E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

লোহাগড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ কোটি টাকার জমি দখল করেছে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা

২০২৩ মার্চ ০১ ১৬:২২:১৮
লোহাগড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ কোটি টাকার জমি দখল করেছে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা

রূপক মুখার্জি, লোহাগড়া : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ৩৭ নং কচুবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৭০ শতক জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ভুমি দস্যুদের বিরুদ্ধে। এলাকায় এ নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন। এসব বেদখল হওয়া জমির আনুমানিক বাজার মুল্য ৪ কোটি টাকা। 

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার নবগঙ্গা নদীর দক্ষিন তীরে কচুবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত। ১১২ বছর পূর্বে অর্থাৎ ১৯১১ সালে শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে তদানীন্তন স্থানীয় হিন্দু শিক্ষানুরাগীদের চেষ্টায় এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছিল।ধনাঢ্য ব্যক্তি মাখন লাল সমাদ্দার ও তার নিকট আত্মীয়রা এই বিদ্যালয়ে জমি দান করেছিল।

আর এস রেকর্ডীয় সুত্রে দেখা গেছে, এই বিদ্যালয়ের নামে ১ একর ৪ শতক জমি রেকর্ডভুক্ত আছে এবং হাল সন নাগাদ খাজনা পরিশোধ। ৯৬ নং কচুবাড়িয়া মৌজায় ২ নং আর এস খতিয়ানে মালিক বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে শিক্ষা বিভাগ নড়াইলে মোট ৭ টি দাগে ১ একর ৪ শতক জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৫৪৬ দাগে জমি ১২ শতক, ৫৫১ দাগে জমি ৪ শতক, ৭৫০ দাগে ১৪ শতক, ৭৬৫ দাগে ১৪ শতক, ১১৯৯ দাগে ৩৭ শতক, ১২০৪ দাগে ৬ শতক ও ১২০৬ দাগে ১৭ শতক। দখল বিষয়ক মন্তব্য কলামে কচুবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম আছে।

কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, “বিদ্যালয়ের নামে মাত্র ৩৪ শতক জমি দখলে আছে। বাকি জমি স্থানীয় রাঘববোয়াল ও ভুমি দস্যুরা দখল নিয়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, এসব ভূমি দস্যূরা বিদ্যালয়ের জমি দখল করে পৈত্রিক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে”! এ যেন এক মগের মুল্লুক, বিষয়টি দেখার জন্য কোন কর্তৃপক্ষ আছে বলে মনে হয় না।

খোঁজ-খবর নিয়ে আরও জানা গেছে, ওই মৌজার ১১৯৯ দাগ ৩৭ শতক জমি ভোগদখল করছেন উপজেলার করফা গ্রামের জনৈক রনি , লংকারচর গ্রামের তৈয়ব আলী, কচুবাড়িয়া গ্রামের লুৎফার হোসেনসহ আরো অনেকে অন্য দাগে বিদ্যালয়ের জমি জবরদখল করেছেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।জমি দখলকারী লুৎফার রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি দাসেরডাঙ্গা গ্রামের আমির ফকিরের নিকট থেকে জমি কিনেছি ৩শ টাকার ষ্ট্যাম্পের মাধ্যমে। কিন্তু আমি জমি রেজিষ্ট্রেশন করে নিতে পারি নাই’।

জমি দখলকারী রনির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সে বিভিন্ন কথা বলে মুল বিষয়টি এড়িয়ে যান। বিদ্যালয়ের জমি বিক্রয়কারী আমীর ফকিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায় নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গন্যমান্য ব্যক্তি বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এই বিদ্যালয়ের জমি দখল করে খাচ্ছে তা আমরা জানি, আমরা সংখ্যালুঘুরা বিষয়টি দেখি কিন্তু বলতে পারি না।’

লেখনীর মাধ্যমে সত্য প্রকাশ করে বিদ্যালয়ের জমি অবৈধ দখল মুক্ত হোক- এটা আমাদের দাবী।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিথিলা সাহার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ আমি আগামী সপ্তাহে মিটিং ডেকে আলোচনা করে দেখবো, জমি দখলের বিষয়ে কি করা যায়’ ?

লোহাগড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) স্বপন কুমার বর্মনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, " বিষয়টি আমি শুনেছি। প্রধান শিক্ষককে বলেছি, কোন কোন ব্যক্তি দখল নিয়েছে, সে সব বিস্তারিত জেনে লিখিত ভাবে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

(আরএম/এসপি/মার্চ ০১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test