E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হুমকির মুখে মোগল আমলের পুরাকীর্তি রোয়াইলবাড়ি দূর্গ 

২০১৮ জানুয়ারি ২৯ ১৯:১৬:১৬
হুমকির মুখে মোগল আমলের পুরাকীর্তি রোয়াইলবাড়ি দূর্গ 

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোগল আমলের পুরাকীর্তি ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দূর্গ এখনও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারি ভাবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাধ্যমে ঐতিহাসিক এসব নির্দশন সংরক্ষণের জন্য মাঝে মধ্যে খনন কাজ শুরু হলেও মাঝ পথে আবার থেমে যায়। ফলে অযত্ন, অবহেলায় ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ঐতিহাসিক এই নিদর্শনটি আজ হুমকির মুখে পড়েছে।

এলাকাবাসীর দাবি, এই এলাকাটি একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে ওঠার প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তা হয়ে উটছে না। এতে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব আয় থেকে।

নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিম কোনে অবস্থিত তৎকালীন মোগলী আমলের প্রশাসনিক কেন্দ্র ঐতিহাসিক রোয়াইবাড়ি দূর্গ। কালের আর্বতে এই দূর্গটি হারিয়ে যায় মাটির নিচে। প্রায় দুই যুগ আগেপ্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খনন কাজ পরিচালনা করে দূর্গটির সন্ধান পায়। সে সময়ে মাটির ঢিবি খনন করে সন্ধান পায় মোগলী আমলের কারু কার্য সংবলিত ইট দিয়ে গড়া একটি বারো দুয়ারি মসজিদ এবং এর আশে পাশে প্রাসাদের চিহ্ন, একটি সুরঙ্গ পথ। সুরঙ্গের পাশেই একটি বট গাছের নিচে কথিত নিয়ামত বিবির মাজার এবং প্রায় ১২ হাত লম্বা ডেঙ্গু মালের কবরস্থান। কিন্তু অজানা কারণে কিছু দিনের মধ্যেই খনন কাজ বন্ধ করে দেয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।

এরপর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৯৮৭ সালে সরকারি ভাবে ঐতিহাসিক নিদর্শন রক্ষায় প্রায় ৫০ একর ভূমি পুরার্র্কীতি এলাকা হিসেবে ঘোষনা করে। সে সময়েপ্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর শুধু মাত্র একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়ে এলাটিকে একটি সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। তবে নির্মান করা হয়নি কোন বাউন্ডারী দেয়াল কিংবা নেই কোন কাঁটা তারের বেড়া। খনন করার সময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে, এখানে সেখানে পড়ে আছে পাথরের ও কাঁচের বিভিন্ন ফিলার। গত বছর নেত্রকোনার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগেপ্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর নতুন করে খনন কাজ শুরু করে আরও বেশ কিছু ঐতিহাসিক নির্দশন বারো দুয়ারি মসজিদের দক্ষিণ দিকে খুজে পায়। খুঁজে পায় দূর্গের ফটকের সন্ধান। খনন করে সংরক্ষিত বিভিন্ন কারু কারু কার্য সংবলিত ইট পাথরের অস্থায়ী প্রদর্শনী উপস্থাপন করা হয় সেখানে।

এই প্রদর্শনী ও খনন কাজ দেখতে পরিদর্শনে আসেনপ্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আলতাব হোসেন। তিনি পরিদর্শন কালে স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে এলাকাটিকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা দেয়ার আশ্বাস দিলেও খনন কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ১ বছরেরও আর কোন অগ্রগতি হয়নি।

ঐতিাহসিক রোয়াইলবাড়ী দূর্গ এলাকা দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা এখানে আসেন। কিন্তু সম্ভবনাময় এই পর্যটন এলাকাটিতে জেলা পরিষদের উদ্যোগে পাকা করে দুটি ছাতাকৃতি বিশ্রামাগার নির্মান করলেও এর আধুনিকায়নে আর কিছুই করা হয়নি। ফলে পর্যটকদের এখানে এসে পড়তে হয় ভিষণ বিড়ম্বনায়।

ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ী দূর্গ পূনরায় খনন কাজ ও পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণার বিষয়ে সোমবার মুঠোফোনে জানতে চাইলে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ড. মো: মুশফিকুর রহমান বলেন, যদি অধিদপ্তর মন্ত্রণালয় থেকে খনন কাজের জন্য আবারও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পায় সেক্ষেত্রে খনন কাজ শুরু যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে।

এছাড়া পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষনার বিষয়টি সরকার ও মন্ত্রণায়ের এখতিয়ার ভুক্ত, তবে জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখছে।


(এসবি/এসপি/জানুয়ারি ২৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test