E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গো-খাদ্যের তীব্র সংকট

মধুপুর-ধনবাড়ীতে খড়ের ব্যবসা জমজমাট

২০১৭ অক্টোবর ২৫ ১৭:৩৭:৩৯
মধুপুর-ধনবাড়ীতে খড়ের ব্যবসা জমজমাট

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের মধুপুর ও ধনবাড়ী উপজেলায় গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতি কেজি খড় কিনতে গুনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এতে গো-খামারিরা পড়েছে চরম বিপাকে। প্রতি ভ্যান রিকশায় ভর্তি ওজনে আনুমানিক এক মণ (৪০ কেজি) খড় কিনতে হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২২০০ টাকায়। কেজি হিসেবে যা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। 

জানা গেছে, চলতি বছরের কয়েক দফা বন্যায় টাঙ্গাইলের মধুপুর, গোপালপুর, ধনবাড়ী ও তার আশপাশের এলাকায় পানিতে নিমজ্জিত হয়ে রোপা আমন ধান নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যায় সবুজ ঘাসের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কৃষকের জমানো খড়ও শেষ হয়ে গেছে। অনেক জমি অনাবাদি থাকায় সামনে খড়ের ঘাটতি দেখা দিবে। মধুপুর গড়াঞ্চলের আনারস, কলা, পেঁপে, হলুদ, আদা চাষেও খড় লাগে। ফলে মধুপুর ও ধনবাড়ী উপজেলায় গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

ধনবাড়ী উপজেলার ভাইঘাট চেরাভাঙ্গা ব্রিজ পাড়ের মামুন তার ৭টি গরুর খাদ্য যোগাড় নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছিলেন। খুঁজে খুঁজে অবশেষে ৬০-৬৫ কিমি দূরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া এলাকার মোবারক হোসেনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকায় এক গাদা খড় কিনেন। সব খরচ মিলে এ খড়ের দাম পড়ে ৩৪ হাজার টাকা।

গোপালপুর উপজেলার সাজনপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম আকন্দ তপনের খামারে ১০টি গরু। তিনি গরুর খাদ্যের জন্য ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে খড় সংগ্রহ করেছেন। মামুন আর তপনের মতো এসব এলাকার সাধারণ কৃষক ও গরু খামারিরা তাদের গরুর জন্য খড় আগে থেকে সংগ্রহ করে রাখেননি তারা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। অন্যান্য বছর অগ্রিম ধান কাটায় খড়ের অভাব তেমন পড়ে না। এবার অতিবৃষ্টিতে আমন ধান বেশিরভাগ এলাকায় বিনষ্ট হয়েছে। ফলে খড়ের সংকট বাড়ছে।

মধুপুর আদালত পাড়ার উন্নত জাতের গরু খামারি শাহীনুর রহমান জানান, গরু লালন-পালনে খড়ের দামের কারণে ব্যয় বেড়ে গেছে। মধুপুরের আড়ালিয়া গ্রামের লুৎফর রহমান জানান, খড়ের অভাবে গরুই বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি।

মধুপুর পৌর শহরের ময়মনসিংহ সড়কের পাশে এবং ধনবাড়ী উপজেলার কদমতলীর জয়বাংলা হাট. পাটাদহ বাজার, ভাইঘাট বাজার, মুশুদ্দি, কেন্দুয়া, খড়ের বড় বাজার।

মধুপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শাহাজাহান মিয়া নামে এক বিক্রেতা এক ভ্যান খড় এক হাজার ৭০০টাকায় বিক্রি করেন। মুশুদ্দি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, জমির উদ্দিন, আলমঙ্গীর হোসেন নামে দুই ক্রেতা এক মন ওজনের প্রতি ভ্যান খড় দুই হাজার টাকায় কিনেছেন।

গোপালপুরের মিজান, ঘাটাইলের দেওলাবাড়ী গ্রামের আমিনুল, নাজিম উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম, মধুপুর উপজেলার কালমাঝি গ্রামের খোরশেদ, শাহজাহন, হাসমত জানান, তারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে কৃষকদের কাছ থেকে খড়ের গাদা কিনে ভ্যানে করে বিভিন্ন বাজারে তুলে প্রতিমণ খড় দুই হাজার থেকে ২২০০টাকায় বিক্রি করছেন।

মধুপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শহিদুল ইসলাম জানান, খড়ের এ সংকট সাময়িক। নতুন আমন ফসল ওঠলে এ সংকট কেটে যাবে। তাছাড়া গো-খাদ্যের সংকট দূর করতে ঘাসের আবাদও করা হচ্ছে।


(আরকেপি/এসপি/অক্টোবর ২৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test