E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধে কেন নিষেধাজ্ঞা নয়’

২০১৭ অক্টোবর ১১ ১৫:৩৪:৪৮
‘বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধে কেন নিষেধাজ্ঞা নয়’

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পার্টিশান বর্হিভুত জমিতে নির্মাণ কাজ বন্ধে কেন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেওয়ো হবে না তা জানতে চেয়ে নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাণোর নোটিশ জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার সাতক্ষীরা সদর সহকারি জজ আদালতের বিচারক এম এ সাঈদ সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশন পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ আদেশ দেন।

মামলার বিবরনে জানা যায়, সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া মৌজার অধীনে (সিএস ৬৯৮নং) এসএ ৭৫০ নং খতিয়ানের ২০৪৪ দাগের ১৪ শতক এর মধ্যে প্রয়াত কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল গণির পাঁচজন ওয়ারেশ তিন শতক জমির স্বত্ব দখলীয় মালিক। এ ছাড়া একই মৌজার এসএ ৭৪৮ খতিয়ানের একই দাগে ১৪ শতক জমির মধ্যে আহছানিয়া মিশনের চার শতক ও ১৯৬৫ সালে ভারতে চলে যাওয়া উপেন্দ্র নাথ মিত্র এর চার শতক জমি রয়েছে।

একই মৌজার এসএ ১৪৩৩ খতিয়ানের একই দাগ ২০৪৪ এ ১৪ শতকের মধ্যে তিন শতক জমি ডাঃ আবুল কাশেম ও তার ভাই বাবর আলীর অংশ। তিনটি এসএ খতিয়ানের একটি দাগ ২০৪৪ এর ১৪ শতক জমি কখনো বন্টননামা হয়নি। ১৪ শতকের মধ্যে মাত্র চার শতক জমি আহছানিয়া মিশনের। ওই জমির বন্টননামা ছাড়া আব্দুল গণির ওয়ারেশদের লাগানো গাছ, বসত বাড়িতে চলাচলের রাস্তাসহ তিন শতক জমি দখল করে সম্প্রতি আহছানিয়া মিশন মাল্টি স্টোরেড বিল্ডিং নির্মাণ কাজ শুরু করে।

গত ৫ অক্টোবর আব্দুল গণির ছেলে সাংবাদিক মোঃ আবু সালেকসহ অন্যরা মিশন কর্তৃপক্ষকে মাপ জরিপের মধ্যে বন্টননামা করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা বললে তারা রাজী হননি। ফলে আব্দুল গণির ওয়ারেশ হিসেবে মোঃ আবু সালেক, এমএ খালেক, মোঃ আব্দুস ছাদিক, মোমেনা খাতুন ও বসির আহম্মেদ বাদি হয়ে গত ৮ অক্টোবর সাতক্ষীরা সদর সহকারি জজ আদালতে দেওয়ানী ১৬৯/১৭ পার্টিশান মামলা দায়ের করেন।

মামলায় আহছানিয়া মিশনের সভাপতি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, সাধারণ সম্পাদক, সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সদর সহকারি কমিশনারসহ (ভূমি) আটজনকে বিবাদী করা হয়। ওই দিন মিশন কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে বহুতল ভবনের পিলার ঢালাই কাজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরদিন ৯ অক্টোবর একই আদালতে ২০৪৪ দাগের তপশীল বর্নিত পার্টিশান বহির্ভুত ১৪ শতক জমিতে মিশন কর্তৃপক্ষ(প্রথম চারজন বিবাদী) যাতে ইমারত নির্মাণের কাজ না করতে পারে সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়।

মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. জিল্লুর রহমান জানান, শহরের মুনজিতপুরের আবু ছালেক ও আব্দুল খালেক এসএ খতিয়ান ৭৩৮ এর ২০৪২ ও এসএ খতিয়ান ১৪২৫ এর ২০৪৪/২৪০৩ দাগের সাড়ে ১২ শতক সম্পত্তি পৈতৃকসূত্রে পেয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দখলে ছিলেন। গত সাত মার্চ সভাপতিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা মিশন এলাকায় অবস্থান করাকালিন সদর সহকারি কমিশনার (ভুমি) দেবাশীষ চৌধুরীর নির্দেশে কয়েকজন তাদের জমির মধ্যে সোয়া এক শতক জমির চারিধারে কয়েকটি সীমানা পিলার পুঁতে দেন ।

গত ৮ মার্চ আহছানিয়া মিশন কর্তৃপক্ষ প্রাচীরের জন্য ভিত কেটে, ইট ও বালি ফেলে তাদের সোয়া এক শতক জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। ওই জমিতে একটি নারিকেল গাছ একটি কাঁঠাল গাছ ও একটি সেগুন গাছ লাগানো অবস্থায় ছিল। দখলের পরদিন ৯ মার্চ ওই জমির চারিধারে ইট, বালি ও সিমেন্ট দিয়ে প্রাচীর নির্মান করে মিশন কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে গত ৯ এপ্রিল পৌরসভার মেয়র ও গত ১৯ এপ্রিল আহছানিয়া মিশন পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অবহিত করা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।
বাধ্য হয়ে আবু ছালেক ও আব্দুল খালেক গত ১০ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা সদর সহকারি জজ আদালতে(দেঃ ১৫৪/১৭) মামলা করেন। মামলায় জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিনসহ ১১জনকে বিবাদী করা হয়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে নিষেজ্ঞার আবেদন শুনানী চলাকালে ওই জমি থেকে একটি বড় নারিকেল গাছ, একটি কাঁঠাল গাছ ও একটি সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যায় মিশন কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত মজুররা। বিচারক এম এ সাঈদ নোটিশ প্রাপ্তির পরবর্তী ১৫ কার্যর্ দিবসের মধ্যে বিবাদীদের আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শাণোর নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন মিশনের নিজ জমিতেই প্রাচীর দেওয়া ও গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওই প্রাচীরের মধ্যে মিশনের তিনটি গাছ কাটা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ১১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test