E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

মঙ্গলবার রিভিউ আবেদন করবেন নিজামী

২০১৬ মার্চ ২৮ ১২:০৯:১২
মঙ্গলবার রিভিউ আবেদন করবেন নিজামী

স্টাফ রিপোর্টার :মানবতাবিরোধী অপরাধে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদন করবেন মঙ্গলবার।

তিনি বলেন, 'আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কাল সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিস্ট শাখায় এ রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হবে।'

এর আগে গত ১৫ মার্চ মৃত্যুদণ্ড দিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রকাশের পর নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করতে হয়। সে হিসেবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় রয়েছে।

১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনাকারী ও উস্কানিদাতাসহ মানবতাবিরোধী তিনটি অপরাধের দায়ে দোষী জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যনালের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে নিজামীর করা আপিল আংশিক মঞ্জুর করে গত ৬ জানুয়ারি এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার প্রায় আড়াই মাস পর পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশ পেল।

বুদ্ধিজীবী নিধনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালের এই রায় বাতিল চেয়ে তাকে বেকসুর খালাস দেয়ার আবেদন জানিয়ে ওই বছরের ২৩ নভেম্বর আপিল করেন নিজামী।


নিজামীর বিরুদ্ধে আনীত দুই নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ১০ মে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বাউশগাড়ি গ্রামের রূপসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকারদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ঐ সভায় ছিলেন নিজামী। সভার পরিকল্পনা অনুসারে ১৪ মে দু’টি গ্রামের প্রায় সাড়ে ৪৫০ জনকে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করে। এছাড়া প্রায় ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ করে রাজাকাররা।

ছয় নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ২৭ নভেম্বর ধুলাউড়া গ্রামে ৩০ জনকে হত্যায় নেতৃত্ব ও সম্পৃক্ততা রয়েছে নিজামীর।

১৬ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে নৃশংসতা চলাকালে মতিউর রহমান নিজামী ইসলামী ছাত্র সংঘ ও স্বাধীনতা বিরোধী সহযোগী বাহিনী আল বদরের সভাপতি ছিলেন। কিন্তু যখন দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় আসন্ন হয়ে ওঠে তখন ছাত্র সংঘ ও আল বদরের সদস্য দেশের বুদ্ধিজীবী নিধনের ষড়যন্ত্র করে।

১৯৬৬ সাল থেকে নিজামী ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি ছিলেন। এই ছাত্র সংঘই মুক্তিযুদ্ধের সময় আল বদর বাহিনীতে রুপান্তরিত হয়। ফলে নিজামী আল বদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন। বুদ্ধিজীবীদের হত্যায় আল বদর সদস্যদের সহযোগিতা, অনুমোদন, নৈতিক সমর্থন ও তার কর্মের বিষয়ে নিজামী সম্পূর্ণরূপে সচেতন ছিলেন। আল বদর নেতা হওয়ার জন্য অধস্তনদের ওপর নিজামীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। আল বদর সদস্যদের অপরাধ থেকে নিবৃত্ত না করায় তাদের অপরাধের দায় কোনোভাবেই নিজামী অস্বীকার করতে পারেন না। এই তিনটি অভিযোগে নিজামীকে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে আপিল বিভাগ।

উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের দায়েরকৃত ছয়টি আপিলের ওপর চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আপিল বিভাগের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের শীর্ষ নেতা আলী আহসান মো. মুজাহিদ, আব্দুল কাদের মোল্লা ও এম কামারুজ্জামান এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় ইতোমধ্যে কার্যকর করেছে সরকার। এছাড়া ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিলে তার সাজা পরিবর্তন করে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং নিজামীর আপিল আংশিক মঞ্জুর করে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। আপিল বিচারাধীন থাকাবস্থায় মারা গেছেন জামায়াত নেতা গোলাম আযম ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীম। পরে এসব আপিল অকার্যকর ঘোষণা করে আদালত।


(ওএস/এস/মার্চ২৮,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৭ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test