E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মদন হাসপাতালে জনবল সংকট, ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই ভরসা

২০১৭ অক্টোবর ১০ ১৭:৪৬:৩৯
মদন হাসপাতালে জনবল সংকট, ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই ভরসা

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : ডাক্তার শূন্য মদন হাসপাতালের রোগীদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারই চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা হয়ে পড়েছে। উপজেলার ২ লাখ লোকের স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজতি ৬ জন ডাক্তার সেবা দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। আবার দেখা যাচ্ছে কোন দিন ডাক্তার শূন্যও থাকে এ হাসপাতালটিতে। হাওরাঞ্চলের জনগণের সুখে দঃখে স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা স্থল এ হাসপাতালটি। চিকিৎসক-কর্মচারী ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংকটে ৫০ শয্যার হাসপাতালটি  এখন নিজেই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। ফলে পৌরসভাসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বাসিন্দারা কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে উপজেলার আইন শৃঙ্খলা প্রতিরোধ কমিটিতে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। 

স্বাস্থ্য প্রশাসক ও আরএমও পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকার পর গত ৪ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা পদে ডাক্তার মোঃ মাজেদুর রহমান কাজে যোগদান করেই তিন দিনের প্রশিক্ষণে ঢাকায় চলে যান।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটে সরেজমিনে হাসপাতালে গেলে ২ জন ডাক্তার ছাড়া আর কোন ডাক্তার পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের অভিযোগ আমরা শুধু ভর্তির কাগজেই পেয়েছি,হাসপাতালের কোন ডাক্তার,ঔষধ ,বিভিন্ন পরীক্ষা কোন ধরনের সেবা পাচ্ছি না । জরুরী বিভাগে গেলে ডাক্তার নেই বলে বাহিরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে রোগীদেরকে পাঠিয়ে দেয়।
৫০ শয্যা হাসতালের সাইনবোর্ড ও যন্ত্রপাতি থাকলেও জনবল না থাকায় চিকিৎসা সেবা চালু হয়নি। ৮টি ইউনিয়নে উপস্ব্যাস্থ কেন্দ্র গুলোতেও কোন ডাক্তার নেই। হাসপাতালে ঝুলিয়ে রাখা মন্ত্রনালয়ের অভিযোগ নম্বররের বোর্ডটি সড়িয়ে ফেলা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,মদন হাসপাতালে মেডিকেল অফিসারসহ চিকিৎসকের মোট ২৯টি পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন। তাদেরও আবার নিয়মিত দেখা মিলেনা। ১৪ টি নার্সের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ৬ জন। এ-ক্সে , আল্ট্রাসনোগ্রাম ও দন্ত মেশিন দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করায় অকেজো হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগ থেকে গড়ে ১৫০-২০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় অনেক রোগী সেবা না নিয়ে বাড়ী চলে যেতে হয়। অনেকে ডাক্তার না পেয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছে।

মঙ্গলবার উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের কদশ্রী গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা জুবেদা আক্তার নামে একজন রোগী জানায়, তিনি মাথা ব্যথা,জ্বর নিয়ে ট্রলার যোগে সকাল সারে ৯ টার সময় হাসপাতালে আসলেও ১১টার সময়ও ডাক্তার না পেয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছেন।

উপজেলার চানগাও থেকে সুফিয়া আক্তার,আঙ্গুরা আক্তার জানায়,আমরা সকাল ৯ টার সময় হাসপাতালে এসে ৫ টাকা দিয়ে একটি টিকিট ক্রয় করি। ৩ ঘন্টা অপেক্ষার পর ডাক্তার না পেয়ে নার্স আপার চিকিৎসা নিই। হাসপাতালে ভর্তিকৃত পা ভাঙ্গা গোবিন্দশ্রী গ্রামের হাসেম উদ্দিন (৭০) জানান,আমি হাসপাতালে ১০ দিন ধরে আছি তবে এখন পর্যন্ত কোন ডাক্তার আমাকে দেখেনি।

সহকারী সার্জন ডাক্তার খান মোঃ ফজলুল বারী বলেন,ডাক্তার সংকটের কারণে তাদেরকে বাড়তি চাপ সহ্য করতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাজেদুর রহমান বলেন, আমি এই এলাকায় নতুন এসেছি,সমস্যা গুলো চিহিৃত করে অচিরেই সমাধানের ব্যবস্থা নেব।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ওয়ালীউল হাসান জানান ,স্বাস্থ্য প্রশাসক যোগদান করে ঢাকায় প্রশিক্ষণে গিয়েছেন,উনি আসলে আলোচনা সাপেক্ষে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে চেষ্টা করা হবে।

উপজেলার চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, মঙ্গলবার হাসপাতালে আমার একজন পেট ব্যথা রোগী পাঠালে কোন চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। এ অবস্থা দীর্ঘদিনের। বিষয় গুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করব।

(এএমএ/এসপি/অক্টোবর ১০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test