E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

অবাধে চলছে পাখি শিকার, আইনের প্রয়োগ নেই!

২০১৮ জানুয়ারি ০৩ ১৫:২৭:১৫
অবাধে চলছে পাখি শিকার, আইনের প্রয়োগ নেই!

মহিনুল ইসলাম সুজন, নীলফামারী : দেশে পাখি নিধন রোধে আইন থাকলেও আইনের সঠিক বাস্তবায়ন নেই বলে মন্তব্য করেছেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের পাখি বান্ধব সেচ্ছাসেবী সংগঠন সেতুবন্ধনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলমগীর হোসেন ।তিনি ক্ষোভ করে বলেন,কাগজি আইন কাগজেই রয়ে গেল, নেই কোন বাস্তবায়ন। জীব হত্যা মহাপাপ এটি চিরন্তন সত্য কথা। তাহলে কেন এসব কথা মানছে না পাখি শিকারী আজমল হোসেন।

ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এই প্রকৃতি। রাতের নীরবতা কাটিয়ে ভোর হতে না হতেই পাখিরাও শুরু করে কলরব (কিচিরমিচির)। জাগিয়ে দেয় মানব সমাজকে। শুরু হয় কর্মব্যস্ততা। এরই মাঝে বন্দুক হাতে বেরিয়ে পড়েন আজমল। উদ্দ্যেশ্য পাখি শিকার করা। যা দিয়ে তিনি তার দুপুরের আহার সারাতে চান। এজন্যে তিনি প্রায়শই লাইসেন্স বিহীন বন্দুক হাতে গ্রামগঞ্জে ঘুরে ফিরেন। আর অবাধে পাখি শিকার করতে থাকেন।

গত শুক্রবার (২৯শে ডিসেম্বর/১৭) তার নিজ গ্রামের হুগলি পাড়ায় দুটি বক, একটি ঘুঘু, শিকার করতে গিয়ে এলাকার মানুষের রোষানলে পড়ে আজমল হোসেন। খবর দেওয়া হয় প্রশাসনকে। আজও এর আইনী সমাধান খুঁজে পায়নি সচেতন মহল।

গত বছরের শনিবার (২রা ডিসেম্বর) জেলার জলঢাকার তালুক গোলনা গ্রামের দুলাল চন্দ্র রায় (২৭) পাখি শিকারীর বন্ধুকের গুলিতে গুরুতর আহত হয়। সে ঘটনায় ভাগ্যিস তার চোখ দুটি বেঁচে যায়। ধামাচাপা দিয়ে পাখি শিকারী বেঁচে যায়।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হুগলীপাড়া গ্রামের আজমল হোসেন (৪৫)। পাখি শিকার করা যেনো তার নিত্যদিনের ঘটনা। পাখিরা ডানা মেলে নীল আকাশে উড়তে ভালোবাসে। আর পাখি প্রেমীরা সে দৃশ্য উপভোগের মাধ্যমে মনের আনন্দ খুঁজে ফিরে। অন্যদিকে পাখির মাংস দিয়ে আহার করে তৃপ্তি খুঁজে পান আজমল হোসেন। কোথায় তার খুঁটির জোড় তা কেউ জানে না।
পাখি শিকার রোধে দেশে আইন থাকলেও সে আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে দিব্যি পাখি শিকার করেন তিনি। তাই তিনি তার এলাকায় পাখি শিকারি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। পাখি শিকার যেনো তার কাছে একধরনের গৌরবগাঁথা বিজয়। এ নিয়ে তার শেষ নেই যেনো অহংকারের সীমা। তার শাস্তি দাবি করেছেন, পাখি ও প্রকৃতি সংরক্ষনে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেতুবন্ধন ও এলাকার সচেতন মহল।

সেতুবন্ধনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলমগীর হোসেন জানান, "বন্যপ্রাণী ( সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন- ২০১২" অনুযায়ী- পাখি শিকার, হত্যা, আটক ও ক্রয়-বিক্রয় করলে, সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছর কারাদন্ড অথবা ২ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে আজমলের পাখি শিকারের বিষয়ে প্রশাসন নিরব।
তিনি আরো জানান, পাখি প্রকৃতির বন্ধু। প্রকৃতিতে পাখির অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু কিছু মানুষ বুঝে না বুঝে নির্ধিধায় পাখি শিকার করছে। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে প্রকৃতিতে। তাই পাখি শিকার রোধে সর্বমহলে সচেতনতার পাশাপাশি আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এলাকাবাসী জানান, আজমল অবাধে পাখি শিকার করে থাকে। এ ব্যাপারে তিনি কারো নিষেধ শুনেও না ও মানেও না।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বজলুর রশিদ জানান, ওই পাখি শিকারি সম্পর্কে জেনেছি। খুব শীঘ্রই তাকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাখিরা চায় প্রকৃতিতে অবাধ বিচরণ। মুগ্ধতা ছড়িয়ে প্রকৃতিকে করতে চায় আপন। এতে বাধ সাধে আজমলের মতো কিছু মানুষের। যাদের দৌরাত্মেই বাড়ছে দিনেদিনে অবাধে পাখি নিধন।

(এমআইএস/এসপি/জানুয়ারি ০৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test