E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রসিক নির্বাচন

জাপায় চূড়ান্ত, অপেক্ষায় আ.লীগ-বিএনপি

২০১৭ নভেম্বর ০৫ ২০:১৮:৫৮
জাপায় চূড়ান্ত, অপেক্ষায় আ.লীগ-বিএনপি

রংপুর প্রতিনিধি : রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় বারের মতো এ সিটির নির্বাচন।

তফসিল ঘোষণার আগেই জাতীয়পার্টির প্রার্থী চূড়ান্ত করা হলেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে প্রার্থিতা বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি।

এদিকে, নির্বাচনকে ঘিরে ভিন্নরকম এক আমেজ সৃষ্টি হয়েছে নগরজুড়ে। কে হবেন আগামীর নগরপিতা তা নিয়ে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ।

জাতীয়পার্টির দূর্গ নামে খ্যাত রংপুরের নগরভবন জয় করতে এবার মরিয়া হয়ে উঠেছে জাতীয় পার্টি। তফসিল ঘোষণার একদিন আগেই শনিবার রাতে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় রংপুর মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে।

পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ শনিবার রাত ৮টায় তার ঢাকার প্রেসিডেন্ট পার্ক বাসভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মনোনয়নপত্র তুলে দেন।

রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির জানান, মোস্তফা জাতীয় পার্টির পরীক্ষিত সৈনিক। তিনি নানা সংকটের মধ্যেও র্দীঘদিন ধরে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করতে কাজ করে গেছেন। ইতোপূর্বে তিনি রংপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যানও ছিলেন, জনগণের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ভালো। দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার পূর্বের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা সবকিছু বিবেচনা করে তাকে দলের মনোনয়ন দিয়েছেন।

তিনি বলেন, মোস্তফাকে মনোনয়ন দেয়ায় দলের নেতাকর্মীরা অনেক খুশি হয়েছে। আমরা জাতীয় পার্টির সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ আছি এবং তাকে মেয়র নির্বাচিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

জাতীয়পার্টির প্রার্থিতা চূড়ান্ত হলেও খোদ এরশাদের ভাতিজা সাবেক সংসদ সদস্য ও রংপুর জেলা জাপার সাবেক সদস্য সচিব আসিফ শাহরিয়ার দলীয় সিদ্ধান্ত উপক্ষো করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

অপরদিকে, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয়নি। দলীয় মনোনয়ন পেতে এক ডজনেরও বেশি প্রার্থী লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। শিগগির প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে দলীয় একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সরফুদ্দিন আহম্মেদ ঝন্টু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও আয়ামীলীগ নেতা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়ার রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা রাশেক রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনান, মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলন, শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ও আওয়ামী লীগ নেতা প্রফেসর ড. জয়নুল আবেদীন সরকার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আতাউর জামান বাবু।

এছাড়াও সাবেক পৌর মেয়র ও জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা আব্দুর রউফ মানিকও আওয়ামী লীগের টিকেট পেতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হলে বিএনপির পক্ষে নির্বাচন বর্জন করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন নেতাকর্মীরা। তবুও ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মনোনয়ন পেতে মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি কাওছার জামান বাবলা ও জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু দৌঁড়ঝাঁপ করছেন।

এছাড়াও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রইচ আহম্মেদ, মহানগর বিএনপির সভাপতি মোজাফফর হোসেন, সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম মিজু এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান সামুর দৃশ্যমান কোনো প্রচারণা দেখা না গেলেও মনোনয়নের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু বলেন, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৮ থেকে ২০টি করে মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতা এখনও জেলে বন্দি। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রংপুরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলোকে কোনও সভা-সমাবেশ করতে দেয় না পুলিশ। সকল কর্মসূচি দলীয় কার্যালয়ের ভেতরেই সীমিত সময়ের মধ্যে করতে হচ্ছে।

দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে প্রধান সড়কে আসার আগেই পুলিশ গতিরোধ করে ঘিরে ফেলে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তারপরও দলের হাইকমান্ড যে নির্দেশনা দেবে আমরা সেভাবেই কাজ করব।

প্রসঙ্গত, এ সিটি করপোরেশনে বর্তমানে ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৯ এবং নারী ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৬২ জন। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১৯৬টি, ভোটকক্ষ ১ হাজার ১৭৭টি।


(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test