যুদ্ধাপরাধের বিচার, এতো সহজ !

জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে দায়ের করা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল ২৪ জুন মঙ্গলবার। নিজামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা যায়নি। তাই মামলার রায়ও হয়নি।
সারা জাতি তাকিয়ে ছিল একাত্তরের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী নিজামীর রায়ের দিকে। রায় ঘোষণা না হওয়ায় সবাই হতাশ। এটাই স্বাভাবিক। আবার কেউ কেউ নিজামীর রায় ঘোষণা না হওয়ার কারণ হিসেবে 'আঁতাত' ও 'অপকৌশল'-এর কথা বলেছেন। পণ্ডিতজনেরা বিচার বিলম্বিত হওয়াকে বিচার অস্বীকার করার সামিলও বলছেন। যদিও সবাই ভুলে যাচ্ছেন যে, বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার, সরকারের নয়। শুধু জামায়াতের আমির নিজামী নয়, যুদ্ধপরাধের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বাস্তবসম্মত বিবেচনার জন্য একটু পেছন ফিরে তাকাতেই হবে।
১৯৭১ এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশ পাকহানাদারমুক্ত হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের সরকার একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিচার সম্পন্ন করতে সারাদেশে ৭২ টি ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন। ওই ট্রাইব্যুনাল গুলোতে অনেক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। প্রস্তুতি চলছিল আরও মামলা দায়েরের। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সার্বিক আয়োজনও ছিল চমৎকার। কিন্তু ১৯৭৫ এ পাল্টে যায় দৃশ্যপট। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে খুনের পর জেনারেল জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া ভণ্ডুল করে দেয়। শুধু তাই নয়, রাজাকার শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রীত্ব দিয়ে সে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের 'সম্মানিত' করে। তারই ধারাবাহিকতায় মাওলানা মান্নান, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদরা ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশে মন্ত্রিত্ব পায়। আজ যতো মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে সোচ্চার, তাদের অনেকেই সেদিন টু-শব্দটি করেননি। অবশ্য তখন টু- শব্দটি করবার সুযোগও তেমন ছিল না।
অনেক পরে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম যুদ্ধাপরাধ ইস্যুটিকে আবার জীবন্ত করেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামীলীগ এই ইস্যুতে সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতা করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসীন হয়। তারা বিচার প্রক্রিয়াও শুরু করে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি রায় হয়েছে। কার্যকর করা হয়েছে একটি ফাঁসির রায়ও। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ১৯৭৫ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া এবং পরবর্তীতে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীরা দেশের মন্ত্রি হওয়ায় বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করে। দেশের সাধারণ মানুষ ধরেই নিয়েছিলেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে। কিন্তু সকলে যতো সরল করে ভাবেন, বিষয়টি ততো সরল নয়। একাত্তরে যুদ্ধপরাধে সম্পৃক্ত জামায়াতে ইসলামীর গডফাদার যখন জেনারেল জিয়ার সৃষ্ট দল বিএনপি, তখন আওয়ামীলীগ সরকারকে খুবই সতর্কতার সাথেই বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার কাজটি করতে হয়।
পরিতাপের বিষয়, যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে অনেকেই যতো সোচ্চার, তারা কিন্তু জামায়াতের পৃষ্ঠপোষক বিএনপির বিরুদ্ধে উল্টো ততোটাই নির্লিপ্ত। আমরা মনে করি, তথাকথিত প্রভাবশালীদের এই স্ববিরোধিতাই একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত ও জটিল করছে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় না থাকলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দূরে থাকুক, এই ইস্যুতে কথা বলাও দুরূহ হতো, আমরা সেই বাস্তবতা ভুলে যাই। আমরা ভুলে যাই, শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা নিয়েই পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিতে হয়েছে।
আমরা মনে করি, যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। কথায় কথায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের আওয়ামীলীগ সরকারের অস্তিত্বে আঘাত করলে যে এই বিচার প্রক্রিয়া চিরদিনের মতো বন্ধ হয়ে যেতে পারে, সেই বাস্তবতাও যথেষ্ট সতর্কতার সাথে বিবেচনায় রেখেই এগুতে হবে। আর তাহলেই আমরা যুদ্ধাপরাধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ ইস্যুতে সফল হবো।
(এসএস/অ/জুন ২৪, ২০১৪)
পাঠকের মতামত:
- দশমীতে অশ্রুসিক্ত নয়নে ভক্তরা বিদায় জানালেন দেবীদুর্গাকে
- দেশীয় মাছের অস্তিত্ব সংকটে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী চারান বিল
- ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই
- পাকিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে নারী বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের
- ধামরাইয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ২০৪টি পূজামন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন
- পাংশায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শান্তি পূর্ণ ভাবে শারদীয় দুর্গা পুজা সম্পন্ন
- মুক্তিবাহিনী ধনবাড়ীতে অবস্থানরত পাকসেনাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়
- চোখের জলে প্রতিমা বিসর্জন, শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
- সাতক্ষীরায় শারদীয়া দুর্গাপুজার সমাপ্তি
- বিমানবন্দরে আখতার-জারার সংবাদ সম্মেলন বর্জন সাংবাদিকদের
- ‘নির্বাচন নিয়ে জনমনে শঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে উপদেষ্টার বক্তব্য’
- বিসিবি নির্বাচনে ১৫ ক্লাবের প্রতিনিধিদের নাম অন্তর্ভুক্তি স্থগিত
- সাতক্ষীরায় সাংবাদিক রামকৃষ্ণ চক্রবর্তীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরি
- সাতক্ষীরায় পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের মালিকের বাড়ি থেকে সোনার গহনা ও নগদ টাকা লুট
- ‘২৪ বিপ্লবের রক্ষাকবজ জুলাই সনদ’
- সালথায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৬ জুয়াড়ি গ্রেপ্তার
- প্রায় তিন বছর পর উন্মুক্ত কেওক্রাডং পর্বত, পর্যটকের ভিড়
- সাবেক এমপি মুক্তি-বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোজাম্মেল কারাগারে
- সব বাধা পেরিয়ে গাজার জলসীমায় ফ্লোটিলার জাহাজ, পথে আরও ২৩টি
- ‘আ.লীগের বিষয়ে কোনো ছাড় নয়’
- ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ন্যায্য দাবি পর্যায়ক্রমে পূরণ করা সম্ভব’
- সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্তে ১৫ জন বাংলাদেশীকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর
- যশোর সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকের লাশ দেখল বাংলাদেশি স্বজনরা
- কাপ্তাই জোন অধিনায়ক কাপ্তাইয়ে পুজা মন্ডপ পরিদর্শন
- ‘সাবেক শিল্পমন্ত্রীর হাতকড়া পরা ভাইরাল হওয়া ছবিটি ভুয়া’
- ‘আলহামদুলিল্লাহ, পাকিস্তানের সম্মান রক্ষা পেয়েছে’
- রাহুল রাজের প্রেমের কবিতা
- বরিশালে ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
- আটলান্টায় ফোবানা সম্মেলন পরিণত হলো পারিবারিক অনুষ্ঠানে
- মজাদার তালের বড়া বানাবেন যেভাবে
- মে দিবসের কবিতা
- বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস : লক্ষণ ও প্রতিরোধে করণীয়
- বাংলাদেশের এশিয়া কাপ মিশন শুরু আজ
- গোলমরিচ ও তেজপাতার গল্প
- নারী ব্যালন ডি’অরে হ্যাটট্রিক স্পেনের বোনমাতির
- টানা ৮ দিন স্যাটেলাইট সম্প্রচারে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা
- আগুনে পুড়ে গেলে তাৎক্ষণিক যা করবেন
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- অবশেষে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল
- জাতীয় নারী ক্রিকেট দলকে ভারতীয় হাইকমিশনের সংবর্ধনা
- অস্কারের মঞ্চে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
- টাইমস স্কয়ারে দুর্গাপূজা
- দেশীয় মাছের অস্তিত্ব সংকটে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী চারান বিল
- নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ: নির্বাচন, অভ্যন্তরীণ সংকট ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতি
- অমলকান্তি