E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

প্রতিদিন নিঃস্ব হচ্ছে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া

২০১৬ জুলাই ১০ ২১:০৪:১০
প্রতিদিন নিঃস্ব হচ্ছে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া

কক্সবাজার প্রতিনিধি : রাস্তার দু’পাশ জুড়ে সারি সারি ইউক্লিপ্টার্স ও নারকেল গাছ। দুই ধারে লবণ মাঠে লবনের সাদা পালক আর মাছের ঘের। এসবই যেন মূলভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার এক অকৃত্রিম বৈশিষ্ট্য। কিন্তু সাজানো-গোছানো এ অঞ্চলটি স্থায়ী বেড়িবাঁধের অভাবে প্রতিনিয়ত জোয়ার ভাঁটার সাথে পেতেছে সংসার। দিন দিন বাস্তুহারা হচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষ। অথচ এই জোয়ার ভাটার প্লাবন ঠেকাতে নেই পর্যাপ্ত উদ্যোগ। এমনকি ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে যথাযথ ব্যবস্থাও নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

নিজেদের প্রচেষ্টায় জীবন বদলানো শুরু করতেই আবারও প্লাবনের কবলে পড়েন ক্ষতিগ্রস্ত নিঃস্ব মানুষরা। বারবার সাগরের আগ্রাসনে পড়ে ‘ঘুরে দাঁড়ানোই’ হয়ে ওঠে না ওদের।

সরেজমিনে কুতুবদিয়া উপজেলার বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায় মাইলের পর মাইল গ্রাম এখন বঙ্গোপসাগরের পানির নিচে। কিছুদিন আগেও যারা একসঙ্গে বসবাস করতেন, ঘর হারিয়ে এখন কে কোথায় আশ্রয় নিয়েছে কেউ জানে না।

স্থানীয়রা জানান, ৯১’র প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের পর থেকে কুতুবদিয়াবাসী মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। বারবার উপকূলের ওপর আঘাত হানা প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো ভিটেমাটি ছাড়া করেছে দ্বীপবাসীকে। সম্প্রতি কুতুবদিয়ার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া রোয়ানু’র আঘাতে ধ্বংস হয়েছে দ্বীপ রক্ষা বেড়িবাঁধ। প্লাবিত হয়েছে হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমি। মানুষের প্রাণহানিসহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার। ঘরহারা হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে আক্রান্ত পরিবারগুলো। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে অনেকে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের একটাই দাবি, কুতুবদিয়া দ্বীপের প্রায় দু’লাখ মানুষের জীবন রক্ষায় স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ ছয় দফা বাস্তবায়ন। তারা বাচঁতে চাই, বাচাঁর জন্য ত্রাণ নয়, স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই।
এদিকে প্রতিদিনই বাড়ছে জোয়ারের পানি। প্লাবিত এলাকাটিতে এখনো যাদের বাড়ি ঘর সুরক্ষিত আছে, তারা প্রতিনিয়তই শঙ্কায় থাকেন কখন যাবে তার বাড়িটিও। এদের অনেকের রয়েছে লাখ টাকার লবণ মাঠ ও মাছের ঘের। যেকেনো সময় সাগর বক্ষে তলিয়ে যেতে পারে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভলটুকু।

অপরদিকে এই প্লবিত উপজেলার বিভিন্ন বিধ্বস্থ বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য গত ২৪ এপ্রিল ৪টি প্যাকেজের দরপত্র আহবান করে টেন্ডার হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল হয়ে ১৯ মে দরপত্র আহবানের নতুন তারিখ নির্ধারণ করছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোনবারই দরপত্র আহবান শেষ করতে পারেনি বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। ফলে বর্ষার আগে কাজ শুরু করাতো দূরের কথা বর্ষার পরের পাউবো বেড়িবাঁধ সংষ্কারের কাজ শুরু করতে পারবে কিনা তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
কুতুবদিয়ার অসহায় মানুষের এমন দুর্যোগের মুহূর্তে দ্বীপের নেতৃবৃন্দরা এককাতারে এসে দ্বীপবাসীর জীবন বাঁচানোর অধিকার আদায়ে একযোগে কাজ করলে শুধু স্থায়ী বেড়িবাঁধ কেন সকল ন্যায্য দাবি আদায় সম্ভব বলে মনে করেন দ্বীপের সচেতন মহল।

(একেডিএইচ/পি/জুলাই ১০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০২ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test