নাম কাটার জন্য ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। আমার এলাকার সাইফুল, ইমরান ও মনির শেখ নামে ৩ জনকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে তাদের ৩দিন থানায় আটকে রাখে। এরমধ্যে সাইফুলকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে রাখি। বাকি দুই জনকে ছিনতাই মামলায় জেলে পাঠায়। তিনি বলেন, তাণ্ডব মামলাসহ বিভিন্ন বিষয় আমি এই ওসিকে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছি।
গত ৪ জুন মিলাদ পড়া নিয়ে হামলায় নিহত হয় যদুনন্দী গ্রামের ইদ্রিস কারিকর। এই হত্যা মামলায় আসামী করা হয় যদুনন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্যা ও তার ছেলেদের। আসামী হলে তাদের গ্রেফতার না করার কথা বলে প্রথমে ৩ লাখ টাকা নেয় ওসি। এরপর তা-ব মামলাসহ বিভিন্ন ঘটনায় ভয় দেখিয়ে আব্দুর রব মোল্যার কাছ থেকে কয়েক দফায় ৮-১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। রব মোল্যা বলেন, আমার দলের গোলাম মওলা হত্যা মামলা করার সময়ও ওসি দেড় লাখ টাকা নেন। কিন্তু টাকা নিয়ে সে কোনো কাজও করে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, ইউপি নির্বাচনের সময় ওসি ৪ লাখ টাকা নেয়। আমার ৪ সমর্থক সালথার তাণ্ডব মামলার আসামী। তাদের গ্রেফতার না করার কথা বলে ৫০ হাজার নেয় আমার কাছ থেকে। এই ওসি থানার যোগ দেওয়ার পর বিভিন্ন বিষয় আমার কাছ থেকে অন্তত ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা নিয়েছে। ওনার মত এত টাকা পাগল ওসি জীবনেও দেখিনি।
অন্যদিকে অভিযোগ রয়েছে, ওসির নির্দেশে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি সংগ্রহ করে থানার পুলিশ সদস্যরা। যাদের আইডি কার্ডের ফটোকপি আনা হয় থানায়, তাদের তাণ্ডব মামলার আসামী করার ভয় দেখিয়ে ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে ওসি নিজে। যারা টাকা না দিয়েছে তাদের নাম মামলায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। এভাবে শতশত মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে ওসির বিরুদ্ধে।
গত ২৬ ডিসেম্বর প্রতিপক্ষের হামলা নিহত হয় ভাওয়াল ইউনিয়নের নারানদিয়া প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ মোহাম্মাদ মাতুব্বর। এই হত্যা মামলার এক আসামীকে গ্রেফতার না করার কথা বলে ওসি ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৫ নভেম্বর রাতে উপজেলার আটঘর ইউনিনের গৌড়দিয়া বাজারের একটি দোকান থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির ৩০ বস্তা চাউল কালোবাজারে বিক্রির ঘটনায় দায়ের করা মামলার চার্জসীটে আসামী ডিলার আলিম মোল্যার নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
ওসি নানাভাবে কৌশলে ভয়ভীতি দেখিয়ে থানায় ঘর নির্মাণের কথা বলে সালথা বাজারের রড ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫শ’ কেজি রড, এক সিমেন্ট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে শতাধিক বস্তা সিমেন্ট ও ইটের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ইট-খোয়া নেয় বলে অভিযোগ আছে।
এছাড়া ঘর নির্মাণের কথা বলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বার, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এভাবেই শতশত মানুষকে জিম্বির করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওসি আশিকুজ্জামান। পুলিশের উপর মহল যদি সালথার ভুক্তভোগী মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তদন্তে নামে। তাহলে আরও শতশত মানুষ এই ওসির নানা অপকর্ম ও ঘুষ-বাণিজের বিষয় মুখ খুলবেন বলে অনেকেই জানিয়েছেন।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে সালথা থানার অভিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, সালথায় তাণ্ডবের ঘটনায় যে মামলাগুলো হয়েছে, তাতে আমি কাউকে ছাড় দেই নাই। এমনকি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগকেও আমি এই মামলায় গ্রেফতার করেছি। আমি যেহুত কাউকে ছাড় দেই নাই, তাই তারাই আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ রটাচ্ছে।
ইউপি নির্বাচনে বাণিজ্যে বিষয় তিনি বলেন, সালথায় ইউপি নির্বাচন যে সুষ্ঠ-সুন্দর হয়েছে, তা নজীরবিহীন। নির্বাচনের সময় তাণ্ডবের মামলার যারা আসামী ছিল বা যারা বিভিন্ন মামলার আসামী ছিল, তাদের গ্রেফতার করা হয়। এই কারণে অনেকে আমার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। যারা ক্ষুদ্ধ ছিল, তাদের অনুসারীদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব কর্মকান্ড ছড়াচ্ছে। আমার চরিত্র হননের চেষ্টা করছে। আমাকে চাপা ফেলাতে এসব বলা হচ্ছে। আমি নিজে জানি যে, কি কাজ করছি। তবে অনেক দু:খ আর কষ্ট নিয়ে সালথা থেকে বিদায় নিতে হলো আমাকে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ওসি আশিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের দুই জন কর্মকর্তা তদন্তের দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনা যেহুত ঘটেছে, তাহলে কিছু না কিছু ঘটেছে। সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। তদন্ত করে প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালথার তাণ্ডবের ঘটনার মামলার চার্জশিটের বিষয় এসপি বলেন, সালথার ঘটনার মোট আটটি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত চার্জসীট দেওয়া হবে।
(এএনএইচ/এসপি/এপ্রিল ০৫, ২০২২)
পাঠকের মতামত:
- চাঁদপুরে মেঘনায় ফের বালু উত্তোলন, আটক ৮
- ভালুকায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- ময়মনসিংহে প্রধান বিচারপতিকে সংবর্ধনা
- সবাই এখন আ.লীগ করতে চায় : হাছান মাহমুদ
- চুয়াডাঙ্গায় মাঠ থেকে কবিরাজের গলাকাটা লাশ উদ্ধার
- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রশংসায় জাতিসংঘ মহাসচিব
- ১৪৮ অ্যাকাউন্ট ও পেজ সরালো ফেসবুক
- দেড় বছর ধরে নিখোঁজ ভ্যানচালক ছেলের সন্ধানে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন মা
- টঙ্গীতে বৃহত্তর ফরিদপুর সমিতির পরিচিতি সভা ও আলোচনা অনুষ্ঠান
- টুঙ্গিপাড়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার
- গোপালগঞ্জে স্কুলে মিল্ক ফিডিং প্রোগ্রাম
- নড়াইলে দুর্বৃত্তের হামলায় ইউপি সদস্যের ভাই খুন
- ‘সফলতা না আসা পর্যন্ত লড়াই চলবে’
- ‘বেনজীর দেশে নাকি বিদেশে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই’
- ভারতে শেষ দফার ভোট আজ
- ‘দেশে রাতকানা রোগ নেই বললেই চলে’
- ৬০০ যাত্রী নিয়ে মোংলা কমিউনিটি ট্রেনের যাত্রা শুরু
- ঈদ উপলক্ষ্যে রবিবার ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
- গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েলের নতুন প্রস্তাবে যা আছে
- মৌসুমি বায়ুর বিস্তার, শিগগিরই আসছে বর্ষা
- পর্দা নামলো ১৬তম শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসবের
- ৩০ জুনই শুরু হবে এইচএসসি পরীক্ষা
- আজ নেইল পলিশ দিবস
- ঘূর্ণিঝড় রেমালে বিচ্ছিন্ন পল্লী বিদ্যুতের ৯৯ শতাংশ পুনঃসংযোগ
- সারা দেশে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু
- আনার হত্যায় আরেক অভিযুক্ত সিয়াম নেপালে আটক
- মওলানা নুরুজ্জামান ঢাকার দিলকুশায় ‘শান্তি কমিটি’ গঠন করেন
- মাগুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ১
- নিখোঁজের ৬ মাস পরেও খোঁজ মেলেনি স্কুল ছাত্র শাকিবের, এলাকাবাসীর মানববন্ধন
- মহম্মদপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অবহিতকরণ বাস্তবায়ন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
- দেশে তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমাতে হবে
- উদ্বোধনের ৭ মাস পর শনিবার থেকে মোংলা রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু
- যশোরে তামাককে লাল কার্ড প্রদর্শন, পরিহারের শপথ তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর
- যশোর জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি মতিয়ার সম্পাদক জাহিদ
- রাজবাড়ীতে আরামঘর শিশু নিকেতনের চড়ুই ভাতি অনুষ্ঠিত
- 'সেবিকারা মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে মানুষের সেবা করে সুস্থ করে তোলেন'
- সুন্দরবনে প্রবেশে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা
- বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসে মহম্মদপুরে র্যালি আলোচনা সভা
- ‘ভোটাধিকার প্রয়োগে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না’
- দখল ও দূষণমুক্ত করা হবে প্রতিটি জলাশয় : এমপি আজাদ
- সাতক্ষীরায় আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে গাছ কেটে ও লাঙ্গল চাষ করে অন্যের জমি জবরদখলের চেষ্টা
- সভাপতি রফিক উদ্দিন, সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম
- ‘বিএনপির হাতেই দেশের স্বাধীনতা নিরাপদ’
- মেলান্দহে ৮ লাখ টাকার গাঁজা উদ্ধার, ইউপি সদস্য গ্রেফতার
- মহম্মদপুরে সর্পদংশনে এক ব্যক্তির মৃত্যু সর্প দংশনে
- ফরিদপুরে সপ্তাহব্যাপী বিনামূল্যে চোখের লেন্সসহ ছানি অপারেশন
- সুন্দরবনের নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ তিন জেলে
- ‘যে কোন দুর্যোগে জনগণের পাশে থাকে শেখ হাসিনা’
- ফরিদপুরে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত
- ‘রাজনৈতিক কর্মকান্ড জনবিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা’
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !
০১ জুন ২০২৪
- চাঁদপুরে মেঘনায় ফের বালু উত্তোলন, আটক ৮
- ভালুকায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- ময়মনসিংহে প্রধান বিচারপতিকে সংবর্ধনা
- চুয়াডাঙ্গায় মাঠ থেকে কবিরাজের গলাকাটা লাশ উদ্ধার
- দেড় বছর ধরে নিখোঁজ ভ্যানচালক ছেলের সন্ধানে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন মা
- টঙ্গীতে বৃহত্তর ফরিদপুর সমিতির পরিচিতি সভা ও আলোচনা অনুষ্ঠান
- টুঙ্গিপাড়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার
- গোপালগঞ্জে স্কুলে মিল্ক ফিডিং প্রোগ্রাম
- নড়াইলে দুর্বৃত্তের হামলায় ইউপি সদস্যের ভাই খুন
- মাগুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ১
- নিখোঁজের ৬ মাস পরেও খোঁজ মেলেনি স্কুল ছাত্র শাকিবের, এলাকাবাসীর মানববন্ধন