E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাব্যতা সঙ্কটে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি সার্ভিসে অচলাবস্থা

২০১৭ নভেম্বর ২১ ১৫:৩০:৪৬
নাব্যতা সঙ্কটে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি সার্ভিসে অচলাবস্থা

চাঁদপুর প্রতিনিধি : মাসের পর মাস পড়ে আছে গর্তে ভরা প্রায় ৫০ কিলোমিটার ভাঙ্গা রাস্তা। এ সমস্যার সাথে এবার নতুন করে যোগ হয়েছে চ্যানেলে নাব্যতা সঙ্কট। এ দুই সমস্যার কারণে চাঁদপুর-শরিয়তপুর নৌ-রুটে আবারো দেখা দিয়েছে ফেরি চলাচলে অচলাবস্থা।

এ সমস্যার দরুন দুই পাড়ে আটকে আছে প্রায় আড়াইশ গাড়ি। চরম দুর্ভোগের শিকার চালক ও হেলপার। গাড়ি নিয়ে ফেরীতে উঠার জন্য দুই তিন দিন ঘাটে বসে থাকতে হয় তাদের। শরীয়তপুর চ্যানেলে বিআইডাব্লিউটিএর ড্রেজিং কাজের জন্য কর্তৃপক্ষ একদিন ফেরি বন্ধ রেখেছে। অবশ্য নাব্যতা সঙ্কট কিছুটা নিরসন হবার পর ফের চালু হয়েছে এ রুটের ফেরী জানিয়েছেন চাঁদপুর ফেরীঘাটের ব্যবস্থাপক পারভেজ খান।

তিনি আরো জানান, যে স্থান দিয়ে ফেরি আটকে যাচ্ছে সেখানে প্রয়োজনীয় ড্রেজিং করার পর পুনরায় ফেরী চালু হয়েছে এবং এ রুটের জন্য দেয়া তিনটি ফেরীই এখন চলছে। নাব্যতা সঙ্কটের কারণে ফেরি ঠিকমতো চলাচল করতে পারছেনা। ফেরীতে গাড়ির সংখ্যা কমিয়ে চলাচল করছে। এজন্যে গাড়ির জট কিছুটা সৃষ্টি হয়েছে। এখন ফেরী ভালোভাবেই চলছে।

ফেরি কুসুমকলির পাইলট মজিবুর রহমান ও সেকেন্ড মাস্টার শহিদুল ইসলাম জানান, এবার শুষ্ক সময়ে শরীয়তপুর ঘাটের সম্মুখ হতে বেড়াচাক্কী পর্যন্ত চ্যানেলের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নাব্যতা সঙ্কট। চ্যানেলে যেটুকু পানি এবং নদীর গভীরতা থাকা দরকার তা নেই। জাহাজ চলাচলের জন্য অনুপযোগী থাকায় ফেরী ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ যাবত এমন পরিস্থিতি বিরজমান।

সাতক্ষীরা ট-১১০৩৪২ গাড়ির চালক রফিকুল ইসলাম (৫৫) জানান, আমরা গত এক বছর যাবত ভাঙ্গা রাস্তায় গাড়ি নিয়ে আসা যাওয়ায় করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে আছি।

তিনি বলেন, চাঁদপুরের ১০/১২ কিলোমিটার ও শরীয়তপুর ঘাট হতে আঙ্গারিয়া পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার রাস্তা এতটাই খারাপ গাড়ি চলাচলের জন্য মুটেও উপযুক্ত না। নিরুপায় হয়ে এখান দিয়ে আমরা গাড়ি নিয়ে আসছি। তারপরও ফেরিগুলো তারা ঠিকমতো চালায় না। ঘাট আর ফেরীর লোকজন তাদের ইচ্ছায় ফেরী চালায় বলে অভিযোগ অনেক ভোক্তভুগী গাড়ি চালকদের।

উল্লেখ্য, বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সাথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের পঁচিশ জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০০০ সালে তৎকালীন ও বর্তমান সরকার মেঘনা নদীর ওপর চাঁদপুর-শরিয়তপুর ফেরী সার্ভিস গড়ে তোলেন। এ ফেরী কার্যক্রমের তখন উদ্বোধন করেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধনের পর থেকে দুইপাড়ে বিআইডাব্লিউটিএ টার্মিনাল স্থাপনা নির্মাণ করলেও কবেল চাঁদপুরের ফেরীঘাট টার্মিনাল ব্যবহৃত হচ্ছে। শরীয়তপুর তথা ঈদগাহ ফেরীঘাট টার্মিনাল পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। সেটি ব্যবহারের প্রয়োজনীয় রাস্তা অবকাঠামো পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়নি। মূল রাস্তার ওপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে এ পথে আসা যানবাহন ফেরী পারাপার হচ্ছে। দিন দিন এ রুটে যানবাহনের চাপ বাড়লেও সরকার চাঁদপুর ও শরীয়তপুর ফেরী রাস্তার টেকসই উন্নয়ন করেনি। তৈরি করা হয়নি প্রয়োজনীয় ব্রীজ এবং কালভার্ট।

এবারের অতি বৃষ্টি এবং বন্যায় চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। চাঁদপুর সড়ক বিভাগের চান্দ্রা-ভাটিয়ালপুর-হরিণা ফেরীঘাটের ১২ কিলোমিটার রাস্তা ভেঙ্গে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এ রাস্তায় গাড়ি চলাচল এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। অবশ্য চাঁদপুর সড়ক বিভাগ উল্লেখিত রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

শরিয়তপুরের রাস্তার খুবই বেহাল অবস্থা বলে জানিয়েছেন এ পথে আসা ভোক্তভোগী গাড়ির চালকরা। গত ষোল বছরেও এ ফেরি সার্ভিস স্বাভাবিক হতে পারেনি। একটার পর একটা সমস্যা লেগেই আছে। খবর নেই রো রো ফেরী চালুর।

(ইউএইচ/এসপি/নভেম্বর ২১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test