ধর্মান্ধতা একটা অভিশাপ
আবীর আহাদ
ধর্মান্ধতার জিগির তুলে ভারত বিভক্তি ঘটেছে । ধর্মের অপব্যাখ্যার কারণে একই ইসলাম ধর্মাবলম্বী হয়েও মধ্যপ্রাচ্যে প্রচুর রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছে । ধর্মান্ধতার কারণে বিশেষ করে খৃস্টান ও ইসলাম ধর্মের মধ্যে নানান পরস্পরবিরোধী উপদল সৃষ্টি হয়েছে । ধর্মান্ধতার জঙ্গিত্বের ওপর সওয়ার হয়ে আল কায়দা ও ইরাক-সিরিয়া ইসলামিক স্টেট (ISIS)সহ বহু ছোটো ছোটো জঙ্গি সংগঠন গড়ে উঠেছে । ধর্মান্ধতার বিষবাষ্পে ভাসছে পাকিস্তান ভারত ও বাংলাদেশ !
যুগে যুগে কালে কালে----বর্তমানেও এই ধর্মান্ধতার জঙ্গিত্বের করালগ্রাসে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষ নিহত-আহত হয়েছে ও হচ্ছে ! ধর্ষণ ও বলৎকারের শিকার হয়েছে । লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে ও হচ্ছে । সহায়-সম্পদ হারিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ দেশ-দেশান্তিত হয়েছে এবং হচ্ছে ।
ধর্মান্ধতাও একটা দর্শন । এই দর্শনের বিষবাষ্পে সেই আদি থেকে অদ্যাবধি পৃথিবীতে যে রক্তপাত হিংসা সন্ত্রাস ও রেষারেষি সৃষ্টি হয়েছে, অন্য কোনো দর্শনে এ-ধরনের পৈশাচিক ও বীভৎস ক্রিয়াকলাপ তেমন দেখা যায় না ।
মানুষে মানুষে, সমাজে সমাজে, দেশে দেশ, পৃথিবীর সর্বত্র শান্তি সৌহার্দ্য সম্প্রীতি মানবতা ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ধর্মান্ধতাই মূল বাধা । ধর্মান্ধতা একটা দানব । একটি অভিশাপ । মনে রাখতে হবে, ধর্মের জন্যে মানুষ নয়-----মানুষের জন্যে ধর্ম । কে ধর্ম পালন করবে, কে করবে না----এটা ব্যক্তিমানুষের ইচ্ছে । জোর করে কোনো ধর্ম কারো ওপর চাপিয়ে দেয়ার কোনো অধিকার কারো নেই ।
আমাদের এ পৃথিবীর বয়স পাঁচ কোটি বছর বলে বিজ্ঞান মতপ্রকাশ করেছে । মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে আনুমানিক ত্রিশ লক্ষ বছর পূর্বে । এর মধ্যে উনত্রিশ লক্ষ নব্বই হাজার বছর ছিলো ধর্মহীন তথা আদিম সাম্যবাদী সমাজ । আর আজ থেকে আট/দশ হাজার বছর পূর্ব থেকে সভ্যতা ও ধর্মীয় সমাজের গোড়াপত্তন ঘটে । আগের উনত্রিশ লক্ষ নব্বই হাজার বছরের মধ্যে সমাজে ব্যক্তিসত্তা ব্যক্তিস্বার্থ ও ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে তেমন কিছুই ছিলো না । মানুষ প্রাকৃতিক নানান দুর্যোগ, মহামারী ও ভয়ংকর জন্তুদানব থেকে নিজেদের অস্তিত্ব নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বা বড়ো বড়ো গোত্রে গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে সমষ্টিগত স্বার্থে নিজেদের পরিচালিত করতো । খাদ্য অন্বেষণ ও বাঁচার তাগিদে একসঙ্গে আহার-বিহার, চলাফেরা, শিকার প্রভৃতি কর্মকাণ্ড করতো । সবাই সমভাবে একসঙ্গে আহারকার্য সমাপ্ত করতো । সমাজে বাড়তি সম্পদের অবকাশ ছিলো না ।
কালক্রমে সমাজ যখন কিছুটা অনুকূলে আসে, সমাজে বিশেষ করে খাদ্য উৎপাদনের পরিবেশ সহজতর হতে থাকে, বাড়তি খাদ্যদ্রব্য ও সম্পদের অবকাশ সৃষ্টি হয়-----তখনি এ সমাজের মধ্যকার শক্তিশালী ও ধুর্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সমাজের বাড়তি সম্পদকে ব্যক্তিসম্পদে ভোগদখলের মানসপ্রবৃতির উদ্ভব ঘটে । এভাবেই পর্যায়ক্রমে ব্যক্তিসত্তা ব্যক্তিস্বার্থ ব্যক্তিস্বাধীনতা ও ব্যক্তিসম্পদের লোভ-লালসার যূপকাষ্ঠে আদিম সাম্যবাদী সমাজের বুকে ধস নেমে আসে ।
এরই ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে বিশেষ করে ব্যক্তিসম্পদকে ভোগদখল ও সামাজিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমাজের অগ্রসরমান শক্তিশালী ও জ্ঞানী লোকজনের চিন্তাচেতনায় তাদের পক্ষে একটা ঐশ্বরিক প্রতিবিম্ব দাঁড় করতে থাকে । সমাজের ব্যাপক মানুষ যাতে ক্ষুদ্র এ মানবগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে না পারে সেজন্য তারা একটি অদৃশ্য শক্তির প্রভাবকে নানান টোটেমে তথা মূর্তিতে এনে মানুষের অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত যে তার এখতিয়ারে, সমাজে ধনী-দরিদ্র তাঁর সৃষ্টি, তার সন্তুষ্টি আদায় করার লক্ষ্যে, এসবের পশ্চাতে এক মহাপরাক্রমশালী ঈশ্বরকে এনে দাঁড় করিয়ে নানান পূজাপার্বণ আচার সংস্কৃতির প্রচলন ঘটায় । আর এসব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সমাজের ব্যাপক অশিক্ষিত অজ্ঞ মানুষকে সেই অদৃশ্য শক্তির মনোরঞ্জনে লিপ্ত রাখার লক্ষ্যে কিছু শ্লক, কিছু গল্প, কিছু নীতিকথার আড়ালে নানান কলাকৌশল, নিয়মনীতি প্রচলন করে প্রচ্ছন্নভাবে ধর্মের সূত্রপাত ঘটায় ।
এ স্তরে এসে সমাজে বিভিন্ন ভাষাভিত্তিক নামের নানান ঈশ্বর ও দেবদেবীর আগমন ঘটানো হয় । সভ্যতার একটি চরম স্তরে এসে শ্রমজীবী ব্যাপক সাধারণ মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত ও শোষক-প্রতারক সমাজের শাসন শোষণ ও প্রভাবপ্রতিপত্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে দেশে সমাজে সমাজে শাসক-শোষক ও ধর্মীয় পরজীবীগোষ্ঠী ধর্মকে একটি ঢাল হিশেবে ব্যবহার করেছে যা এখন সর্বত্র একটি নেশা ও পেশা হিশেবে আবির্ভূত হয়েছে । এ নেশা ও পেশার স্বার্থ ব্যক্তি ও সম্প্রদায়গত ক্ষেত্রে একীভূত হয়েই কালক্রমে ধর্ম ধর্মান্ধতায় পর্যবসিত হয়ে পড়েছে । আর এই ধর্মান্ধতার কবলে পড়ে সামাজিক রাষ্ট্রিক ও বৈষয়িক শান্তি সম্প্রীতি সৌহার্দ্য ও সমৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে । সংঘটিত হয়ে চলেছে হিংসা দ্বন্দ্ব রক্তপাত ও জীবন সংহারের পৈশাচিক হলাহল ।
আসুন, আমরা ধর্মান্ধতা তথা সাম্প্রদায়িকতাকে বর্জন করি । ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে মানবিক সমাজ গড়ে তুলি ।
লেখক : চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
পাঠকের মতামত:
- প্রাথমিকে ‘মেধা যাচাই পরীক্ষা’ হাইকোর্টে স্থগিত
- হাদিকে হত্যাচেষ্টা, ফয়সালের সহযোগী কবির সাত দিনের রিমান্ডে
- ফুলকপি দিয়ে বানিয়ে নিন মজাদার কাটলেট
- নড়াইলে ৫ দিনব্যাপী উপজেলা স্কাউটস সমাবেশের উদ্বোধন
- ‘বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানিতে বড় বাধা দালাল চক্র’
- সালথায় পুলিশের ওপর হামলা, আটক ৩
- বিজয় দিবসে টঙ্গীতে নগর সেবা ফাউন্ডেশন ও স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ
- পাবনায় চাচাতো ভাইয়ের গুলিতে বিএনপি নেতা নিহত
- ফিলিস্তিনসহ ৭ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
- বিবিসির বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা ট্রাম্পের
- ব্যালন ডি’অরের পর ফিফার বর্ষসেরা ‘দ্য বেস্ট’ উসমান দেম্বেলে
- ‘দারুণ কিছু হবে আমার চরিত্রের জার্নির মধ্য দিয়ে’
- ‘করপোরেট গভর্ন্যান্সের মান এখনো সন্তোষজনক নয়’
- মেসির অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা, পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রীর পদত্যাগ
- নিরাপত্তা শঙ্কায় দুপুর থেকে ঢাকায় ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধ
- ‘শোষণমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে’
- ‘তরুণ প্রজন্ম ভিনদেশিদের দাদাগিরি মেনে নেয়নি, নেবে না’
- ‘চোরাগোপ্তা খুন ছাড়াও কঠিনতর পরিকল্পনা আছে আ.লীগের’
- ‘আমাকে বিদায় দিতে কেউ এয়ারপোর্টে যাবেন না’
- 'প্রায় এক ডজন অভিজ্ঞ প্রশাসক নিয়ে বেসরকারি প্রশাসন দাঁড় করানো হয়'
- ‘নির্বাচন নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র হলে যুবসমাজ আবার গর্জে উঠবে’
- সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উদযাপন
- শ্রীনগরে বিকল্পধারা বাংলাদেশ’র শতাধিক নেতাকর্মীর বিএনপিতে যোগদান
- মহান বিজয় দিবস উদযাপন করল যোগপ্রেমীরা
- সাতক্ষীরার সড়কে ঝরল মা-ছেলের প্রাণ, আহত ৬
- অনলাইন সাংবাদিকতায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল ‘চট্টগ্রাম জার্নাল’
- শেখ হাসিনার সাথে মুঠোফোনে কথা বলায় গ্রেফতার আ.নেতা জাহাঙ্গীর
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে জবাই করে হত্যা
- স্বাধীনতার সুখ
- মহম্মদপুরে শহীদ আবীর পাঠাগারসহ মুক্তিযোদ্ধাদের স্থাপনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি
- অমলকান্তি
- ফিলিস্তিনসহ ৭ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
- সন্ত্রাসীদের ঠাঁই নাই
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
- নবীনগরে একই পরিবারের চারজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
- বিবিসির বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা ট্রাম্পের
- 'নির্লজ্জ বেহায়া হতেই কী আমরা তোমাকে খুন করেছি কিংবা তোমাকে রক্ষা করিনি?'
- নবীনগরে তৃতীয়বারের মতো ইংরেজী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
- তৃতীয় দিনের মতো খাগড়াছড়িতে চলছে অবরোধ
- সিলেটের জনপ্রিয় সংঙ্গীত শিল্পী হতে চান শর্মিলা বড়ুয়া
- সিরাজগঞ্জে প্রাইভেটকারে ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ৪
- চা শ্রমিকদের কেউ হামলার শিকার হয়নি, জানালেন বাগান পঞ্চায়েত
- রংপুরে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে মা-ছেলেসহ নিহত ৩
- ‘আয়নাঘরসহ সব গোপন বন্দিশালা বন্ধ করতে হবে’
-1.gif)








