ভারতীয় সভ্যতার আলোকে দক্ষিণ এশিয়া আলোকিত হোক
![ভারতীয় সভ্যতার আলোকে দক্ষিণ এশিয়া আলোকিত হোক](https://www.u71news.com/article_images/2021/03/13/Capture-12.png)
শিতাংশু গুহ
বাংলাদেশ ৯০% মুসলমানের দেশ, বা মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ট দেশ, এখানে সবকিছু ইসলামিক বিধানমতে চলবে, হিন্দুরা ভারত যাও, এটি মুসলমানের দেশ, এসব কথাবার্তা শুনেননি এমন হিন্দু বা সংখ্যালঘু দেশে নেই? কথা কিন্তু সত্য! ২০১১’র জনসংখ্যা জরীপ অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৪৯,৭৭২.৩৬৪, এরমধ্যে মুসলমান ১৩৫,৩৯৪,২১৮জন এবং হিন্দু ১২,৭৩০,৬৫১, বৌদ্ধ ৮৯৮,৬৩৫জন, শতাংশ হারে যা দাঁড়ায় তা হচ্ছে, মুসলিম ৯০%, হিন্দু-বৌদ্ধ বা অন্যান্য ১০%।
দক্ষিণ এশিয়ায় ৮টি দেশ, যাকে ‘সার্ক’ বলা হয়, এগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তান। উইকিপিডিয়ার মতে এ দেশগুলোর জনসংখ্যা প্রায় ২০০কোটি’র কাছাকাছি (১৯৫কোটি)। এরমধ্যে হিন্দু ১৩০কোটি, মুসলমান ৫৬কোটি, বাকি ১৪ কোটি অন্যান্যরা। তাহলে কি হিন্দুরা বলতে পারে যে, দক্ষিণ এশিয়ায় তাঁরা ব্যাপকভাবে সংখ্যাগরিষ্ট, তাই সবকিছু হিন্দুধর্মীয় বিধানমতে চলবে, বা বলা উচিত কিনা?
সার্কভুক্ত ৮টি দেশের মধ্যে ভারত ও নেপাল হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ট, কিন্তু হিন্দুরাষ্ট্র নয়, বা রাষ্ট্রধর্ম নেই। ৪টি রাষ্ট্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট, সবগুলোর রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’, ৩টি ইসলামিক রাষ্ট্র, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপ। বাংলাদেশ নামে গণপ্রজাতন্ত্রী, কামে ইসলামিক। এখানে সরকার প্রকাশ্যে বলে, রাষ্ট্র চলবে ‘মদিনা সনদ’ অনুযায়ী এবং ‘কোরান ও সুন্নাহ’-র পরিপন্থী কোন আইন হবেনা। শ্রীলংকা প্রজাতন্ত্র, বৌদ্ধ রাষ্ট্রধর্ম এবং ভুটান বৌদ্ধরাষ্ট্র।
দক্ষিণ এশিয়ায় কোন খৃষ্টান রাষ্ট্র নেই। তবে ভারতের ৪টি রাজ্য নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশ খৃষ্টান অধ্যুষিত। এছাড়া গোয়া, মনিপুর, কেরালা ও নিকোবর দ্বীপপুন্জে খৃষ্টানদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশে খৃষ্টান ০.৩%, তাঁরা অপেক্ষাকৃতভাবে হিন্দু ও বৌদ্ধদের চেয়ে কম অত্যাচারিত, কারণ পৃথিবীর শক্তিধর দেশগুলো খৃষ্টান সংখ্যাধিক্য। বৌদ্ধরা অত্যাচারিত, কিন্তু ২০১২-তে রামু’র ঘটনার পর চীন ও শ্রীলংকা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে, শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ দূতাবাস ঘেরাও হয়েছে। হিন্দুরা সর্বাধিক অত্যাচারিত, কারণ এদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যে কোন দেশ নেই!
দক্ষিণ এশিয়ায় কোন হিন্দুরাষ্ট্র নেই, অথবা রাষ্ট্রধর্ম হিন্দু নেই? নেপাল হিন্দুরাষ্ট্র ছিলো, কিন্তু ২০০৭ সালে তা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিবর্তিত হয়! কোন মুসলিম সংখ্যাগুরু রাষ্ট্রে এটি কি সম্ভব, না হলে কেন নয়? বাংলাদেশে জন্ম নেয় ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ রাষ্ট্র হিসাবে, ১৯৭৭সালে ধর্মনিরপেক্ষতা উঠে যায়, ১৯৮৮সালে রাষ্ট্রধর্ম জুড়ে বসে। ভারতীয় সংবিধানের মুখবন্ধে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজিত, ৩জন মুসলমান, ১জন শিখ রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। চারটি মুসলিম দেশের পক্ষে একথা কি চিন্তা করা যায়?
কেন নয়? বরং এসব দেশে হিন্দুরা রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে অত্যাচারিত। মহাভারতের ‘গান্ধারা’ রাষ্ট্রটি এখন আফগানিস্তান, সেখানে এখন হিন্দু খুঁজতে মাইক্রোস্কোপ লাগবে। পাকিস্তানে ১৯৪৭ সালে ২৯% হিন্দু ছিলো, এখন ২%। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে ২০% হিন্দু ছিলো, এখন ১০%। পূর্ব-পাকিস্তানে ১৯৭১ সালে ৭কোটি মানুষের মধ্যে দেড় কোটি হিন্দু ছিলো, ২০২১-এ স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যাটি এখনো দেড় কোটি, যদিও মানুষ বেড়ে ১৮কোটি! পক্ষান্তরে ভারতে মুসলমান বেড়ে ১৪%। মুসলিম দেশে হিন্দু বা সংখ্যালঘু কমে কেন, এর জবাব কি?
নেপাল হিন্দু প্রধান দেশ, সেখানে ৮২% মানুষ হিন্দু। সেখানে আজপর্যন্ত হিন্দুরা কোন মসজিদ ভেঙ্গেছে বলে খবর পাওয়া যায়নি। সোয়াশো কোটি হিন্দুর দেশ ভারতে একটি মসজিদ ভেঙ্গেছে, বাবরি মসজিদ/ রাম জন্মভূমি বিতর্ক ছিলো, আদালতের রায় মন্দিরের পক্ষে গেছে (মনে রাখতে হবে ভারতের আদালত ‘কাজীর বিচার’ নয়)। পক্ষান্তরে পাকিস্তানে প্রায় সকল মন্দির, চার্চ, গুরুদুয়ার গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বাংলাদেশে এমন একটি বড় মন্দিরও নেই, যা গত পঞ্চাশ বছরে অন্তত: একবার আক্রান্ত হয়নি, বা মুর্তি ভাঙ্গা হয়নি, রাজধানীর ঢাকেশ্বরী ও রমনা এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত! ভারতীয় সভ্যতার আলোকে দক্ষিন এশিয়া আলোকিত হোক।
হিন্দু সংখ্যাগুরু ভারত এখনো বৃহত্তম শিখ ও পার্শি দের আবাসভূমি। মুসলিমরা বিশ্বের দ্বিতীয় সংখ্যাগুরু। ইসরাইলের পর প্রচুর ইহুদীর বসবাস। মুসলিম দেশে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান হয়না কেন? পাকিস্তানের ইহুদীরা কোথায়? বাংলাদেশে কি একটি ইহুদি পরিবারও বসবাস করতে পাবরে? ‘শান্তির ধর্মে’ তো সব মানুষের শান্তিপূর্ণ সহবস্থান হবার কথা? বিশ্বে ৫৭টি মুসলিম দেশে তা হচ্ছেনা কেন? সংখ্যা কি সত্য তুলে ধরছে না?
ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হোক বলে যে জনপ্রিয় দাবি উঠছে, তাতে যাঁরা বাঁধ সাধছেন, তাঁরা কিন্তু পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে হিন্দু বিতাড়নের বিষয়ে একদম চুপ! ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হলেও গণতন্ত্র থাকবে, যেমন আছে ইসরাইলে, কারণ হিন্দুধর্ম গণতন্ত্রের সাথে সাংঘর্ষিক নয়? ১৯৪৭-এ ভারত ভাগ হলে পাকিস্তান শুধু মুসলমানের দেশ হয়, পক্ষান্তরে ভারত হয় সব মানুষের দেশ, মুসলমানরা সেখানে সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে-বর্তে আছে। বাংলাদেশ সৃষ্টির কিছুকাল পর থেকেই পাকিস্তানকে অনুসরণ করে, এখন ‘মিনি-পাকিস্তান’ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু নিত্যদিন নির্যাতিত।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একবার বলেছিলেন, বাংলাদেশে আপনারা যখন ‘সংখ্যাগুরু সংখ্যাগুরু’ বলে গলা ফাটাচ্ছেন, ভুলে যাবেন না যে, সীমান্ত পেরিয়ে গেলেই আপনি সংখ্যালঘু। দক্ষিণ এশিয়ার চারটি মুসলিম দেশ যখন তাদের ‘সংখ্যাগুরুত্ব’ নিয়ে বড়াই করেন, তখন ভারত ও নেপালে হিন্দুরা এবং শ্রীলংকা ও ভুটানে বৌদ্ধরা বড়াই করবেন না কেন বা করা উচিত কিনা? দক্ষিণ এশিয়ায় হিন্দুরা জোরেশোরে বলতে পারেন কিনা যে, এ অঞ্চলে আমরা ব্যাপকভাবে সংখ্যাগুরু, তাই সবকিছু আমাদের মতে চলবে!
নৈতিক প্রশ্ন হচ্ছে, এ ধরনের বক্তব্য কি ঠিক? ভারত, আমেরিকা, ইউরোপ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হবে, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্টতার জোরে মুসলিমরা তাঁদের দেশগুলো ‘মুসলিম রাষ্ট্র’ বানাবেন, এবং সেখানে অন্যরা ‘গনিমতের মাল’ এ চিন্তা-চেতনা কতটা সঠিক? অনেকদিন আগে বিজেপি’র এক নেতাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, একশ কোটি হিন্দুর দেশে তোমাদের ‘হিন্দু-হিন্দু’ করতে হয় কে? তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে তোমার যদি ‘ইসলাম-ইসলাম’ করতে পারো তাহলে আমরা করলে দোষ কি?
মোদ্দা কথা হচ্ছে, সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু বিভাজন করে আর কতকাল মানুষের ওপর অত্যাচার চলবে? সংখ্যাগুরু হলেই দেশটি ধর্মভিত্তিক হতে হবে কেন? দক্ষিণ এশিয়ার চারটি মুসলিম দেশকে নুতন করে এনিয়ে ভাবতে হবে বৈকি! ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হোক, স্বাভাবিক কারণে মুসলমানরা (আরো অনেক আছেন) তা চায়না, এরাই কিন্তু পাকিস্তান বা বাংলাদেশ ‘সব মানুষের দেশ’ হোক তা চায়না? মুসলিম দেশগুলো গণতান্ত্রিক হোক তা চায়না! কারণ কি?
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।
পাঠকের মতামত:
- সারা দেশে দিন-রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে
- সাভারের ২৩ কিলোমিটার সড়কে থেমে থেমে যানজট
- শনিবার খুলে দেয়া হচ্ছে বেনজীরের সাভানা পার্ক
- পাংশায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ
- নড়াইলে খাল ও রাস্তার পাশ দিয়ে রোপন করা হলো বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ
- ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ
- আনার হত্যা: আ.লীগ নেতা বাবুর দায় স্বীকার
- ঈদের আগে অর্থনীতিতে স্বস্তি
- প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পেয়ে যা বললো হাসিমাখা মুখগুলো
- শান্তিতে ভারত-পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে এগিয়ে বাংলাদেশ
- শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী
- পাবনায় মাদক সম্রাটের নেতৃত্বে একজনকে কুপিয়ে আহত
- ঈশ্বরদীতে নকল সেমাই উৎপাদনের দায়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের জরিমানা
- প্রথম রাউন্ডের শেষ ম্যাচে ঠাকুরগাঁওয়ের জয়
- জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে লাখো মানুষ
- দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে
- জাতির পিতার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের শ্রদ্ধা
- কুমিল্লায় বিধবা আনোয়ারা হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আল-আমিন গ্রেফতার
- নড়াইলে পুলিশ সদস্যের ‘বিশেষ অঙ্গ’ কেটে দেওয়া সেই ডলির বিরুদ্ধে মামলা
- ফুলপুরে কোরবানির পশুর গাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগ
- ফরিদপুরে কানাইপুর শিকদার বাড়ির মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান সমাপ্ত
- কালিহাতীতে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাইভেটকারের ৩ যাত্রী নিহত
- জীবিত জয়তনকে মৃত দেখিয়ে ইউপি সদস্যের শাশুড়ির নামে বিধবা কার্ড
- কুয়াকাটায় এবার ভেসে এলো ১০ ফুট লম্বা মৃত ডলফিন
- টাঙ্গাইলে চাহিদার তুলনায় প্রায় ২০ হাজার বেশি পশু প্রস্তুত
- হাসপাতালে মিঠুন চক্রবর্তী
- ‘জনগণের সঙ্গে পুলিশের সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে’
- বিপিএল এর একশো টাকার টিকেট এক হাজার টাকা!
- আলো নিভে নাই
- খুলনা বিভাগে করোনায় প্রাণ গেল ৩ জনের
- কেন্দ্র দখল নিয়ে নরসিংদীতে সংঘর্ষ, নিহত ১
- চিরায়ত লোক উৎসব জামাই ষষ্ঠী
- ‘সরকারের ব্যাংকঋণে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ব্যাহত হবে’
- মিন্টুকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে কালের কণ্ঠের সংবাদকর্মীকে হুমকি
- সাবেক ভ্যাট কমিশনার ওয়াহিদা রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- বোয়ালমারীতে কৈশোর ক্লাবের ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা
- ‘দেশে আট মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে’
- এমপি আনার হত্যায় আ.লীগের আরেক নেতা গ্রেপ্তার
- মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল কুমিল্লার পাকবাহিনীর বিভিন্ন অবস্থানে হামলা চালায়
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- সাকিবের অপকর্মের কারণেই দ. আফ্রিকার কাছে বাংলাদেশের ভরাডুবি
- রুশ জাতীয় দিবস উদযাপিত
- সাবেক সংসদ সদস্য মানু মজুমদার আর নেই
- দিনাজপুরে যুবকের হাসুয়ার কোপে বৃদ্ধ নিহত, গণপিটুনিতে নিহত ঘাতক