E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মুনিয়া হত্যাকাণ্ড : বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদবে না তো?

২০২২ জুন ০৩ ১৫:২১:৪৯
মুনিয়া হত্যাকাণ্ড : বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদবে না তো?

আবীর আহাদ


বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বাবা-মা-হারা অসহায় মুনিয়ার সন্দেহভাজন খুনী দেশের অন্যতম প্রধান মাফিয়াগ্রুপ 'বসুন্ধরা'র এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে গত বছর মামলা হলেও, সে মামলার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না! প্রভাবশালী খুনী আসামীর প্রকাশ্য বিচরণ ও ড্যামকেয়ার ভাব দেখে পর্যবেক্ষক মহলের কাছে মনে হচ্ছে যে, এ জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার আলোর মুখ দেখবে না! এখানেই কবি বলেছেন, বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে!

অবিলম্বে খুনীকে গ্রেফতারে রেখে বিচারক্যর্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি। খুনী যেহেতু অত্যন্ত প্রভাবশালী সেহেতু তাকে জেলখানায় রেখে বিচার করা প্রয়োজন। কারণ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মুনিয়ার হত্যাকাণ্ডও সঠিক বিচারের একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে। এটা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। সেই দেশের একজন মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার অসহায় সন্তানের হত্যার যথাযথ বিচার হবে না বা কোনো অবস্থাতেই এ মাফিয়া রাজপুত্র খুনী আনবীরকে ছাড় দেয়া যাবে না। সুষ্ঠু ন্যায় বিচার হতেই হবে। এটা জাতির আবেগ ও বিবেকের প্রশ্ন। এটা ন্যায় বিচার ও সভ্যতা-ভব্যতার প্রশ্ন।

আমরা এক্ষণে জেনে লই মামলাটি কোন অবস্থানে রয়েছে। মুনিয়া ‘ধর্ষণ ও হত্যা’ মামলার প্রতিবেদন ২১ নভেম্বর

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট:

রাজধানীর গুলশানে একটি ফ্ল্যাটে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা ‘ধর্ষণ ও হত্যা’ মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন পেছালো। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য গত ২১ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন প্রতিবেদনটি দাখিল না করায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরার আদালত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী এই দিন ধার্য করেন।

উল্লেখ্য, মুনিয়া মিরপুরের একটি স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবার নাম মৃত শফিকুর রহমান। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা সদরের দক্ষিণপাড়া উজির দিঘি এলাকায়। তিনি গুলশান দুই নম্বর এভিনিউয়ের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর প্লটের বি/৩ ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। চলতি বছরের মার্চ মাসে ১ লাখ টাকা মাসিক ভাড়ায় ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি। সোমবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ওই বাসা থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া ‘আত্মহত্যা’য় প্ররোচনার অভিযোগ এনে দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়িক গ্রুপ বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অব্যাহতি পান সায়েম সোবহান আনভীর।

পরে গত ৬ সেপ্টেম্বর নুসরাত জাহান বাদী হয়ে মুনিয়াকে ‘ধর্ষণের পর হত্যার’ অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ আট জনকে আসামি করা হয়। আদালত গুলশান থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর মামলাটির আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি!

দেশে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুনিয়া হত্যাকাণ্ডের সঠিক ও কঠোর বিচারপ্রাপ্তিতে সোচ্চার হওয়ার জন্যে দেশের সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, ছাত্রসমাজ ও জনগণের প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

লেখক :চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

পাঠকের মতামত:

০১ নভেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test