E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

গৃহকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক ‘সন্দেহে’ গৃহকর্মী খুন

২০২১ ডিসেম্বর ০৫ ১৬:৩২:৫৭
গৃহকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক ‘সন্দেহে’ গৃহকর্মী খুন

স্টাফ রিপোর্টার : গৃহকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক সন্দেহে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের নিকেতনে পারভীন ফেন্সি নামে এক গৃহকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসান। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গ্রেফতার গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুল হাসান ও গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসান। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় হত্যায় ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, একটি লাঠি ও বিছানার চাদর ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করে পিবিআই।

রবিবার (৫ ডিসেম্বর) পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর তুরাগ দিয়াবাড়ীর ঝাউবন এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে তুরাগ থানা পুলিশ।

তিনি জানান, এই সংবাদের ভিত্তিতে পিবিআই’র ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশনায় ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম পুলিশ পরিদর্শক (বি) মোহাম্মাদ তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে মরদেহ শনাক্তের জন্য একটি জরুরি টিম পাঠান। এরপর পিবিআই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা নারীর নাম-পরিচয় শনাক্ত করে। মরদেহ শনাক্তের পরপরই পিবিআই তদন্ত শুরু করলে নিহতের গ্রামের বাড়িতে তার স্বামী মোমিনুলসহ অন্য আত্মীয়স্বজনের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারে ভিকটিম ফেন্সি এক/দেড় বছর আগে স্বামী-সন্তানসহ ঢাকা শহরে আসেন। ঢাকায় এসে তিনি সৈয়দ জসীমুল হাসানের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে জানা যায় বুধবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ঝগড়ার একপর্যায়ে গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসান গৃহকর্মীকে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করেন। এতে সে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জ্ঞান হারায় এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। জ্ঞান ফেরানোর উদ্দেশ্যে বুকে উপর্যুপরি চাপ দেওয়া হয়। এতে তার বুকের হাড়ও ভেঙে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এরপর গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী শলাপরামর্শ করে মরদেহ গোপন করার উদ্দেশ্যে গাড়িচালক রমজান আলীর সহায়তায় প্রাইভেটকারে তুরাগ দিয়াবাড়ী এলাকার ঝাউবনে ফেলে আসে।

তদন্তকালে আরও জানা যায়, ভিকটিম ফেন্সির স্বামী মোমিনুল ঢাকা শহরে রিকশা চালাতেন। ফেন্সি ওই বাসায় কাজ নেওয়ার পর থেকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেতেন না। এর আগে গৃহকর্ত্রী নির্যাতনের কথা জানালে স্বামী মোমিনুল গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন। একদিন ওই বাসায় গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আসেন। কিন্তু এরপর আর কোনোদিন দেখা করতে পারেননি। পরে তিনি গ্রামের বাড়ি চলে যান।

জিজ্ঞাসাবাদে মোমিনুল আরও জানান, তার স্ত্রী ওই বাসায় কাজ নেওয়ার পর থেকে গৃহকর্তা জসীমুল হাসান প্রতি মাসে বিকাশের মাধ্যমে তার সন্তানের জন্য এক হাজার টাকা পাঠাতেন। কিন্তু তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে দিতেন না। ফেন্সীর একমাত্র সন্তান তার দাদির কাছে থাকে।

এ ঘটনায় ভিকটিম ফেন্সির স্বামী মোমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে তুরাগ থানায় শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) একটি মামলা করেন।

জাহাঙ্গীর আলম আরও জানান, পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) প্রচেষ্টায় ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা তরুণীর মরদেহ শনাক্ত ও মূল আসামি গ্রেফতার এবং আলামত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test