E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

শিরোনাম:

অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না রূপালীর

২০১৫ জুলাই ০৮ ১২:২১:১১
অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না রূপালীর

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঈশ্বরদী রেল স্টেশন থেকে ট্রেন বদলানোর জন্য নামতে গিয়ে ভীড়ের কারণে নামতে পারেননি দুই সন্তানের জননী রূপালীর (৩৭)। ট্রেন পুনরায় ছেড়ে দেয়ার পর নামতে গিয়ে চলন্ত ট্রেনের নীচে চলে যায় তার দেহ। বিচ্ছিন্ন হয় ডান হাত ও ডান পা। প্রথমে তাকে ভর্তি করা হয় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে। রূপালী রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের রবি বিশ্বাসের মেয়ে। হাত-পা হারিয়ে দু চোখের জল ফেলা ছাড়া কিছুই করার নেই তার।

রূপালীর পরিবার জানায়, মাত্র ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয় কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার একতারপুর গ্রামের বিজন বিশ্বাসের সাথে। তাদের সংসারে একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। স্বামী বিজন বিশ্বাস ছিলো অকর্মণ্য। তাই বেশি দিন সেখানে থাকা হয়নি রূপালীর। ছেলে মেয়ে নিয়ে চলে আসে বাবার বাড়িতে। সংসার চালানোর মত কেউ নেই। তাই বাধ্য হয়ে কাজ নেন দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার এক বাসায়। সেখানে থেকে খেয়ে মাসিক বেতন যা পেত তাই দিয়ে চলতো সংসার। ইতিমধ্যে মেয়েটিকেও বিয়ে দিয়েছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপায়। গত ১২ জুন নিজ বাড়ি পার্বতীপুর থেকে ট্রেনে বাড়ি আসছিলেন রূপালী। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চলন্ত ট্রেনের নীচে চলে যায় তার দেহ। বিচ্ছিন্ন হয় ডান হাত ও ডান পা।

প্রথমে তাকে ভর্তি করা হয় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে। সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। ছয় দিন থাকার পর অর্থাভাবে ফিরিয়ে আনা হয় বাড়িতে। এলাকার কিছু মানুষ ১০ হাজার টাকার সাহায্য তুলে দিলে তাকে পাঠানো হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান দু'দিন পর তাদের জানানো হয় সেখানে রোগীর চিকিৎসা হবেনা। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয় পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর মাঝে রূপালীর বাবা রবি বিশ্বাস একটি গরুসহ সহায় সম্বল বিক্রি করেছেন মেয়ের চিকিৎসার জন্য। এখন তিনি নিঃস্ব।

রূপালীর ছোট বোনের স্বামী দিলীপ বিশ্বাস জানান, পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর ডাক্তাররা তাদের বলেন, এখানে রেখে চিকিৎসা করা কঠিন। তাই তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু যেখানেই চিকিৎসা করানো হবে, সেখানেই টাকা লাগবে। পরে এক ডাক্তার স্থানীয় নিউরো ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামক একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তির পরামর্শ দেন। এখন ওই ক্লিনিকেই চিকিৎসা চলছে তার। সেখানে ওষুধ পথ্য, বেড ভাড়াসহ প্রতিদিন ১২'শ থেকে ১৪'শ টাকা ব্যয় হচ্ছে। টাকা জোগাড় হলে ওষুধ কেনা হয়, না হলে হয়না। যাদের নুন অানতে পানতা ফুরোয় তাদের চিকিৎসার এতো টাকা জোগাড় হবে কোত্থেকে? কে এগিয়ে আসবে সাহায্যে? ক্লিনিকের বেডে শুয়ে শুধুই চোখের জল ফেলেন রূপালী। আনমনে বলে চলেন; যেন জন্ম নিয়েই পাপ করেছিলাম।

নিউরো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ডা. এ জেড এম রেজাউল করিম জানান, ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য নিয়মিত ড্রেসিং করতে হয়। পাংশা হাসপাতালে ড্রেসিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

(পিডি/এসএফকে/জুলাই ০৮, ২০১৫ )

পাঠকের মতামত:

০২ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test