E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ফুলবাড়ীতে ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি কাশি, নাপা সিরাপ ও ট্যাবলেটের তীব্র সংকট

২০২২ জুলাই ১৭ ১৪:২৬:৪৯
ফুলবাড়ীতে ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি কাশি, নাপা সিরাপ ও ট্যাবলেটের তীব্র সংকট

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এতে ফার্মেসিগুলোতে নাপা ও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েক গুণ বেশি।

জানা যায়, ফুলবাড়ী পৌরশহর থেকে শুরু করে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও ঘরে ঘরে মানুষ জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন পর্যায়ের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোসহ স্থানীয় বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে বিগত দিনের তুলনায় গত এক সপ্তাহে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনকহারে। আবার হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে না গিয়ে নিজ বাসাবাড়ীতে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন রোগীর সংখ্যা আরো বেশি বলে দাবি স্থানীয় বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসকদের।

শহরের নিমতলা মোড় এলাকার কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, জীবনের বিভিন্ন সময় অসুস্থ হয়েছি। কিন্তু এই প্রথম ঈদের দিন জ্বর-ঠান্ডার কারণে সারা দিন বিছানায় কাটিয়েছি। শুধু আমি নই, স্ত্রী ও মেয়েসহ পরিবারের তিনজনই এ রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকের পরমর্শে বাড়ীতেই ওষুধ সেবন করছি। এখন একটু ভালো। কিন্তু শহরের ওষুধের দোকানগুলোতে নাপা কিংবা প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ কোনটিই পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানদাররা বলছেন, ওষুধ কোম্পানীগুলো নাপা কিংবা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সরবরাহ না করায় এই সংকট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ি সম্ভু প্রসাদ কানু বলেন, তার একমাত্র ছেলে ডায়মন্ড গুপ্ত গত কয়েকদিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়ীতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে তার শরীর ব্যথাসহ প্রচণ্ড জ্বর আসছিল মাঝে মধ্যে।

উপজেলা মাদিলাহাট এলাকার গ্রাম্য চিকিৎসক নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত প্রতিদিন অন্তত ২৫-৩০ জন রোগীর চিকিৎসা দিয়ে থাকছেন। এরমধ্যে ৯৮ শতাংশ রোগীই হচ্ছে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। এসব রোগীর চিকিৎসার জন্য নাপা কিংবা প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ প্রয়োজন। কিন্তু কোম্পানীগুলো দাম বাড়াবে এমন অজুহাতে সাপ্লাই না করায় এসব ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় বাংলাদেশ মেডিকেল হলের স্বত্বাধিকারী উত্তম কুমার দাস বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগের ওষুধ হিসেবে নাপা, এক্সট্রা, নাপা এক্সটেন, প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ও সিরাপ বেশি বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু কোম্পানীগুলো দাম বাড়াবে বলে নাপা ও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে এসব ওষুধের সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, যেহেতু আবারও করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। জ্বর-ঠান্ডা করোনার উপসর্গ। বহির্বিভাগে অন্তত দেড় থেকে দু’শ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এরমধ্যে বেশির ভাগই জ্বর-ঠাণ্ডা-সর্দির রোগী। যাদের অবস্থা ভালো তাদেরকে ওষুধ ও পরামর্শ দিয়ে বাড়ীতে এবং যাদের একটু শারীরিক অবস্থা ভালো নয়, তাদেরকে অন্তবিভাগে ভর্তি করে নেওয়া হচ্ছে। নাপাসহ প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সংকটের বিষয়টি জানা নেই। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্যারাসিটামলসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।

(এজি/এএস/জুলাই ১৭, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০১ নভেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test