E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

নার্সকে ধর্ষণের চেষ্টা

রানীশংকৈলে বিচার নিয়ে নাটকীয়তা, নিরাপত্তাহীনতায় ভুক্তভোগী 

২০১৮ জানুয়ারি ২৮ ১৫:০৩:০৮
রানীশংকৈলে বিচার নিয়ে নাটকীয়তা, নিরাপত্তাহীনতায় ভুক্তভোগী 

রানীশংকৈল (ঠাকুরগাও) প্রতিনিধি : ‘আমার বিচার কে করবে তাকে আমি দেখে নিবো। আমার এই বিষয় নিয়ে যদি কেউ বারাবারী করে তাহলে তাকেও দেখে নিবো। ওরা বুঝে না আমার ক্ষমতা কত! সিভিল সার্জন অফিসের বদলি ওর্ডার কিভাবে স্থগিত করলাম। সাবধান হয়ে যান যারা আমার বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন।’ 

এভাবেই হুংকার ও হুমকি দিয়ে কথা বলছেন ঠাকুরগাঁয়ের রানীশংকৈল হাসপাতালের এক নার্সকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠা উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার (স্যাকমো) হালিম। এ কথাগুলি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক সিনিয়র র্নাস।

অভিযুক্ত স্যাকমো হালিম ও তার স্ত্রী লুৎফন নেসা একই পদে একই হাসপাতালে এ কর্মরত রয়েছেন। অভিযুক্ত হালিমের বাড়ী জামালপুর জেলায় তার শুশুর বাড়ী হরিপুর উপজেলায়।

অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সাথেও সুযোগ পেলে ইতিমধ্যে এমন আচরণ করেছেন স্যাকমো হালিম।

এদিকে ভুক্তভোগী নার্সের পরিবারের অভিযোগ আমার মেয়েটি অবিবাহিত তাকে বিয়ে দিতে হবে। কেলেংকারী উঠবে ভেবে আমরাও বিষয়টি সেভাবে কোন ব্যবাস্থা নিতে পারছি না। যেহুতু হাসপাতালের বিষয় সে অনুযায়ী লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিলো সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বরাবর সঠিক বিচারের আশায়। অথচ কতৃপক্ষ নানান নাটকীয়তার মধ্যে বিষয়টি অজ্ঞাত কারনে ধামাচাপা দেওয়ার পায়তারা করছে। বর্তমানে আমার মেয়েটি নিরাপত্তহীনতায় ভুকছে। অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে আর বারাবারি করলে নার্সেও চাকরির সমস্যা সৃষ্টিসহ নানান প্রকার হুমকি দিয়ে আসছে অভিযুক্ত স্যাকমো হালিম। এমন আচরনের পরেও অভিযুক্তর বিরুদ্বে প্রশাসনিক কোন ব্যাবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাসপাতালের অন্য র্নাসরা।

নার্সকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঘটে হাসপাতালের ওয়ার্ড রুমে। জানা যায়, ৩১ ডিসেম্বর রাত অনুমান ১১ টায় রোগীদের যথারীতি দায়িত্ব পালনে ব্যাস্ত ছিলেন ঐ নার্স। ঘটনাক্রমে সেখানে হাজির হন (স্যাকমো) হালিম এমন সময় নার্সদের স্টাফ রুমে ঢুকে হালিম ঐ নার্সকে জোর করে ধর্ষনের ব্যার্থ চেষ্টা করেন। পরে ঐ নার্স হালিমকে ধাক্কা দিয়ে দ্রুত ছুটে অন্য নার্সদের সহায়তায় রক্ষা পান।

এ বিষয়টি নিয়ে পরের দিন ভুক্তভোগী র্নাস লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারের বরাবরে। বিষয়টি নিয়ে কযেক দফা বসা হয় এবং স্যাকমো হালিম প্রথমে সাদা কাগজে পরে নন-জুডিশিয়াল তিনশত টাকার স্ট্যাম্পে নিজের দোষ স্বীকার করে অঙ্গিকার দেয়। যা সংরক্ষিত রয়েছে আমাদের প্রতিবেদকের নিকট। পরবর্তীতে সিদ্বান্ত হয় স্যাকমো হালিম হাসপাতালের ক্যাম্পাসে আর পরিবার নিয়ে থাকতে পারবে না। ক্যাম্পাস ছাড়তে সময় দেওয়া হয় ৫ দিনের। এবং তাকে দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলার নেকমরদ উপস্বাস্থ্য কেন্দে স্থানতর করা হয়।

স্থানীয় হাসপাতাল কতৃপক্ষের সিদ্বান্ত-তো বাস্তবায়ন হয়নি। বরং পরবর্তীতে বিষয়টি ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডাঃ খায়রুল কবির খোকন অবগত হলে স্যাকমো হালিমকে হরিপুর উপজেলার কাঠালডাঙ্গী ইউপি-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্থানতর করে ২২ জানুয়ারি সিভিল সার্জন অফিসের ১৬৫/১(১২) স্মারকে আদেশ দেন। এর তিন দিন পর অজ্ঞাত কারণে ২৫ জানুয়ারি সে আদেশ স্থগিত করেন সিভিল সার্জন অফিসের ২১২/১(১০) নং স্মারকে। এমন নাটকীয়তায় বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুকছেন ভুক্তভোগী নার্স।

অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ আব্দুল্লাহেল মাফি ও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ ফিরোজ আলমের সহযোগিতায় এমন একটি ঘটনা ঘটিয়েও বহাল তবিয়তে থেকে এমন বেপোরয়া আচরন করেছেন অভিযুক্ত স্যাকমো হালিম।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার (স্যাকমো) হালিম এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল্লাহেল মাফি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। কারও যদি এমন সমাধান পছন্দ না হয় আমার কিছু করার নেই।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাও সিভিল সার্জন খায়রুল কবির খোকন গতকাল রবিবার মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি অমানবিক আমি শুনলাম এখন, মা বোন সকলের আছে। এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যাবে না। আমি ঢাকায় যাচ্ছি এসেই ব্যাবস্থা নিবো।

তিনি আরো বলেন, রানীশংকৈলের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সুপারিশেই তার বদলি আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

(কেএএস/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test