E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

মাদারীপুরে রোগির পেটে গজ রেখেই সেলাই!

২০১৭ আগস্ট ১৭ ১৮:০৯:৪৭
মাদারীপুরে রোগির পেটে গজ রেখেই সেলাই!

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরে কে আই ডিজিটাল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক চিকিৎসক রোগির পেটে গজ রেখে সেলাই করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে বলে মাদারীপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয়সহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামের সাগর খানের স্ত্রী রুবি আক্তারের প্রায় তিন মাস আগে কে আই ডিজিটাল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক শিমুল আক্তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন।

এ সময় তার একটি ছেলে সন্তান জন্ম হলেও পরে নবজাতক মারা যায়। চিকিসৎক শিমুল আক্তার তখন ভুলবসত পেটের মধ্যে গজ রেখেই সেলাই করে দেয় ঐ রোগীর পেট। পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ সূত্রে আরো জানা গেছে, অপারেশনের পর রোগি রুবি আক্তারের অবস্থা গুরুতর হলে ওই হাসপাতাল থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এরপর র্দীঘ চিকিৎসার পরেও রোগির পেটের ব্যথা কমছিল না। পরে তারা ১০ আগস্ট মাদারীপুরের চৌধুরী ক্লিনিকের চিকিৎসক দিলরুবা ফেরদৌসের কাছে চিকিৎসা নিতে আসে। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষার পরে পেটের মধ্যে গজ আছে এমন বিষয়টি ধরা পরে। ঐ দিন আবার অপারেশন করে তার পেট থেকে গজ বের করে দেয়া হয়।

পরে গজের ব্যাপারটি জানাজানি হয়ে পড়লে ক্ষতিগ্রস্ত রোগিকে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিষয়টি মিমাংসা করে দেন। এরপরে বিষয়টি কারো কাছে না জানাতেও চাপ প্রয়োগ করে প্রভাবশালীরা। ফলে এই ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার প্রথমে কথা বললেও পরে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।

এ ব্যাপারে চৌধুরী ক্লিনিকের চিকিৎসক দিলরুবা ফেরদৌস বলেন, ‘পেটের মধ্যে কিছু একটা ছিলো, ওটা তো আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টেই আছে। ওই চিকিৎসক আমার কলিগ তাই আর বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না।’

এ ব্যাপারে কে আই ডিজিটাল হাসপাতাল এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুয়েল বেপারী বলেন, আমরা ওই রোগির সমস্ত চিকিৎসার খরচ দিয়েছি। কাজ করলে ভুল হতেই পারে। সেই রোগি ফরিদপুরে চিকিৎসা নিয়েছে। আমাদের এখানেও চিকিৎসা করিয়েছি। কোথায় ভুল চিকিৎসা করছে, এটা তো নিশ্চিত নয় কেউ। আমরা ভুল চিকিৎসা করাইনি। তবুও রোগি অত্যন্ত দরিদ্র হওয়ায় চিকিৎসার সব খরচ আমরা দিয়েছি।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার দাস বলেন, এমন ঘটনার খবর শুনে বৃহস্পতিবার ৫ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে যদি কে আই ডিজিটাল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওই চিকিৎসক দোষী প্রমাণিত হয়, তাহলে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে এ ব্যাপারে ডা. শিমুল আক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে একাধিকবার ওই হাসপাতালে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

(এএসএ/এএস/আগস্ট ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০১ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test