E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাঁদপুরে জেলেদের খাদ্য সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা

২০১৭ অক্টোবর ০৯ ১৫:৫৪:৩৩
চাঁদপুরে জেলেদের খাদ্য সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা

চাঁদপুর প্রতিনিধি : মা ইলিশ রক্ষার এই সময়ে সরকার জেলেদের ২০ কেজি করে চাল সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেয়। অথচ ইলিশের প্রজনন সময়ের সপ্তাহ পার হলেও কোনো প্রকার খাদ্য সহায়তা পায়নি চাঁদপুরের ৫১ হাজার ১শ ৯০ জন জেলে। সরকারের এ ন্যূনতম সহায়তা নির্দিষ্ট সময়ে না পেয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে তারা। এ নিয়ে জেলেদের মনে বাড়ছে ক্ষোভ। পাশাপাশি বাড়ছে ঋণের বোঝা।

নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ছোট বড় সব আড়ৎ বন্ধ। প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র এক জায়গায় থুবিয়ে রেখেছেন আড়ৎদাররা। এসব আড়ৎগুলো গত সাত দিন আগে খুব জমজমাট ছিলো। কয়েকটি আড়ৎ ঘুরে একজন আড়ৎদারকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। যদিও নদীর পাড় ঘুরে দেখা যায়, জেলেরা নৌকা আর জাল মেরামত করছেন। আবার কেউ কেউ দোকানের সামনে পাতা টেবিলে বসে টিভি দেখছেন।

কেউ বা খোশগল্পে মেতে উঠেছেন। অলস সময় কাটানো ওসব জেলে সাংবাদিক দেখে হতাশার ছাপ পড়া মুখে কাছে এসে বলেন, স্যার চাইল কবে দিব? গেল বার তো কর্মসূচির শুরুতেই দিছে। কেউ কেউ বলছে, আমরা তো নদীর পাড়ে বইয়া রইলাম। নদীতে নামি না। মাছ ধরি না। তয় চাইল দেয় না ক্যান? আর কবে দিবো? এতো প্রশ্নের মাঝে তাদের নাম জানার কথাই ভুলে যাই। মিথ্যে আশ্বাস দিতে পারবোনা বলে স্থান ত্যাগ করি। জায়গাটির নাম চাঁদপুর সদর উপজেলার হারিণা ফেরিঘাট।

জেলেদের এতোগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেতে ছুটে যাই পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নম্বর চান্দ্রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু’র কাছে। তিনি জানান, মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম সফল করতে আমরা বদ্ধপরিকর। দশজন চৌকিদার একজন দফাদারসহ আমি নিয়মিত নদীতে টহল দিচ্ছি। গত এক সপ্তাহে কেউ নদীতে নামেনি। জেলেদের চাল পাবার ব্যাপারে তিনি জানান, আগামী সপ্তাহে চাল আসতে পারে এমনটাই শুনেছি। তবে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনের শীর্ষ এক কর্মকর্তার সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে তিনি নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেন নি। অপরদিকে চাল পাবার আশায় বুক বেঁধে আছেন চাঁদপুরের অর্ধলক্ষাধিক জেলে পরিবার। গতবছর এ কর্মসূচির শুরুতেই প্রতি জেলেকে ২০কেজি করে চাল দেয়ার উদ্যোগ নেয়ায় জেলেরা দ্রুত খাদ্য সহায়তা পায়।

কর্মসূচি সফল করতে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দাবি করে জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুস সবুর মন্ডল বলেন কর্মসূচি প্রায় শতভাগ সফল হবে এবং ইলিশ উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। মুষ্টিমেয় কিছু অসাধু লোক নদীতে নামছে। তারা মূলত মৌসুমি জেলে। অবশ্য তাদেরকে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড ও দেয়া হচ্ছে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সফিকুর রহমান ভিজিএফ’র চাল দেয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেন নি। তবে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এবছর রোহিঙ্গাদের মাঝে পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করায় জেলেদের চাল দেয়ার সম্ভাবনা কমে গেছে। কারণ ভিজিএফ-এর চালের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো প্রকার তৎপরতা চোখে পড়েনি। এদিকে মা ইলিশ রক্ষায় জেলা টাস্কফোর্স, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ দিন রাত মেঘনা নদী চষে বেড়াচ্ছেন,কাউকে নদীতে নামতে দিচ্ছেন না।

(ইউএইচ/এসপি/অক্টোবর ০৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test