E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

সোমবার লন্ডন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

২০১৪ জুলাই ১৯ ১১:৩৫:৪৪
সোমবার লন্ডন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রির্পোটার : মেয়েদের বিরুদ্ধে প্রথাগত সামাজিক অপরাধের প্রধান দুটি দিক ফিমেইল জেনিটাল মিউটিলেশন (এফজিএম) বা মেয়েদের খতনা এবং বাল্য ও জোরপূর্বক বিয়ে বা চাইল্ড আর্লি ফোর্সড ম্যারেজ (সিইএফএম) বিরোধী সামিটে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার তিন দিনের সফরে লন্ডন যাচ্ছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের আমন্ত্রণে ২২ জুলাই, মঙ্গলবার, লন্ডনে অনুষ্ঠেয় এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। সেখানে মেয়েদের বিরুদ্ধে সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধে তার নিজের ভাবনা, বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে তার সরকারের চলমান প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টা ব্রিটেনসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সুস্পষ্ট বলেই এই সামিটে শেখ হাসিনার যোগদানকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ যে অগ্রগতি অর্জন করেছে সামিটের লক্ষ্য বাস্তবায়নে তা অনুপ্রেরণা হতে পারে বলেই আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন।
২১ জুলাই সোমবার সকাল ১০টায় বিমানের বিজি-০০৬ ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী ও তার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল। স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে তিনটায় লন্ডন হিথরো বিমান বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার। প্রতিনিধি দলে থাকছেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচএম মাহমুদ আলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিসহ অন্যান্য সরকারী কর্মকর্তা। সাংবাদিকদের একটি গ্রুপও আন্তর্জাতিক এই গুরুত্বপূর্ণ সামিটে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হচ্ছেন।
তিন দিনের সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার যেকোন সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সাথে একান্ত বৈঠক করবেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় ব্রিটেন-বাংলাদেশ পারষ্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় প্রাধান্য পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট পক্ষ।
সামিট শেষে মঙ্গলবার বিকেলেই যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক ইফতার মাহফিলের প্রস্তুতি চূড়ান্ত বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
মেয়েদের খতনা এবং বাল্য ও জোরপূর্বক বিয়ে বিরোধী এটাই প্রথম শীর্ষ সম্মেলন। এর হোস্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। কো-হোস্ট হিসেবে রয়েছে ইউনিসেফ এবং যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এফজিএম ও সিইএফএম প্রতিরোধে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আরও জোড়দারের লক্ষ্য সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সম্মেলন। প্রাক-সম্মেলন ঘোষণায় বলা হয়েছে- বৈষম্য ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশে বসবাস করে নিজেদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের অধিকার মেয়েদের রয়েছে। কিন্তু লাখ লাখ নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে প্রতিদিন শিকার হচ্ছে এফজিএম ও সিইএফএম এর মত ক্ষতিকর প্রথার, যা ব্রিটেনে অবৈধ। ঘোষণায় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলা হয়, পরিস্থিতি দ্রুতই বদলাচ্ছে, এটি অবশ্যই বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্যে একটি সুসংবাদ। ব্রিটেন, আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে এখন এ ধরনের ক্ষতিকারক প্রথার বিরোদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই সচেতনতাকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিতে এখন প্রয়োজন বিশ্ব সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রয়াস। বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে এফজিএম ও সিইএফএম এর মত ক্ষতিকর প্রথা অবসানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নারী, বালিকা, কমিউনিটি ও ধর্মীয় নেতাসহ সরকার, সিভিল সোসাইটি, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারি খাতের অঙ্গিকার আদায়ে গার্লস সামিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এফজিএম ও সিইএফএম প্রথা মোকাবেলায় যারা সফলতা দেখিয়েছেন, তাদের গল্পও গার্ল সামিটে উপস্থাপন করা হবে। সামিটে সেইসব নারী ও মেয়েদের কথা শোনা হবে, যারা এফজিএম ও সিইএফএম প্রথার মধ্যে বসবাস করেও সাহসের সাথে তা মোকাবেলা করেছেন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্য সফর সামনে রেখে অপতৎপরতা শুরু করেছে সেখানকার বিএনপি-জামায়াত পন্থিরা। সেখানে বিক্ষোভ দেখানোরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
শেখ হাসিনাকে যাতে ব্রিটেনে স্বাগত জানানো না হয় সে লক্ষ্যে বিএনপি’র পক্ষ থেকে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে। শুক্রবার সকালে সেন্ট্রাল লন্ডনের ফ্রন্টলাইন ক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র পক্ষে সংগঠনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মহিদুর রহমান এই আহবান জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে ‘ভোটার বিহীন’ নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলা হয়, গণতান্ত্রিক বিশ্বের মডেল রাষ্ট্র ব্রিটেন একজন অবৈধ সরকার প্রধানকে নৈতিক দিক থেকে কোনভাবেই স্বাগত জানাতে পারেনা। তাদের ভাষায় সাম্প্রতিক সময়ে খুন, গুম ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা নিরযাতনের জন্যে শেখ হাসিনা দায়ী। সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে একটি অবাধ, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই, যা আদায়ে ব্রিটেন সহযোগিতা করতে পারে। সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, পুলিশের অনুমতি পেলে প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সাথে নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হবে।
(ওএস/এএস/জুলাই ১৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৪ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test