E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আগামীকাল শুরু হচ্ছে না রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

২০১৮ জানুয়ারি ২২ ১৭:৪৯:৫০
আগামীকাল শুরু হচ্ছে না রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আপাতত তা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশের শরণার্থী প্রত্যাবাসনবিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম আজাদ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে; তবে প্রকৃত প্রত্যাবাসন শুরু হতে আরো সময় লাগবে।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা যদি প্রত্যাবাসনকে একটি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখি তাহলে একে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হলো ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা, যে কোন নীতির ভিত্তিতে প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হবে, দ্বিতীয় হলো কাঠামোগত প্রস্তুতি ও তৃতীয়টি শারীরিক বা মাঠ পর্যায়ে প্রকৃত প্রত্যাবাসন শুরু করা।’

তবে ইতোমধ্যে প্রথম ধাপটি সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। কারণ একটি ফ্রেমওয়ার্ক হয়েছে এবং ১৯ ডিসেম্বর জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি হয়েছে। এরপর চলতি মাসে মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে এ কমিটির বৈঠকে প্রত্যাবাসন সম্পর্কিত চুক্তিও সাক্ষরিত হয়েছে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করেছি। যেসব প্রস্তুতিমূলক কাজ দরকার প্রত্যাবাসনের জন্য সেটি হাতে নিয়েছি। এটা হয়ে গেলে প্রকৃত প্রত্যাবাসনের কাজে হাত দেয়া যাবে বলে আশা করছি।’

মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের কোন তালিকা দেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, কোনো কোনো গণমাধ্যমে লেখা হয়েছে যে এক লাখের তালিকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এটি আসলে এক লাখের বিষয় নয়। মিয়ানমারের অভিবাসী সবাই প্রত্যাবাসনের তালিকায় আসবে, যা প্রায় সাত লাখ ৬০ হাজার।

তিনি বলেন, ‘আমরা তালিকা তৈরির কাজ করছি। এটি হবে পরিবার ও গ্রামভিত্তিক। আমরা এখনো মিয়ানমারকে কোনো তালিকা দেইনি। যেভাবে দিতে হবে সেভাবে তালিকা তৈরির কাজ চলছে।’

এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় তারা জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাই কমিশন বা ইউএনএইচসিআরকে সম্পৃক্ত করতে সমঝোতা সাক্ষর করবেন। কিন্তু তাদের এ কাজে সম্পৃক্ত করার দরকার হলো কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের শরণার্থীবিষয়ক কমিশনার বলেন দুটি কাজে তাদের ভূমিকা থাকতে পারে।

তার মতে, ‘একটি হচ্ছে আমরা বলেছি প্রত্যাবাসন হবে নিরাপদ ও স্বেচ্ছায়। এ স্বেচ্ছার বিষয়টা ঠিক করতে বা নিরূপণ করতে তাদের কাজে লাগাতে পারি। একই সঙ্গে প্রত্যাবাসনের প্রাক পর্যায়ে সহযোগিতার জন্য তাদেরও কাজে লাগাতে পারি। এ দুটি ক্ষেত্রে তারা কাজ করবে বলে আমরা আশা করছি।’

তিনি বলেন, শরণার্থী কার্যক্রমে জাতিসংঘের এ সংস্থার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার পাশাপাশি প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটিকে অধিকতর বৈধতা দেয়া ও দৃঢ় করতে তাদের সহায়তা চাইতে পারে বাংলাদেশ।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রত্যাবাসনের বিষয়ে যেসব প্রস্তুতির কথা তারা বলছেন সেটি বাংলাদেশের দিক থেকে নেয়া পদক্ষেপ। কিন্তু বিষয়টি এক পাক্ষিক নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক।

‘যারা প্রত্যাবাসিত হবেন তারা সেখানে গিয়ে কী অবস্থায় থাকবেন। প্রত্যাবাসনের পর তারা কেমন থাকবেন, তাদের নিরাপত্তা কতদূর থাকবে সেটাও আমাদের দেখতে হবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ এ কাজটা করবে। মিয়ানমারের দিক থেকেও তাদের প্রস্তুতির বিষয় আছে। উভয় দিক থেকে প্রস্তুতির বিষয়। তারা কিছু কাজ করেছে বলে জানিয়েছে। সেগুলোও দেখতে হবে আমাদের।’

তিনি বলেন, উভয় দিক পরিপূর্ণ প্রস্তুত হলেই প্রকৃত প্রত্যাবাসন শুরু হবে। আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটি কোন আটকে যাওয়ার বিষয় নয় বরং তার মতে প্রত্যাবাসন একটা প্রক্রিয়া হিসেবে দেখলে সেটি শুরু হয়েছে এবং অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি।

তিনি বলেন, ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করাটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিলো যার ভিত্তিতে সম্পূর্ণ প্রত্যাবাসন হবে। চুক্তিতে ছিল দু’মাসের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। ভেরিফিকেশন ফরমেটসহ অনেকগুলো বিষয় ঠিক হয়েছে। বিষয়টি অনেক দূর এগিয়েছে, তবে একটু সময় লাগবে।

‘অনেক কাজ আছে। যেমন ট্রানজিট ক্যাম্প তৈরি করতে হবে। ওখান থেকে প্রত্যাবাসন হবে। একইভাবে মিয়ানমারে ফেরার পর তাদের কোথায় রাখা হবে, গ্রামে নিয়ে যেতে পারবে কি-না, নিরাপত্তার বিষয় আছে, প্রত্যাবাসনের আগে ও পরে খাদ্য সরবরাহের বিষয় আছে। সার্বিক এসব প্রক্রিয়ার ব্যাপার, কিছুটা সময় লাগতে পারে।’

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test