E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কেন্দুয়ায় ৬৭ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই

২০১৭ নভেম্বর ১০ ১৭:৫৬:০৭
কেন্দুয়ায় ৬৭ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী কেন্দুয়া উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৩ টি ইউনিয়নে মোট ১শ ৮২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে পাঠ গ্রহণ করছে প্রায় অর্ধলক্ষ কোমলমতি শিক্ষার্থী। কিন্তু ১ শ ৮২ টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৭ টি সরকারি প্রাথমি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে। ফলে একদিকে যেমন এসব বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে, অপরদিকে চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে প্রশাসনিক কর্মকান্ডও। এর ফলে থমকে দাঁড়াচ্ছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম।

জানা যায়, ১শ ৮২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৭ টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ছাড়াও ৫ জন সহকারী শিক্ষক এবং বিদ্যালয় গুলো তদারকি করার জন্য ৭ জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার মধ্যে আছেন মাত্র ৩। এলাকার ছাত্র অভিভাবক ও সচেতন মহলের অভিযোগ অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষিকাগণ সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন না। তারা মনগড়া ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে সরকারি কোষাগার থেকে পুরোপুরি অর্থ উত্তোলন করছেন। সম্প্রতি গগডা হাজী এ মালেক, গগডা হাজী শুকুর মাহমুদ, গগডা কোনাপাড়া, চিটুয়া নওপাড়া, বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০ জন শিক্ষকসহ গামরুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বেতন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমদাদুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে গিয়ে গামরুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া অন্য ৫ টি বিদ্যালয়ে তালাবদ্ধ থাকায় মোট ২১ জন শিক্ষকের বেতন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানীর কাছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যে কয়জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আছি, এলাকা বন্টন করে নিয়ে শতভাগ উপস্থিতি রাখার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিছুদিন আগে বলাইশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুলতানা পারভীন পপি বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসা যাওয়া না করায় এলাকাবাসীর অভিযোগ তদন্তে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এর রকম শিক্ষক শিক্ষিকা যারাই বিদ্যালয়ে পাঠদানে ফাঁকি দিচ্ছেন তাদের বিরোদ্ধে পর্যায়ক্রমে তদারকির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে এলাকার সতেচন মহল অভিযোগ তুলে বলেন, ১শ ৮২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের কার্যক্রমে ফাঁকি দিয়ে সরাসরি রাজনৈতিক দলের পদ, পদবী ব্যবহার করে যাচ্ছেন। এতে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমদাদুল হক বলেন, সমস্যাতো কিছু আছেই, তবে সব সমস্যা একেবারেই দূর করা যাবে না।

তিনি প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রশাসনকে সহযোগীতা করার জন্য সমাজের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ সকল শ্রেনী পেশার নেতৃবৃন্দদের একযোগে আন্তরিক ভাবে কাজ করতে হবে। তবেই প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে তিনি দাবি করেন।

(এসবি/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test