চকলেটের প্রলোভনে দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : চকলেট খাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৬ বছর বয়সী দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে অবশেষে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ধর্ষক ইয়াকুব আলী (৩৬) কে একমাত্র আসামী করে লালপুর থানায় গত শনিবার মামলাটি দায়ের করেছেন ধর্ষনের শিকার দুই শিশুর মধ্যে একজন শিশুর মা নিলুফা ইয়াসমিন। প্রচুর রক্তক্ষরণে আহত ওই দুই শিশুকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই দিন ভর্তি রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। স্থানীয় হবি মন্ডল ও মকবুল হোসেন নামের দুই মেম্বার ঘটনাটি জানাজানি না করে ঘরোয়া ভাবে মিমাংসা করার জোর চেষ্টা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

গত ২৭ নভেম্বর ঈশ্বরদী বেনারসী পল্লীর নিকটবর্তী লালপুর উপজেলার শ্রীরামগাড়ী ঝাড়পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মামলার এজাহার, স্থানীয় এলাকাবাসী ও দুই শিশুর পারিবারিক সূত্র জানান, ঘটনার দিন সকাল ৯টার দিকে ঈশ্বরদীর সীমানা সংলগ্ন শ্রীরামগাড়ী গ্রামের সাইফুল ইসলামের শিশু কন্যা (৬) ও রিপন আলীর শিশু কন্যা (৬) বাড়ির বাইরে খেলা করছিল। সে সময় একই এলাকার জফি মন্ডল এর ঘর জামাই ও ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের মাজদিয়া মাদ্রাসা পাড়া গ্রামের এসকেন আলীর ছেলে ইয়াকুব আলী পার্শ্ববর্তী শাজাহানের বাঁশ বাগানের মাচার উপর নিয়ে শিশুদ্বয়কে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এই ঘটনা কাউকে বললে ওই দুই শিশুকে হত্যারও হুমকি দেয় লম্পট ইয়াকুব।

ধর্ষণের পর প্রচুর রক্ত ক্ষরণে শিশুদ্বয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতে হলে তাদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালান। এরই অংশ হিসেবে স্থানীয় হবি মন্ডল ও মকবুল হোসেন নামের দুই ইউপি মেম্বার ঘরোয়াভাবে মিমাংসা করার জন্য ওই দুই শিশুর পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করে ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত ঘটনার পূর্ণ বর্ণনা ও প্রমাণ দাখিল করে সাইফুল ইসলামের স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন বাদী হয়ে লালপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর- ১, তাং ১/১২/২০১৭ইং। ঘটনার পর হতেই লম্পট ইয়াকুব আলী পলাতক রয়েছেন।

এলাকাবাসী জানায়, ইয়াকুব আলী একজন লম্পট ও চরিত্রহীন প্রকৃতির লোক। এর আগেও তার বিরুদ্ধে এলাকায় এমন অভিযোগ রয়েছে । এলাকাবাসী লম্পট ইয়াকুব আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন।

মামলার বাদী নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ওই নরপশুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’র দাবী জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে লালপুর থানার ওসি আবু ওবায়েদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ওই দুই শিশুর প্রতি পাশবিক অত্যাচার করা হয়েছে, যা সত্যিই দুঃখজনক। আসামীকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। অচিরেই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।

রবিবার আদালতে ওই দুই শিশুর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ০৩, ২০১৭)