E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

উত্তেজনায় ভরপুর ম্যাচে টাইগারদের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

২০২৪ মে ১১ ০০:১৮:৩১
উত্তেজনায় ভরপুর ম্যাচে টাইগারদের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

স্পোর্টস ডেস্ক : শেষ ওভারে রোমাঞ্চ থাকল ভরপুর। কে জিতবে এ নিয়েও হলো দোলাচল। প্রথম দুই বলে সাকিব আল হাসান দিলেন এক রান, পরের বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ আবার জমিয়ে তোলেন ব্লেসিং মুজারাবানি। এমন উত্তেজনা থাকল জিম্বাবুয়ের ইনিংসের পুরোটাতেই। শেষ অবধি বাংলাদেশ জয় পেল, তবে তাদের প্রথম ইনিংস শেষে এমন কিছু কল্পনায় এসেছিল খুব কম মানুষের। 

শুক্রবার মিরপুরে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থটিতে জিম্বাবুয়েকে ৫ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১৪৩ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। সেই রান তাড়া করতে নেমে সব উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা।

এদিন বাংলাদেশ খেলতে নামে একাদশ তিন বদল নিয়ে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের জায়গা নেন সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার ও মোস্তাফিজুর রহমান। ইনিংস উদ্বোধনে তানজিদ হাসান তামিমের নতুন সঙ্গী হন সৌম্য।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন তারা। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন তানজিদ হাসান তামিম, প্রথম দিকে অনেকক্ষণ আরেক প্রান্তে দাঁড়িযে সেটি দেখেন সৌম্য। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৫৭ রান করে বাংলাদেশ। তানজিদের রান তখন ২৭ বলে ৪০, সৌম্যের ৯ বলে ৬।

পাওয়ার প্লের ঠিক পরের ওভারে ব্রায়ান বেনেটকে রিভার্স সুইপে ছক্কা হাঁকিয়ে প্রথম বাউন্ডারি পান সৌম্য। ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তানজিদ, এই সিরিজেই অভিষেক হওয়া তানজিদ এ নিয়ে চার ম্যাচে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পান। ১২তম ওভারের প্রথম বলে গিয়ে তিনি আউট হলেই উদ্বোধনী জুটি ভাঙে।

আগের ওভারে লং অফে দাঁড়িয়ে তার সহজ ক্যাচ ছাড়েন ব্রায়ান বেনেট। মুখোমুখি হওয়া পরের বলে পয়েন্টে জন ক্যাম্পবেলের হাতে ক্যাচ দেন লুক জংওয়ের বলে। ৩৭ বলের ইনিংসে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫২ রান করেন তানজিদ। ওই ওভারেই আউট হন তার উদ্বোধনী সঙ্গী সৌম্য সরকার। ৩৪ বল খেলে ৪১ রান করা এই বোলার ইয়র্কারে এলবিডব্লিউ হন।

দুই ওপেনারকে হারানোর পরের গল্পটা বাংলাদেশের জন্য কেবলই হতাশার। তিনে খেলতে নামা তাওহীদ হৃদয় আউট হন সিকান্দার রাজার বলে। ৮ বলে ১২ রান করে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন বেনেটের হাতে। পরের ওভারে বল হাতে এসে বাংলাদেশের আরও দুই উইকেট তুলে নেন বেনেট।

তার করা প্রথম বল ব্যাট ও প্যাডের মাঝখান দিয়ে গিয়ে আঘাত করে সাকিব আল হাসানের স্টাম্পে। ৩ বলে ১ রান করে ফেরেন তিনি। শেষ বলে শান্তকেও বোল্ড করেন বেনেট, বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৭ বলে ২ রান।

পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে আর টেনে তুলতে পারেননি জাকের আলি অনিক, রিশাদ হোসেনরা। ১৭তম ওভারে এসে ৭ বলে ৬ রান করা জাকেরকে আউট করেন রিচার্ড এনগারাভা। ওই ওভারেই রান আউট হন তাসকিনও।

পরের ওভারে এসে রিশাদ হোসেনকে ইয়র্কারে বোল্ড করেন লুক জংওয়ে। ৪ বলে তিনি করেন ২ রান। শেষ অবধি এক বল বাকি থাকতে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩ ওভারে ২০ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন লুক জংওয়ে। দুটি করে উইকেট পান ব্রায়ান বেনেট ও রিচার্ড এনগারাভা। একটি করে পান সিকান্দার রাজা ও ব্লেসিং মুজারাবানি।

রান তাড়ায় নেমে শুরুতে সুবিধা করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের চতুর্থ বলে কোনো রান করার আগেই ব্রায়ান বেনেটকে আউট করেন তাসকিন আহমেদ। তার শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিড অনে দাঁড়ানো সাকিব আল হাসানের হাতে ক্যাচ দেন জিম্বাবুয়ে ব্যাটার।

নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে আরও এক উইকেট তুলে নেন তাসকিন। ৪ চারে ১০ বলে ১৭ রান করে তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে যান সিকান্দার রাজা। পরের ওভারে এসে মারুমানিকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন সাকিব আল হাসান। এরপর ২৯ বলে ২৫ রানের জুটি গড়েন ক্লাইভ মাদানদে ও জনাথন ক্যাম্পবেল।

তাদের জুটি ভাঙেন রিশাদ হোসেন। তার বলে এলবিডব্লিউ আউট হন ১৮ বলে ১২ রান করা মাদানদে। এর মধ্যে তাওহীদ হৃদয় ক্যাচ ছাড়েন ক্যাম্পবেলের, রায়ান বার্লের ক্যাচ গ্লাভস হাতে অনেকটুকু দৌড়ে স্কয়ার লেগে গিয়ে ছাড়েন জাকের। বার্লের সঙ্গে ক্যাম্পবেলের জুটিতে নতুন করে আশা দেখা শুরু করে জিম্বাবুয়ে।

এর মধ্যে তানজিম হাসান সাকিবের ১৩তম ওভারে ২০ রান নেন তারা। বলের সঙ্গে রানের ব্যবধানও কমে আসে তাতে। তবে ১৫তম ওভারে এসে দুই উইকেট নিয়ে নেন মোস্তাফিজুর রহমান। তৃতীয় বলে অনেকটুকু দৌড়ে দারুণ ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার। ২০ বলে ১৯ রান করে আউট হন বার্ল, ৩০ বলে তার ৩৫ রানের জুটি ভেঙে যায় ক্যাম্পবেলের সঙ্গে। ওই ওভারের শেষ বলে পয়েন্টে রিশাদের হাতে ক্যাচ দেন জংওয়ে।

সেট হয়ে যাওয়া ক্যাম্পবেলকে ১৭তম ওভারের প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন সাকিব। ২৭ বলে ৩১ রান করে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দেন ক্যাম্পবেল। তাকে ফেরালেও ওই ওভারে ১৪ রান দিয়ে দেন সাকিব। ১৮ বলে ২৭ রানের সমীকরণে চলে আসে ম্যাচ।

১৯তম ওভারের প্রথম বলে ক্যাচ সাকিবের মাথার সামান্য উপর দিয়ে ছক্কা হয়ে যায়। তৃতীয় বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে ১০ বলে ১১ রান করা ফারাজ আকরামকে ফেরান তানজিদ হাসান তামিম।

শেষ ওভারে ১৪ রানের সমীকরণ। প্রথম বলেই তানজিদ হাসান তামিম ছেড়ে দেন সহজ ক্যাচ। দ্বিতীয় বলে ডট দিলেও তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন মুজারাবানি। কিন্তু পরের বল ওয়াইড করেন সাকিব, সেটিও ছিল বেশ জোরে। এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন মুজারাবানি। পরের বলে রিচার্ড এনাগারাভাকে বোল্ড করে খেলা শেষ করেন সাকিব। সবমিলিয়ে সাকিব নেন চার উইকেট, মোস্তাফিজ তিন ও তাসকিনের ঝুলিতে গেছে দুই উইকেট।

(ওএস/এএস/মে ১১, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test