E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

পানির নিচে তলার হাওরের বোরো ফসল 

২০২২ এপ্রিল ০৬ ১৬:২২:১৬
পানির নিচে তলার হাওরের বোরো ফসল 

মদন প্রতিনিধি : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়েছে নেত্রকোনা মদন হাওরের নদী ও খালে। এতে হাওরের  নদী ও খাল  সংলগ্ন অপেক্ষোকৃত নিচু জমির শতাধিক একর কাচাঁ -আধা পাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কৃষকরা দু:শ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। 

অপরিপক্ক এসব বোরো ধান কাটতে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। শনিবার (২ এপ্রিল) বিকেল থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি এসব বোরো ধান জমিতে প্রবেশ করে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, শনিবার ২ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত এসব জমিতে পানি ছিল না। কিন্তু বিকেল থেকে বোরো ধানের জমিতে পানি ঢুকতে শুরু করে। কৃষকগণ কোনো উপায়ান্ত না পেয়ে নিজেরাই পানির নিচ থেকে অপরিপক্ক আধা পাকা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,শুকনো মৌসুমে নদীর তীর ও খালের নিচু জমিতে বোরো ধান লাগায় কৃষকরা। এবার আগে বাগে পাহাড়ি ঢলের পানি মগড়া,বালই,চিনাই ও ধনু নদীর পানি বেড়ে গেলে বোরো নিচু ধানি জমি গুলো তলিয়ে যায়।

মদন, উপজেলারখয়রা, গুরাইল, রায়ামাটি, চাকুয়া, বড়, হেলি, বুরবুরিয়া, তিহারদাইর, হরগারডর, খরখরিয়া, তিয়শ্রী, মাঘান ও গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের বিভিন্ন হাওরে উজান থেকে নেমে আসা পাহারি ঢলের পানি ঢুকছে।

এলাকার বেরিবাধঁ গুলোতে বিপদ সীমা দেখা দেওয়ায় কৃষক ও প্রশাসন দিন রাত মাটি খেটে বাধঁ রক্ষার চেষ্টা করছে। এদিকে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে মূল হাওর গুলোতে এখনো পানি উঠেনি। শুধু মাত্র নদী ও খালের মধ্যে অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে পানি ঢুকেছে।

ফতেপুর ইউনিয়নের বিয়াশি গ্রামের কৃষক মাসুম মিয়া এবার ৮ একর জমি ঋন করে বর্গা দিয়েছেন। তিনি বললেন, কয়েক কাটা জমি আধা পাকা কেটেছি,বাকি সব জমি চোখের সামনেই ডুবে গেছে। কিভাবে ঋন পরিশোধ করব তাও ভেবে পাচ্ছি না।

কৃষাণী হোসনা আক্তার জানান,অনেক ক্ষতি হয়েছে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে জমি চাষ করেছিল। সব গঙ্গার জলে চলে গেছে। পোলাপান নিয়ে কিভাবে চলব তা বুঝতেছিনা।

ফসল রক্ষার বাধঁগুলো এখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এ নিয়ে মাঠে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন কাজ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৈকত জানান,প্রকল্প এলাকার বাহিরে নদী ও খালের মধ্যে পানি ঢুকেছে। সেখানে আমাদের বাঁধ নেই। মূল হাওরে এখনো পানি ঢুকেনি। আমাদের ফসল রক্ষার বাঁধ গুলোর ক্ষতি হয়নি।

অপর দিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর জানান, মদন উপজেলার হাওরে নদী ও খালের মধ্যে অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে লাগানো বোরো ধানের ক্ষেতে উজান থেকে নেমে আসা পাহারি ঢলের পানি ঢুকেছে। এ নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তারা যোগাযোগ রাখছেন। কী পরিমাণ বোরো ধানের জমি ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে তা নিরুপনের কাজ চলছে। তবে বৃষ্টি পাত না হলে ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না। যে সমস্ত জমি বোরো ধান অর্ধপাকা হয়েছে তা দ্রুত কৃষকদের খেটে ফেলার অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ জানান,হাওরে পানি বৃদ্ধির খবর পেয়ে আমি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। ফতেপুর ইউনিয়নের দেওসহিলা গ্রামের সামনে কয়েকটি হাওরে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করছে। এই এলাকার একটি বেরিবাধেঁ মাটি খেটে ফসল রক্ষার চেষ্টা চলছে। বৃষ্টিপাত না হলে তেমন কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

(এম/এসপি/এপ্রিল ০৬, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৭ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test