কবিতায় মুক্তিযুদ্ধ
.jpg)
বদরুল হায়দার
কবিতায় মুক্তিযুদ্ধ এ দেশের প্রতিটি বাঙালির কাছে গুরুত্বপূর্ণ ও অনিবার্য অধ্যায়। সেদিক থেকে বলতে গেলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বীরত্বগাথা বা মহাকাব্য রচিত হয়নি। যদিও যুদ্ধবিধ্বস্ত দুঃস্বপ্ন, সাহস ও বিক্রমের নতুন মাত্রার শিল্পিত বিবরণ, গৌরব ও আত্মদানের ফলাফল, যুদ্ধবিজয়ের বহুমুখী বর্ণনা প্রকাশিত হয়েছে কবিতায়। মুক্তিযুদ্ধের কবিতা এ দেশের কাব্যধারায় স্বতন্ত্র ও যথার্থ কণ্ঠধ্বনির আপসহীন কাব্য নিদর্শন।
আদিকাল থেকে পৃথিবীর এ অঞ্চল মোগল, পাঠান পর্তুগিজ, ইংরেজ সর্বশেষ পাকিস্তানের শোষণের শিকার হয়েছে। এ বদ্বীপভূমির মানুষ ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে প্রতিদিনই তৈরি করেছে স্বপ্নের বাস্তবায়ন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির ফলে বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানের শাসনে চলে যায়। বাংলা ভাষা অধ্যুষিত অঞ্চল দুই ভাগে এ দুটি অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায়। '৫২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে শহীদ হন বাংলার দামাল ছেলেরা। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার আন্দোলন, পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধে বহু আত্মত্যাগের ফসল হিসেবে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।
সিপাহি বিদ্রোহ, নানকার বিদ্রোহ, কৃষক বিদ্রোহ_ এরূপ বহু বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের মনে স্বাধীনতার সত্তা জাগ্রত হতে থাকে। বাঙালি জীবনের স্মরণীয় ও ত্যাগের অধ্যায় হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের জাতীয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধ এক আলোকিত অধ্যায়। অস্তিত্বের লড়াই, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমের লড়াইয়ে লাখো আত্মদানের মধ্য দিয়ে ছিনিয়ে এনেছে_ একটি লাল সূর্য। একটি পতাকা। একটি স্বাধীনতা।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের স্বাধীনতাকামী আপামর ছাত্রজনতা, সৈনিক, শ্রমিক-কৃষক, শিক্ষক, লেখক, বুদ্ধিজীবী নানাভাবে অংশ নিয়েছে। তেমনিভাবে এ দেশের কবিরা তাদের কবিতায় মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা ও পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে কলমকে শানিত রেখেছেন। দ্রোহ ও ঘৃণায় নরপশুদের কলঙ্কের বিরুদ্ধে কবিরা হাজারো পঙ্ক্তি রচনা করেছেন।
অনেকে অস্ত্রহাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।
কবি জসীমউদ্দীনের 'দগ্ধগ্রাস' কবিতায়_
'কী যে কী হইল পশ্চিম হতে নরঘাতকেরা আসি
সারা গাঁও ভরি আগুনে জ্বালায়ে হাসিল অট্টহাসি।
মার কোল থেকে শিশুরে কাড়িয়া কাটিল যে খান খান
পিতার সামনে শিশুরে কাটিল করিল রক্ত স্নান।
কে কাহার তরে কাঁদিবে কোথায়, যূপকাষ্ঠের গায়
শত সহস্র পড়িল মানুষ ভীষণ খড়গ ধায়'
মুক্তিযুদ্ধের কবিতায় ব্যক্তিগত উপলব্ধির সঙ্গে জাতীয় জীবনের প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ভয়াল কালরাত থেকে বাংলাদেশ দাউ দাউ করে জ্বলছে। সমগ্র দেশ যখন হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত অত্যাচারের দুঃস্বপ্নে প্রোথিত, বাংলাদেশের কবিতায় এর স্বরূপ ফুটে ওঠে সত্য হিসেবে। ফলে বাংলাদেশের কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে রচিত হয়েছে হাজারো পঙ্ক্তিমালা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতায় বিশ্বসাহিত্যে নানা ধরনের পরিবর্তন ও প্রভাব প্রতিফলিত হয়েছে। তেমনিভাবে মুক্তিযুদ্ধ কবিতায় এসেছে বিষয় উপমা মিথ উৎপ্রেক্ষা হিসেবে। দেশ ও সমাজের অঙ্গীকারে সোচ্চার হয়ে ওঠে কবিতা। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে নবচেতনার উন্মেষের আকাঙ্ক্ষা উজ্জীবিত হতে থাকে প্রবলভাবে। কবি হাসান হাফিজুর রহমান, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, মহাদেব সাহা, রফিক আজাদ, শহীদ সাবের, নির্মলেন্দু গুণ, হুমায়ুন কবির, শহীদ কাদরী, মুহাম্মদ নূরুল হুদা, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, শিকদার আমিনুল হক, অসীম সাহা, দাউদ হায়দার, আবুল হাসান, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহসহ অসংখ্য কবির কবিতায় এসেছে মুক্তিযুদ্ধ। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, মনিরুজ্জামানের গানেও এসেছে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র।
মুক্তিযুদ্ধের সময় যে জাতীয়তাবাদী চেতনা, স্বদেশপ্রেম এবং মানবতাবাদী আবেগের স্ফূরণ ঘটেছিল তা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে কবিতার বিষয়-আঙ্গিককে উপযুক্ত ও প্রয়োজনীয় বলে মনে করেছেন কবিরা। কবি জসীমউদ্দীন পাকিস্তানিদের ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হওয়ার পরেই 'দগ্ধগ্রাস' নিয়ে একটি কবিতা লেখেন। পরে 'মুক্তিযুদ্ধ' নামেও আরেকটি কবিতা লেখেন। সুফিয়া কামালের 'আজকের বাংলাদেশ' ও শামসুর রাহমানের 'স্বাধীনতা তুমি', নির্মলেন্দু গুণের 'স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের কীভাবে হলো', রফিক আজাদের 'একজন মুক্তিযোদ্ধার আত্মসমর্পণ', সানাউল হক খানের 'সাতই মার্চ একাত্তর', হাসান হাফিজুর রহমানের কবিতা সংকলন, উদ্যত সঙ্গীত, ড. মনিরুজ্জামানের শহীদ স্মরণে, অসীম সাহার 'শরণার্থী', আবুল হাসানের উচ্চারণবুলি শোকের, হুমায়ুন কবিরের বাংলার কারবালা, আসাদ চৌধুরীর রিপোর্ট ৭১, হেলাল হাফিজের নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বাতাসে লাশের গন্ধসহ অসংখ্য কবিতায় প্রত্যক্ষভাবে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ।
স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলা কবিতায় মুক্তিযুদ্ধ এসেছে বিশাল এলাকাজুড়ে। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি, যুদ্ধপ্রস্তুতি, যোদ্ধার ভূমিকা, বর্বর পাক হানাদারের নৃশংসতা, নির্যাতন, আর্তনাদ, অবরুদ্ধ বাংলাদেশের মানসিকতা, পাক বাহিনীর দালালি, মুক্তিবাহিনীকে সমর্থন, মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধ সংগ্রাম, মহান বিজয়_ এসব ঐতিহাসিক দলিল চিত্র অঙ্কন করেছেন প্রবীণ-নবীন কবিরা। সিকান্দার আবু জাফরের কবিতায়_
'তুমি আমার বাতাস থেকে নাও তোমার ধুলো
তুমি বাংলা ছাড়ো'
মুক্তিযুদ্ধের কবিতায় কবিরা বিচ্ছিন্নভাবে নয় মাসের ঘটনাপ্রবাহ ধারণ করতে পেরেছেন সার্থকভাবে। ফলে কবিতাগুলোতে অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের পরিচয় ঘটে।
মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান জাতিসত্তার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ছিল অধিকভাবে। ফলে মানবাধিকার অন্বেষণ ও মানবতা প্রতিষ্ঠাই ছিল কাব্যের লক্ষ্য। কবি শামসুর রাহমানের 'তোমাকে পাওয়ার জন্য' কবিতায়_
'তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা
তোমাকে পাওয়ার জন্য
আর কত ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?
আর কত দেখতে হবে খান্ড-ব দাহন?'
অবরুদ্ধ দেশে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে যুদ্ধজয়ের স্বপ্ন আবেগের উচ্চারণ রয়েছে কবির হৃদয়বিদারক আকুতি ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। হুমায়ুন কবিরের কবিতা 'কারবালা'য় গণমানুষের মানসিকতা ও মুক্তিচেতনার উপস্থাপনা একান্তভাবে এসেছে। কবির কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকে মুক্তির বাণী, যুদ্ধের কলঙ্কজনক অধ্যায়। কারবালার সেই যুদ্ধের ভয়াবহতার মুক্তিযুদ্ধকে তুলনায় এনেছে_
'কারবালা হয়ে যায় সমস্ত বাংলাদেশ, হায়
কারবালা হয়ে যায়'
বাংলা কবিতার চিরায়ত ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত কবিতাগুলো সময়ের কবিতা দলিল হিসেবে থেকে যাবে। আধুনিক বাংলা কবিতায় কালক্রমিক অর্থবহতায় এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় রয়েছে বাংলাদেশের সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস।
কবি রফিক আজাদের 'একজন মুক্তিযোদ্ধার আত্মসমর্পণ' কবিতায় বীরোচিত মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে_
'তোমার মুখে হাসি ফোটাতে দামি অলঙ্কারে সাজাতে
ভীরু কাপুরুষ তোমার প্রেমিক এই আমাকে
ধরতে হল শক্ত হাতে মর্টার, মেশিনগান_
শত্রুর বাংকারে, ছাউনিতে ছুড়তে হল গ্রেনেড
আমার লোভ আমাকে কাপুরুষ হতে দেয়নি'
মহাদেব সাহার কবিতায় হৃদয়ের রক্তক্ষরণের আক্ষেপ ফুটে উঠেছে জোরালোভাবে_
'এতো হত্যা রক্তপাত আমি থামাতে পারি না'
মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা, রক্তস্রোত, স্বজন হারানোর কথায় ব্যথিত চিত্রগুলোয় কবির বিক্ষুব্ধ চিত্তের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে অবলীলায়। যেখানে কবিরা হাজারো প্রতিকূলতা অতিক্রম করে দেশপ্রেমে আত্মত্যাগের মহিমাকে মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে যুদ্ধজয়ের অপার স্বপ্নকে লালন করে_
'বাঁচাও বাঁচাও বলে এশিয়ার মানচিত্র কাতর
তোমার চিৎকার শুনে দোলে বৃক্ষ নিসর্গ নিয়ন'
আল মাহমুদের কবিতায় মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্বহারা মানুষের করুণ কান্না ও এশিয়ার মানুষের মধ্যে আন্তরিক সহানুভূতির প্রতিফলনের চিত্র ফুটে ওঠে।
মুক্তিযুদ্ধকালে এ দেশের মানুষের জীবনের অনিশ্চয়তা, বিভীষিকাময় অবরুদ্ধ সময়, সমাসন্ন মৃত্যুর অপেক্ষা, অন্যদিকে মুক্তি ও মৃত্যুর মুখোমুখি সময়, পাক হানাদারের অমানবিক বর্বরতার দৃশ্যাবলি, জ্বালাও-পোড়াও, হত্যা ও দমননীতির রক্তচক্ষুর দৃষ্টির বিপক্ষে বাঙালির দামাল ছেলেরা অকুতোভয় সাহসীভাবে পাক হানাদারদের পরাস্ত করে নতুন মানচিত্র, নতুন পতাকা, নতুন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার দৃপ্তশপথ, নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের স্বপ্ন নিয়ে কবিতাগুলো নিজস্বতা ধারণ করেছে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে।
মুক্তিযুদ্ধে অসংখ্য শহীদ হয়েছে। হারিয়েছে স্বজন। মা হারিয়েছে সন্তান, ভাই হারিয়েছে বোন, সন্তান হারিয়েছে মা-বাবা_ এ দুঃখ-পরিতাপগুলো আবুল হাসানের উচ্চারণগুলো শোকের কবিতায় প্রতিফলিত হয়_
'তবে কি আমার ভাই আজ ওই স্বাধীন পতাকা?
তবে কি আমার বোন তিমিরের বেদিতে উৎসব?'
এ দেশের মুক্তিসংগ্রামে, শত্রুমুক্ত করার ক্ষেত্রে
মুক্তিযোদ্ধারাই এ কোটি মানুষের ভরসা ও আশার আলো। হুমায়ুন আজাদ 'মুক্তিবাহিনীর জন্য' কবিতায় মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর প্রতি অগাধ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন_
'তোমার পায়ের শব্দে বাংলাদেশে ঘনায় ফাল্গুন আর ৫৪ হাজার বর্গমাইলের এই বিধ্বস্ত বাগানে এক সুরে গান গেয়ে ওঠে সাত কোটি বিপন্ন কোকিল'
মহান মুক্তিযুদ্ধ হাজার বছরের বাঙালির অহঙ্কার। বাঙালি জীবনে প্রতিটি মানুষকে মুক্তিযুদ্ধ নানাভাবে স্পর্শ করে গেছে। ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের মহিমায় আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধ এ ভূমির জাগ্রত অমর কাব্যের পটভূমি, যেখানে আপামর জনসাধারণের সঙ্গে এ দেশের কবিরাও তাদের কবিতায় মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
অসীম সাহার কবিতায় ন্যায়যুদ্ধ, শোকগাথার চিত্র, প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যুদ্ধের ভাবনা এবং যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান গভীরভাবে ফুটে উঠেছে_
'এই যুদ্ধ ন্যায়যুদ্ধ, সকলেই তৈরি হয়ে নাও'
মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির গৌরবগাথার ইতিহাস। হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার নানা অনুষঙ্গ কবিদের কবিতায় ফুটে উঠেছে। কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর 'বাতাসে লাশের গন্ধ' কবিতায় কবির স্বজন হারানোর ব্যথায় আকুতি অনুভবের প্রতিফলন ঘটে_
'রক্তের কাফনে মোড়া-কুকুর খেয়েছে যারে শকুনে খেয়েছে সে আমার ভাই, সে আমার মা, সে আমার প্রিয়তম পিতা
'
মুক্তিযুদ্ধের কবিতাগুলো '৭১ মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাঙালির জীবন ও রাজনীতি, শিল্প-সাহিত্যে আলোকিত চিরন্তন শিখা হয়ে নতুন উজ্জীবনের সন্ধান দেবে। প্রেরণা জাগাবে মননে মেধায়।
বাংলা কবিতার পাশাপাশি বিশ্বকবিতায় মুক্তিযুদ্ধ এসেছে ভিনদেশীয় কবিদের কবিতায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কবি অ্যালান গ্রিন্সবার্গ 'যশোর রোডে সেপ্টেম্বর' শিরোনামের কবিতায় প্রকৃত চিত্র, জনদুর্ভোগের জীবনযাপন উঠে এসেছে দৃঢ় বলিষ্ঠভাবে_
'লক্ষ লক্ষ আত্মা উনিশ শ একাত্তর
যশোর রোডে ঘরহীন উপরে সূর্য ধূসর
দশ লক্ষ মারা গেছে আর যারা পারছে
পূর্ব পাকিস্তান থেকে কলকাতার দিকে হাঁটছে।'
'৭১ মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বন্ধু-শিল্পী জর্জ হ্যারিসনের 'ও বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ'-এর গানে ভয়াবহতায় নিমজ্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের মৃত্যুঞ্জয়ী আত্মত্যাগ ও মহিমা ফুটে উঠেছে।
জর্জ হ্যারিসনের গানে_
'হাজার হাজার সহস্রলোক
মরছে ক্ষুধায়
দেখিনি তো এমন নির্মম ক্লেশ
বাড়াবে না হাত বল ভাইসব
কর অনুভব
বাংলাদেশের মানুষগুলোকে
ও বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ
এত দুর্দশা
এ যন্ত্রণার নাই কোনো শেষ
বুঝিনি তো এত নির্মম ক্লেশ'
মুক্তিযুদ্ধ এ দেশের প্রতিটি বাঙালির কাছে গুরুত্বপূর্ণ ও অনিবার্য অধ্যায়। সেদিক থেকে বলতে গেলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বীরত্বগাথা বা মহাকাব্য রচিত হয়নি। যদিও যুদ্ধবিধ্বস্ত দুঃস্বপ্ন, সাহস ও বিক্রমের নতুন মাত্রার শিল্পিত বিবরণ, গৌরব ও আত্মদানের ফলাফল, যুদ্ধবিজয়ের বহুমুখী বর্ণনা প্রকাশিত হয়েছে কবিতায়। মুক্তিযুদ্ধের কবিতা এ দেশের কাব্যধারায় স্বতন্ত্র ও যথার্থ কণ্ঠধ্বনির আপসহীন কাব্য নিদর্শন। কবিতাগুলোয় মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ, অনুষঙ্গ, ঐতিহাসিক ভিত্তিতে স্বকীয় সত্তায় গৌরবময় মহিয়ান হয়ে আছে। নয় মাসে জীবন ও মৃত্যুর সার্বক্ষণিক দেখা দেয় উপলব্ধিতে। শিল্প-সাহিত্যে এক নতুন ভাবনার উন্মেষ ঘটে চরম অভিজ্ঞতায়।
লেখক : কবি।
পাঠকের মতামত:
- জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্সে এলো ২৩৭ কোটি ডলার
- সাইফিয়া দরবার শরীফে বাৎসরিক ওরস অনুষ্ঠিত
- ‘আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত নাহলে গণতন্ত্র টেকসই হয় না’
- পঞ্চগড়ের দুই সীমান্ত দিয়ে ১৭ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ
- সোনাতলায় নদী থেকে ভাসমান লাশ উদ্ধার
- মাদারীপুরে পৃথক ঘটনায় ভ্যানচালক ও বাবুর্চির লাশ উদ্ধার
- পানির উচ্চতা ১০৮ ফুট অতিক্রম করলে খুলবে জলকপাট
- যশোর- ৪ আসনে মনোনয়ন পেলেন অ্যাডভোকেট বায়েজীদ
- মাতৃদুগ্ধ ভালোবাসার স্পর্শ, সুস্থ জীবনের শুরু
- উৎপাদনে ফিরল বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিট
- গোপালগঞ্জে সহিংসতা : ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ৪৭৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- সোনারগাঁয়ে চাঁদাবাজি আর দখলদারিত্বের মহা উৎসব
- সালথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার
- গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারালো আরও কমপক্ষে ৭১ ফিলিস্তিনি
- ‘নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই, একদিনও দেরি হবে না’
- অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা আজ
- সালথায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ
- ‘আজকের মধ্যেই আলোচনা শেষ হবে’
- প্রেসক্লাব জামালপুরের সাধারণ সম্পাদকের মায়ের মৃত্যু
- ঢাকায় টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস
- সালথায় অজ্ঞাত ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
- প্রবাসীদের ভোটার কার্যক্রমে জাপান যাচ্ছেন ইসি সচিব আখতার
- এশিয়ান কাপের আগে পূর্ণ প্রস্তুতির লক্ষ্য বাফুফের
- ‘নারীকে কামনার বস্তু হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে’
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ
- ‘কোন মানুষ অর্থের কাছে চিকিৎসায় হেরে যাবে না, সবাই বাঁচবে’
- রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর
- ঝিনাইদহে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি
- প্রজন্মের কাছে এক মুক্তিযোদ্ধার খোলা চিঠি
- প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, বিএনপি নেতা চাঁদের নামে মামলা
- মা
- ঝিনাইদহে বজ্রপাতে মৃত দুই কৃষক পরিবারকে তারেক রহমানের মানবিক সহায়তা প্রদান
- পারিবো না
- অতিরিক্ত ঠান্ডায় ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা
- রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করছে জান্তা
- লক্ষ্মীপুরে গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
- লক্ষ্মীপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন
- নৌকার পক্ষে সমর্থন জানানেল এডভোকেট আব্দুল মতিন
- লক্ষ্মীপুরে দোকান ঘর বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা
- রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি: ১৭ নারীসহ ৫২ জন রিমান্ডে
- মহুয়া বনে
- সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রতিবাদে শেরপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ
- বিজনেস সামিটের পর্দা নামছে আজ
- রামগঞ্জে ইমতিয়াজ ও রায়পুরে অধ্যক্ষ মামুন উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- শায়েস্তাগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে মুখোমুখি দুই সাংবাদিক