E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরে সওজ’র উচ্ছেদের নামে বৈধ মালিকদের উচ্ছেদের অভিযোগ 

২০১৮ জানুয়ারি ১৯ ২৩:০৬:০৮
নাটোরে সওজ’র উচ্ছেদের নামে বৈধ মালিকদের উচ্ছেদের অভিযোগ 

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরে মহাসড়কের দুই ধারে অবৈধভাবে গড়ে উঠা অসংখ্য স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সড়ক সম্প্রসারণের জন্য গত কয়েকদিন ধরে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, তাদের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ পূর্ব নোটিশ না দিয়েই তাদের অনেকগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেকু মেশিন দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছেন। এ সময় তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা পণ্য সামগ্রীও অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। একারণে তাদের লাখ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে । 

নাটোর শহরের বড় হরিশপুর এলাকার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, হরিশপুর বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় তার বাবা মৃত সুধন মিয়াসহ সন্তোস কুমার সরকার ও নারায়ণ কুমার সরকারের ব্যক্তি মালিকানাধীন দুই শতাংশ জমিতে নির্মিত ১৯ টি দোকান ঘর গুড়িয়ে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। জমির বৈধ দলিল থাকা সত্বেও পূর্ব নোটিশ ছাড়াই তাদের দোকান ঘরগুলো ভেকু মেশিন দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন ব্যবসায়ীরা।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী মোবারক ভুঁইয়া, রনি আহম্মেদ, মাজদার হোসেন, হাসান আলীসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, হঠাৎ করেই দোকান গুড়িয়ে দেওয়ায় তারা মালামালও সরাতে পারেননি। একারণে তাদের বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তারা সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছে তাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

এছাড়াও কানাইখালী এলাকার ঔষধ ব্যবসায়ী সিটি মেডিক্যালের স্বত্বাধিকারী ইব্রাহীম হোসেন, রানা ওয়াচ এন্ড ইলেকট্রনিক্সের মালিক প্রমোদ ধর, মাস্টার ফার্মেসীর মালিক বাবু, ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল হলের মালিক আলহাজ্ব আব্দুল হালিম, চিত্ত মেডিক্যালের মালিক চপল সরকার এবং মামুন স্টোরের মালিক আক্কাস আলী অভিযোগ করে বলেন, তাদের দোকান ভাঙ্গার পূর্বে সড়ক ও জনপথ বিভাগ তাদের কোনরুপ নোটিশ বা সড়ক ও জনপথ বিভাগের বলে ল্যান্ড মার্ক করে দেয়া হয়নি। ফলে তারা নিশ্চিন্ত মনে ব্যবসা করছিলেন। কিন্তু গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে কোনরুপ নোটিশ না দিয়েই তাদের ছয়টি দোকান গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসময় তাদের দোকানে রক্ষিত বিপুল পরিমান ঔষধ সহ অন্যান্য পণ্য সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার কোন সুযোগও দেয়া হয়নি। ফলে তাদের লক্ষ লক্ষ টাকার ঔষধ সহ অন্যান্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়।

তারা আরও বলেন, তিল তিল করে পরিশ্রম করে গড়ে তোলা সম্পদ নির্মমভাবে গুড়িয়ে দেয়ায় তারা পথে বসেছেন। এখন কি করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না তারা। বাধ্য হয়ে তাদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং নাটোর পৌরসভার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

এ বিষয়ে নাটোর পৌরমেয়র উমা চৌধুরী জলি বলেন, পৌরসভার রেকর্ডিয় সম্পত্তিতে নির্মিত ৬টি দোকান ভাংচুরে তিনি হতবাক হয়েছেন। বিষয়টি তিনি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানাবেন।

এ বিষয়ে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম জানান, গত ১৬ জানুয়ারি থেকে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ নাটোর থেকে সিংড়া এবং নাটোর-বনপাড়া পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ও নাটোর শহরের বড়হরিশপুর ও মাদ্রাসা মোড় এবং কানাইখালী এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ সময় অসংখ্য অবৈধ স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযান চালোনোর পূর্বে অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেয়ার জন্য মাইকিং করা সহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় চিহ্নিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গার বাইরে কোন উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়নি। এটা সরকারী কাজ। এই কাজ সরকারের নির্দেশনায় চলছে।

(এডিকে/এসপি/জানুয়ারি ১৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test