E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

র‌্যাবের সোর্স পরিচয়ে দুই ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ধারণ : প্রতিবাদে মানববন্ধন

২০১৭ নভেম্বর ০২ ১৬:১১:৪২
র‌্যাবের সোর্স পরিচয়ে দুই ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ধারণ : প্রতিবাদে মানববন্ধন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার দেওজান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ করে ব্লাক মেইল করার ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ওই দুই ছাত্রীর মা দেলদুয়ার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে ওই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুন্নাহার হক, প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, স্কুল ছাত্রী রাখী, শবনম প্রমুখ।

জানা যায়, দেলদুয়ার উপজেলার চিনাখোলা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী গত ১৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) দুই মেয়েকে বাড়িতে রেখে বাবার বাড়ি বেড়াতে যান। ওইদিন রাত ৯টার দিকে দেওজান গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. শরিফ মিয়া (৩০), চিনাখোলা গ্রামের দারোগ আলীর ছেলে শাপচান মিয়া (৩৫), ইয়াছিন মিয়ার ছেলে জব্বার মিয়া (৩০) ও ইমান আলীর ছেলে মোশারফ মিয়া(৩২) প্রবাসীর স্ত্রীর অনুপস্থিতির সুযোগে বাড়িতে ঢুকে। তারা ওই দুইবোনকে অনৈতিক কাজ করার প্রস্তাব দেয়। এতে অস্বীকৃতি জানালে অস্ত্রের মুখে দুই বোনকে উলঙ্গ করে জব্বার মিয়া ও শাপচান মিয়াকে দিয়ে নানা অঙ্গভঙ্গির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে।

ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তারা ২৭ হাজার ৬০০ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে তারা ওই ভিডিও স্থানীয় নানাজনের মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেয়। পরে দুই স্কুল ছাত্রীর মা বাদি হয়ে উল্লেখিতদের অভিযুক্ত করে দেলদুয়ার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনার শিকার দুই স্কুল ছাত্রী জানান, ওইদিন রাতে তারা দুই বোন রাতে পড়ালেখা করছিলেন। এমন সময় মো. শরিফ মিয়ার ডাকে ঘরের দরজা খোলা মাত্রই তারা কু-প্রস্তাব দেয়। রাজি না হওয়ায় ঘরের দরজা আটকে দা-ছুরির ভয় দেখিয়ে কাপড় খুলে ভিডিও ধারণ করে এবং ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করে। তারা ঘরে রাখা ২৭ হাজার ৬০০টাকা মো. শরিফ মিয়ার হাতে তুলে দেন এবং ভিডিও নষ্ট করে ফেলার অনুরোধ করেন।

মামলার বাদি ও দুই স্কুল ছাত্রীর মা আহাজারি করে জানান, মো. শরিফ মিয়া নিজেকে সেনাবাহিনীর সদস্য ও র‌্যাবের সোর্স হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। তার নেতৃত্বে শাপচান, জব্বার ও মোশারফ মিলে যে অপকর্ম করেছে তা আল্লাহ সহ্য করবেনা। তিনি দুস্কৃতকারী চারজনের বিচার চান।

দেওজান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটির নিন্দা জানানোর ভাষা তার জানা নেই। ওই দুই ছাত্রীর মা বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য। তিরি শরিফ, শাপচান, জব্বার ও মোশারফের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মীর আনিছুর রহমান ও মো. আরফান আলী জানান, তারা ওই ভিডিওটি দেখেছেন। এ ঘটনার অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। অভিযুক্তদের মধ্যে মো. শরিফ মিয়া নিজেকে সেনাসদস্য ও র‌্যাবের সোর্স বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন, কিন্তু তিনি সরকারি কোন বাহিনীর সদস্য কি-না তা সন্দেহজনক। তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।

পাথরাইল ইউপি চেয়ারম্যান হানিফুজ্জামান লিটন ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, তিনি থানাও ওসির সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।

দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি নিন্দনীয়। এ বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।



(আরকেপি/এসপি/নভেম্বর ০২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test