E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরা ৩

মনোনয়ন পেতে মরিয়া রুহুল হক, সরব বিএনপি-জাপা

২০১৮ জানুয়ারি ২১ ১০:৪২:৩৭
মনোনয়ন পেতে মরিয়া রুহুল হক, সরব বিএনপি-জাপা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : আগামী একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৩ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির যেসব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠে নেমেছেন তাদের মধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থীর সংখ্যাই বেশি। এই আসনের বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা: আ ফ ম রুহুল হক দ্বিতীয় বারের মতো দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে কাজ করছেন।

আওয়ামী লীগের হয়ে নর্দান ইউনিভারর্সিটি অব বিজনেন্স এন্ড টেকনোলজি খুলনার উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মো: আব্দুল্লাহ ও এলাকায় ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে অসংখ্য কর্মী নিয়োগ করে ব্যাপক প্রচারণায় নেমেছেন। তিনি দুই টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি মেডিকেল কলেজসহ ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। যা দেশে শিক্ষা বিস্তারে সব চেয়ে বড় এডুকেশন গ্রুপ। এলাকায় ইতোমধ্যে তাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচানা শুরু হয়েছে। বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে ড্যাবের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা: শহিদুল আলমও জোরেসোরে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা। তবে বিএনপির মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন আশাশুনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম রফিকুল ইসলাম। আর জাতীয় পার্টি এরশাদের একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ,এই আসনের সাবেক এমপি অ্যাড. স.ম সালাউদ্দিন।

বারবার ভেঙ্গেছে আসনটি। সর্বশেষ ২০০৮ এর নির্বাচনে নতুন সীমানা নির্ধারন অনুযায়ী আসনটি পূনর্গঠিত হয়েছে। যুক্ত হয়েছে আশাশুনি উপজেলা ১১ টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫ টি এবং কালিগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন। তিন উপজেলার মোট ২০ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে সাতক্ষীরা ৩ আসন। এর আগে কেবলমাত্র আশাশুনি উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল সাতক্ষীরা-৩। এ আসনে পর পর দুই বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন দেশের প্রখ্যাত শৈল্যচিকিৎসক ডা: আ ফ ম রুহুল হক।

তিনি ২০০৮ সালে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে ৫ বছর সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তার প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরার বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে তার প্রচেষ্টায় স্থাপিত হয়েছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ। বেশ সুনামও কুড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তিনি তাঁর অর্জত সুনাম ধরে রাখতে পারছেন না বলে মনে করেন এলকার অনেকেই। গত ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি পুন:রায় এমপি নির্বাচিত হলেও মন্ত্রীত্ব পাননি। তার পরও প্রচেষ্টা চালিয়ে নলতায় প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ড ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করেছেন। ঢাকাতে অবস্থান করলেও এলাকার মানুষের সাথে আছে তার যোগাযেগ। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় তার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।

ডা: আ ফ ম রুহুল হক বলেন, আমি পর পর দুই বার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়ে দেশের জন্য এমডিজি পুরস্কারসহ বেশ কিছু ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার বয়ে এনেছি। দেশের স্বাস্থ্য সেবা সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো সক্রিয় করেছি। আজ মানুষ তার সুফল পাচ্ছে। আগামীতে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। দলের হাইকমান্ড দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে আমার ইতিবাচক এসব কর্মকান্ডই বিবেচনা করবে।

ডা: আ ফ ম রুহুল হকের সাথে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে মাঠে নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, নর্দান ইউনিভারর্সিটি অব বিজনেন্স এন্ড টেকনোলজি খুলনার উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মো: আব্দুল্লাহ। তিনি বঙ্গবন্ধুর চেতনায় বিশ্বাসী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের কর্মকান্ডের সাথে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মো: আব্দুল্লাহ। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য তিনি সম্প্রতি এলাকায় কাজ করছেন। তার কর্মীরা মাঠে প্রচার প্রচারণায় নেমেছেন। রোজা, ঈদ, পূঁজায় এলাকার গরীব ও অসহায়দেরকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নানা ভাবে সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। তিনি দেবহাটা, আশাশুনি ও কালিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে প্রার্থী হওয়ার কথাও জানান দিয়েছেন। সম্প্রতি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব ও আশাশুনি প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার উন্নয়নে কি কি কাজ করবেন তার পরিকল্পনার কথাও মানুষকে জানান দিচ্ছেন।

এই আসনের তৃনমূলের নেতা কর্মী ও সাধরণ ভোটাররা জানান, প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মো: আব্দুল্লাহ বহুমুখী উদ্যোগের সফল ও সৃজনশীল উদ্যোক্তা ও তরুণ প্রজন্মের রোল মডেল। সম্প্রতি তিনি সমাজসেবামূুলক কাজে ও দারিদ্র বিমোচনে যাকাত ভিত্তিক সহযোগিতা করার কারণে এলাকার নারী শিশু ও অসহায় মানুষের কাছে প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছেন। তবে অনেকের কাছে তিনি অতিথি পাখি। তার বিরুদ্ধে নোড়ারচকে ভূমিহীনদের বিরুদ্ধে হামলা ও মামলা করার অভিযোগ রয়েছে। তার কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অংশ।

ড. আবু ইউসুফ মো: আব্দুল্ল¬াহ বলেন, সাতক্ষীরার মাটিতেই তার জম্ম। লেখাপড়ার কারণে সাতক্ষীরার বাইরেও থাকতে হয়েছে। এখন সুযোগ হয়েছে এলাকার ফিরে মানুষের জন্য কিছু করার। এলাকার মানুষের পাশে থেকে সারাজীবন কাজ করতে চাই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড মনে করলে আমাকে মনোনয়ন দিবেন। মনোনয়ন পেলে আমি সাতক্ষীরার প্রধান সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করবো। জনকল্যানসহ সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।

তরুণ প্রজন্ম, গ্রাম্য অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষাকে গ্রামমূখী করা, শিক্ষার ডিজিটাইলেশন করা এবং সততা ও প্ররিশ্রমের ভিতরেই নতুন প্রজন্মকে উদ্ভাসিত করা, উদ্বেলিত করা ও অনুপ্রাণিত করা জরুরী বলেও মনে করেন স্বনামধন্য এই শিক্ষাবিদ।

এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে কাজ করছেন আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ,আশাশুনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম মোস্তাকীমও। তিনি দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। প্রচারনায় নেমেছেন। এ বি এম মোস্তাকীম বলেন, রাজনীতি করি সাধারণ মানুষের জন্য। তাদের সুখ,দু:খের সাথি হয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। এলাকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। আমাগী নির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। দলের জন্য সার্বক্ষনিক শ্রম দিচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কে দলীয় মনোনয়ন পাবে সেটা বড় কথা নয়, নৌকা প্রতীক যিনি পাবেন তার পক্ষেই কাজ করবো।

এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি ডা: মোখলেছুর রহমান, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক সাবেক সাংসদ মনসুর আহমেদ। তারাও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। এলাকাবাসি জানান, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে এ আসনে দলীয় বিভক্তি প্রকাশ্য রুপ না নিলেও মনোনয়ন প্রত্যাশী একে অপরের মধ্যে দিন দিন দূরত্ব বাড়ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ মুনসুর আহমেদ বলেন ‘সারা জীবন আওয়ামী লীগ করেছি। জনগন দুইবার সংসদ সদস্য হিসাবে এবং ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে বারবার তাকে ভোট দিয়েছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দীর্ঘ ২২ বছর কাটিয়েছেন। সর্বশেষ দলের হাল ধরেছেন সভাপতি হিসাবে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে জনগন তার কর্মের মূল্যায়ন করবেন নিশ্চয়ই’ ।

এ আসনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে প্রচারে নেমেছেন ড্যাবের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা: শহিদুল আলম। এলাকার মানুষের কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে একজন কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে তার রয়েছে যথেষ্ট সুনাম। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে তিনি সরকারি চাকরিতে থাকাকালীন সময়ে সাতক্ষীরার সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদেরকে নানা ভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন। এলাকার মানুষ আজও তার কথা স্মরন রেখেছে। শুধু সাতক্ষীরা-৩ আসন নয়, সাতক্ষীরা-৪ আসনের মানুষও ডা: শহিদুল আলমকে সাংসদ হিসেবে দেখতে চায়। ভালো মানুষ হিসাবে সেখানকার নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে তার বেশ গ্রহণযোগ্যতা।

জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন এই আসনের সাবেক সাংসদ, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, সাতক্ষীরা জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য অ্যাড. স. ম সালাউদ্দিন। তিনি সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ছিলেন। আশাশুনি আসন থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ তে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে তিনি রাজনৈতিক মাঠে নিজেকে দৃশ্যমান করছেন না। তবে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা নিয়ে অনেকের কাছেই তিনি প্রশ্নবিদ্ধ।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি এমপি থাকাকালীন সময়ে এলাকায় উন্নয়নে কাজ করেছেন। আগামীতে নির্বাচিত হতে পারলে উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখবো।

ডা: শহিদুল আলম বলেন, বিএনপির সক্রিয় রাজনীতির সাথে আমি দীর্ঘদিন জড়িত। ২০০৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আমি স্বেচ্ছায় সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করি। সব সময় এলাকার মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশি হয়রানির কারনে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মাঠে দাঁড়াতে পারছে না। আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে আমি অবশ্যই দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। বহু আগে থেকেই এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে আসছেন। সুযোগ হলে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।

এ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হতে আগ্রহী আশাশুনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি , কূল্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্রজীবন থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে টানা ৪ বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। বিএনপির সংকটে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে দলের জন্য সব সময় কাজ করে যাচ্ছি। আমি আগামী নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। সাংসদ হতে পারলে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে আন্তরিক ভাবে কাজ করবেন।

এ আসনে জামায়াতের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নাম শুনা যাচ্ছে মুহাদ্দিস রবিউল বাসারের। ২০১৩ সালে জামায়াত জেলা ব্যাপী নাশকতা চালায়। তারা সাতক্ষীরাকে অচল করে দেওয়ার চেষ্টা করে। ২০১৩ সালে দায়েরকৃত ওই সব নাশকতা মামলায় স্থানীয় জামায়াত নেতা-কর্মীরা বর্তমানে এলাকা ছাড়া। এলাকায় তাদের তেমন কোন তৎপরতা না থাকলে নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা যে কোন মুহুর্তে সংগঠিত হয়ে নির্বচনী প্রচার প্রচারনায় অংশ নেবে বলে জানান স্থানীয় জনগন।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ২১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test