E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

৬ যুগ পর আত্মীয়-স্বজনের দেখা পেলেন আলী হায়দার

২০১৫ নভেম্বর ১৭ ১২:৩৯:৪৭
৬ যুগ পর আত্মীয়-স্বজনের দেখা পেলেন আলী হায়দার

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ সিনেমায় তো প্রায়ই এ রকম হয়। ১৫/২০ বছর পর হারিয়ে যাওয়া মা-ছেলের কিংবা ভাইয়ের সাথে বোনের দেখা হয়। ছোটবেলায় গাওয়া একটি গানের মাধ্যমে খুঁজে পায় পরিবারের একজন আরেকজনকে। এখন অবশ্য ডিজিটাল যুগ, তাই খুঁজে পাওয়ার তরিকাও ভিন্ন।

 

ফেসবুকের কল্যাণে জীবনের শেষ প্রান্তে আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা করার সুযোগ পেলেন মো. আলী হায়দার (৮৫)। প্রায় ১৫ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি। সেই থেকে ঘর ছাড়া। প্রায় ৬ যুগ পর গতকাল সোমবার (১৬ নভেম্বর) মামা-ভাগনার মিলন ঘটে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার চান্দগ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০ বছর আগে আলী হায়দার এসেছিলেন বড়লেখা উপজেলার চান্দগ্রাম এলাকায়। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৪-১৫ বছর। চান্দগ্রাম বাজারটিও এখনকার মতো ছিল না। এখানে আসার পর এলাকার অনেকের বাড়িতে গরু-মহিষ চরিয়ে জীবিকা চালাতেন। বছর তিনেক আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই কাজ করতে পারতেন না। খালি জায়গায় পড়ে থাকতেন। বয়সের ভারে স্পষ্ট করে কথা বলতেও পারেন না। এ অবস্থায় মধ্য চান্দগ্রামের ব্যবসায়ী সোনা মিয়া চান্দগ্রাম বাজারের একটি খালি দোকানকোঠায় তাঁর থাকার ব্যবস্থা করেন। তাঁদের বাড়ি থেকে পাঠানো হত খাবার।
জানা গেছে, নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার কুলছড়ি গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর প্রথম পক্ষের দ্বিতীয় পুত্র হচ্ছেন আলী হায়দার। মা মারা গেলে বাবা আবার বিয়ে করেন। সৎ মায়ের সংসারে আপন মায়ের অভাব পুরণ হয়নি। প্রতিনিয়ত চলত নির্যাতন। নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আলী হায়দার ও তার বড় ভাই নাদেরুজ্জামান বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। আলী হায়দার চলে যান ভারতে। বড় ভাই নাদেরুজ্জামানের আর খোঁজ মিলেনি। ভাইরা চলে যাওয়ার পর একমাত্র ছোট বোন সাফিয়া বেগমও মামার বাড়ি চলে যান। প্রায় চার মাস ভারতে ঘোরাঘুরি করার পর মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার চান্দগ্রাম এলাকায় চলে আসেন আলী হায়দার।
এদিকে সোনা মিয়ার ছেলে আখতার আহমদ আলী হায়দারকে নিয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দেন। এই স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে আলী হায়দারের আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ মিলে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার বড়লেখার চান্দগ্রামে আসেন আলী হায়দারের ছোট বোন সাফিয়া বেগমের ছেলে আব্দুর রহিম। মামা-ভাগনার মিলনে তখন এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমরাতো ধরে নিয়েছিলাম মামা মারা গেছেন। আখতারের পরিবার ও ফেসুবকের কল্যাণে তাঁকে ফিরে পেয়েছি।’
সোনা মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতেই তাঁরা নোয়াখালীর উদ্দেশে চলে গেছেন।

(এলএস/এনএস/নভেম্বর ১৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০১ নভেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test