E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘রমজানেও কারেন্ট খালি যায়-আয়’

২০১৪ জুলাই ০১ ১৩:৫৩:১৪
‘রমজানেও কারেন্ট খালি যায়-আয়’

লক্ষ্মীপুরপ্রতিনিধি : গত ২ মাস ধরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় অসহনীয় লোডশেডিং ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টা সময়ও বিদ্যুৎ না থাকায় বেশ ভোগান্তিতে পড়েছে সব শ্রেণীর লোকজন। সোমবার প্রথম রমজানে সকাল থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রায়পুরসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক লোডশেডিং হয়েছে। কয়েক দিন ধরেই এ অবস্থা চলছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

পৌর শহরের ফিড ব্যবসায়ী মাসুদ আলম বলেন, ‘ই কিতা অবস্থা! দিন নাই, রাইত নাই, রমজানেও আট থিকা দশ বার কারেন্ট খালি যায়-আয়। ই দেখি মহাজ্বালা।’ তবে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের দাবি, রায়পুরে বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র না থাকায় কয়েক বছর ধরেই অসহনীয় লোডশেডিংয়ের ধকল সইতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এতে তাদের কিছু করার নেই।

পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, পানপাড়া বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র থেকে রায়পুরসহ কয়েকটি লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এখানে উপ-কেন্দ্র না থাকায় সব সময় বিদ্যুৎ পাওয়া যায়না। রায়পুরে উপ-কেন্দ্র নির্মিত হলে ছোট লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে।

পৌরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রায়পুরে ১০টি ইউনিয়সহ পাড়া-মহল্লায় গত ২ মাস ধরে লোডশেডিং বেড়ে গেছে। তবে পৌর শহর এলাকায় লোডশেডিং পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। এক সপ্তাহ ধরে দিনে প্রতিবার এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিয়ে তিন ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে। এর আগে প্রতিবার এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিয়ে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং করা হতো। এভাবে দিন দিন অবস্থার অবনতি হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টা সময়ও বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে। এতে বিদ্যুতের ওপর নিভর্রশীল কারখানার মালিক ও ব্যবসায়িরা হতাশাগস্থ হয়ে পড়েছেন। কয়েক মাস আগে ক্ষুব্ধ হয়ে লোকজন দফায় দফায় সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেন।

রায়পুর পত্রিকার একমাত্র এজেন্ট ম্যাগাজিন হাউসের স্বত্ত্বাধীকারী আবু তাহের বলেন, শহরে ব্যাপক লোডশেডিংয়ে গ্রাহকেরা বিক্ষুব্ধ। অনেক পাড়া-মহল্লায় টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ মিছিলসহ সড়ক অবরোধ হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের ইচ্ছানুযায়ী লোডশেডিং করছে। এতে তাদেরকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে হয়। এ কারণে অতিরিক্ত ব্যয় গুনতে হয়।

রায়পুর সরকারি কলেজছাত্র মো. ফারুক হোসেন বলেন, সামনে পরীক্ষা। তাই পড়াশোনার চাপ বেশি। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে পড়াশোনাও ঠিকমতো হচ্ছে না। না পারছি পড়তে, না পারছি শান্তিতে ঘুমাতে। এছাড়াও জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। অথচ এখানে লোডশেডিংয়ের মাত্রা ভয়ানক।

রায়পুর পৌরসভা পানি সরবরাহ শাখা সূত্রে জানা গেছে, অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে ট্যাংকে পানি তোলা যাচ্ছে না। ফলে গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এতে পৌরসভার ২৫ হাজার মানুষ পানির কষ্টে ভুগছেন।

রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মাহফুজুর রহমান বলেন, রায়পুরে বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র নির্মিত হলে লোডশেডিং অনেক কমে যাবে। উপকেন্দ্র নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাছাড়া আমরা সর্বাত্বক চেষ্টা করি লোডশেডিং না করার জন্য। কিন্তু চৌমুহুনী গ্রীড থেকে আমাদেরকে চাহিদানুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়না। এজন্য লোডশেডিং হচ্ছে।

(এমআরএস/জেএ/জুলাই ০১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test