E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রংপুরে ঠাকুরপাড়া তাণ্ডব  

সাত দিনের রিমান্ডে প্রকৌশলী ফজলার

২০১৭ ডিসেম্বর ২৭ ১৪:১৫:৩২
সাত দিনের রিমান্ডে প্রকৌশলী ফজলার

রংপুর প্রতিনিধি : রংপুরের ঠাকুরপাড়ার ঘটনায় করা মামলার এজাহারনামীয় আসামি প্রকৌশলী ফজলার রহমানকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার বেলা ১২টার দিকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (৩, গঙ্গাচড়া) হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গঙ্গাচড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিস্টার আলী।

অপরদিকে আসামি পক্ষে জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবী। শুনানি শেষে বিচারক আরিফুল ইসলাম জামিন নামঞ্জুর করে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরআগে কড়া পুলিশি প্রহরায় ফজলারকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।

ঠাকুরপাড়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় গত ১০ নভেম্বর রাতে গঙ্গাচড়া থানার এসআই রেজাউল ইসলাম ও কোতোয়ালি থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। দুই মামলার একটিতে বুধবার শুনানি হয়।

ফজলার রংপুর জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী। তার স্ত্রী সুলতানা আক্তার কল্পনা স্থানীয় জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত এবং তিনি সদর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। ঠাকুরপাড়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় প্রকৌশলী ফজলার রহমানের নাম আসার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর শ্যামলী এলাকা থেকে ফজলারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আলেফ উদ্দিন বলেন, ফজলার রহমানকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে। তারা জামিনের আবেদন জানিয়েছেন। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

প্রসঙ্গত, মহানবীকে (সাঃ) নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি ও অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগ এনে গত ৬ নভেম্বর ঠাকুরপাড়ার মৃত খগেন রায়ের ছেলে টিটু রায়ের (৪০) বিরুদ্ধে রংপুর সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ গ্রামের মুদি দোকানি রাজু মিয়া গঙ্গাচড়া থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

এরপর টিটু রায়কে গ্রেফতারের দাবিতে ৭ নভেম্বর পাগলাপীর এলাকায় বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা। বিক্ষোভের পর তাকে (টিটু) গ্রেফতারের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপিও দেন তারা। এরপরও টিটু গ্রেফতার না হওয়ায় ওই এলাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে ১০ নভেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি দেন স্থানীয়রা।

পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১০ নভেম্বর জুমার নামাজের পর স্থানীয় মুসল্লিরা শলেয়াশাহ বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে। এক পর্যায়ে আশপাশের এলাকা থেকে কয়েক হাজার মুসল্লি ও গ্রামবাসী একজোট হয়ে ঠাকুরপাড়ার দিকে অগ্রসর হতে ধরলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে হাবিব (২৭) নামে এক স্থানীয় যুবক নিহত ও পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।

এসময় বিক্ষুব্ধ মুসল্লি ও গ্রামবাসী ঠাকুরপাড়ার ৮টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় ২৫-৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২ থেকে আড়াই হাজার জনকে আসামি করে গঙ্গাচড়া ও কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ।

এদিকে ছবি পোস্ট করার অভিযোগে টিটু রায়কে গ্রেফতারের পর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। টিটু রায় বর্তমানে কারাগারে বন্দী রয়েছেন।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test