E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈশ্বরদীর মুলাডুলি খাদ্য গুদামে ৬ মাস ধরে জলাবদ্ধতা

২০১৭ নভেম্বর ০৩ ১৭:৪৬:৩৯
ঈশ্বরদীর মুলাডুলি খাদ্য গুদামে ৬ মাস ধরে জলাবদ্ধতা

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীর মুলাডুলি কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদাম (সিএসডি)’র অফিস চত্বর, ম্যানেজারের বাসভবন, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বাসভবনসহ গোটা চত্বরের অধিকাংশ জায়গা জুড়ে এখন শুধু পানি আর পানি। বিগত প্রায় ৬ মাস ধরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলেও এটি নিরসনে এখনও পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি কর্তৃপক্ষ। ফলে গত এপ্রিল মাসে বর্ষা শুরুর পর হতেই দূর্ভোগের শিকার এই গুদামের কর্মকর্তা, কর্মচারী, শ্রমিক ও নিরাপত্তা কর্মীরা।

বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের একমাত্র পথটি খাদ্য গুদামের পশ্চিম পাশের প্রাচীর সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগের খালটি (ডোবা) প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখল করে দোকানপাটসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য পানি বের হতে পারছে না। এছাড়া মুলাডুলির আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব ওরফে মৎস্য হাবিব মুলাডুলি স্টেশনের পাশে আটঘরিয়াপাড়ার একটি সেতুর নিচে বাঁধ দিয়ে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে খাদ্য গুদামের পূর্ব অংশসহ মুলাডুলির ১০০০ বিঘা সবজি জমি এখন পানির নিচে।

সরজমিনে গত শুক্রবার খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায়, ৫২ হাজার টন খাদ্য শস্য ধারণকৃত এই খাদ্য গুদামের অফিসের চারপাশ, অফিস চত্বরের ভেতর, ম্যানেজারের বাসভবন, চতুর্থ শ্রেণীর পরিচ্ছন্ন কর্মচারীদের বাসভবন, মসজিদসহ অধিকাংশ এলাকায় পানি জমে আছে। পানিতে ভেসে গেছে খাদ্য গুদামের পুকুরের মাছ। পুকুর আর খাদ্য গুদামের ভেতরের চত্বর পানিতে একাকার। অফিসের কর্মচারী ও কর্মকর্তারা জুতা-স্যান্ডেল হাতে নিয়ে হাটু পর্যন্ত কাপড় উচিয়ে অফিসে প্রবেশ করছেন। জমাটবদ্ধ পানি পাড়িয়ে চলাচলের ফলে অফিসের কয়েকজন কর্মচারী ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের পায়ে চর্ম রোগ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মুলাডুলি খাদ্য গুদামের প্রাচীর সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি খাল বা ডোবা ছিল। এটি দিয়ে খাদ্য গুদামের বৃষ্টির পানি বের হতো। গত দুই বছরে এই গুদামের সামনের জায়গা স্থানীয় সরকার দলীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অবৈধভাবে ভরাট করে এখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।

মুলাডুলি খাদ্য গুদামের পরিচ্ছন্ন কর্মী শাহানাজ আক্তার জানান, দুই বছর হলো বর্ষা এলেই আমাদের এই দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এবারের দূভোর্গটা বেশ কষ্টদায়ক। প্রায় ৭ মাস হলো পানি বন্দি হয়ে আছি। ঘর থেকে বের হলেই পানি। ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। সব সময় পানির মধ্যেই চলাফেরা করতে করতে পায়ে ঘা-পাঁচড়া হয়ে গেছে। ঘরের মধ্যে সাপ ঢুকে যায়। ছোট শিশুটিকে নিয়ে আতংকে থাকতে হয়।

অফিস সহকারী মাহফুজুর রহমান জানান, এখনতো পানি কম। বৃষ্টির সময় হাটু পর্যন্ত পানি ছিল। কিছু কিছু জায়গায় আরো বেশি। এই খাদ্য গুদামে কর্মরত প্রায় ৭০ জন কর্মচারী, শ্রমিক ও নিরাপত্তা কর্মীদের অফিসে আসা-যাওয়ার পথে কাপড় ভিজে যায়।

খাদ্য গুদামের ম্যানেজার বোরহান উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বর্ষার শুরু হতেই গুদামের অফিস চত্বর সহ বেশ কিছু বাসা-বাড়ি ও গুদামের সামনে পানি জমে আছে। খাদ্য গুদামের পাশের ডোবা ভরাট করে দোকানপাট নির্মাণের ফলে বৃষ্টির পানি বের হতে পারছে না। ফলে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই বিষয়টি আমি সংশিøষ্ঠ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

ঈশ্বরদী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জলাবদ্ধতার বিষয়টি সম্পর্কে আমিও অবগত রয়েছি। খাদ্যগুদামের সামনে পানি বের হওয়ায় জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে লিখিতভাবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।


(এসকেকে/এসপি/নভেম্বর ০৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test