E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন

২০১৭ নভেম্বর ০৪ ১৪:২২:৫৯
ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন

বিনোদন ডেস্ক : ঋত্বিক কুমার ঘটক। উল্কার মতোই জ্বলে ওঠে ধুপ করে নিভে যাওয়া এক খ্যাপা শিল্পস্রষ্টা। চলচ্চিত্র পাগল এক মানুষ ছিলেন তিনি। ঋত্বিক সিনেমা নির্মাণ করতেন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। নিজের বক্তব্য মানুষের কাছে পৌঁছানোর। কখনও খ্যাতি কিংবা পুরস্কারের কাছে মাথা নত করেননি।

ভালো জিনিস বেশি লাগে না। আর তাইতো মাত্র ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা তৈরি করেই এখনও চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের কাছে এক বিস্ময়ের নাম ঋত্বিক। আজ ৪ নভেম্বর (শনিবার) নন্দিত এই চলচ্চিত্র নির্মাতার ৯২তম জন্মদিন।

১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকার ঋষিকেশ দাশ লেনে জন্মগ্রহণ করেন ঋত্বিক ঘটক। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তার পরিবারের সঙ্গে তিনি কলকাতায় চলে যান। তবে নিজের জন্মভূমি ত্যাগ করে শরণার্থী হওয়ার মর্মবেদনা ঋত্বিক কোনো দিন ভুলতে পারেননি এবং তার জীবন-দর্শন নির্মাণে এই ঘটনা ছিল সবচেয়ে বড় প্রভাবক, যা পরবর্তীকালে তার সৃষ্টির মধ্যে বারবার ফুটে উঠেছে।

মাত্র ৫১ বছরের জীবদ্দশায় ঋত্বিক কুমার ঘটক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পেরেছিলেন ৮টি। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন ১০টি। আরও অনেকগুলো কাহিনীচিত্র, তথ্যচিত্রের কাজে হাত দিয়েও শেষ করতে পারেননি। এই হাতে গোনা কয়েকটি চলচ্চিত্র দিয়েই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকারদের কাতারে নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি।

ঋত্বিক ঘটকের প্রথম ছবি ‘নাগরিক’। প্রথম ছবি নির্মাণের পাঁচ বছর পর ১৯৫৭ সালে ঋত্বিক ঘটক নির্মাণ করেন ‘অযান্ত্রিক’। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চমকে যায় চলচ্চিত্র বোদ্ধা আর দর্শকেরা। সফল চলচ্চিত্রকার হিসেবে তিনি খ্যাতি লাভ করেন।

১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষ এবং ১৯৪৭ এর দেশবিভাগের পর শরণার্থীদের অস্তিত্বের সংকট তাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে এবং পরবর্তী জীবনে তার চলচ্চিত্রে এর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

‘অযান্ত্রিক’ এর পর ঋত্বিক নির্মাণ করেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০) ‘কোমল গান্ধার’ (১৯৬১) ও ‘সুবর্ণরেখা’ (১৯৬৫)। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে এসে নির্মাণ করেন তার বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। এটি বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়। অদ্বৈত মল্লবর্মণের ধ্রুপদী উপন্যাস থেকে নেওয়া এ ছবিটি পেয়েছিল ব্যাপক প্রশংসা। এরপর ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় ঋত্বিকের শেষ ছবি ‘যুক্তিতক্ক আর গপ্পো’।

এরপরই ঋত্বিক ঘটক মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। প্রায় তিন বছর মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মানসিক ভারসাম্য হারানো অবস্থায় ১৯৭৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৫০ বছর বয়সে মারা যান এই সেলুলয়েড শিল্পী।

১৯৬৯ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৭৫ সালে ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ কাহিনীর জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০১ নভেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test