E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হালুয়াঘাটে প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় গ্রামে গ্রামে মাদকের আগ্রাসন

২০১৮ জানুয়ারি ২৯ ১৯:২৮:০৫
হালুয়াঘাটে প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় গ্রামে গ্রামে মাদকের আগ্রাসন

জোটন চন্দ্র ঘোষ, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহ জেলার সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা সিমান্ত পাদদেশ হালুয়াঘাট, উপজেলাটি ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নেই মদ, গাজা, হিরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকারের নেশাজাতীয় দ্রব্য অনায়াসেই পাওয়া যাচ্ছে। মাদকের আগ্রাসনে উপজেলাবাসী ভীত, আতঙ্কিত ও উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েছে। 

জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের আটক করতে থানা পুলিশের রয়েছে অনিহা। ফলে মাদক ব্যবসায়ীদের রয়েছে বিশেষ তৎপরতা। হাতের নাগালেই মিলছে মাদক। সম্প্রতি জেলা গোয়েদা পুলিশের এসআই ওমর ফারুক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হালুয়াঘাট উপজেলার হালুয়াঘাট-নালতাবাড়ী সড়কের মাদানীনগর নামক স্থান থেকে ২ শত গ্রাম হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ী ফারুক খান ওরফে ডাইল ফারুককে আটক করেন। এবং পৃথক স্থান থেকে ইয়াবা ও হেরোইনসহ রশিদ ও কালু নামক মাদক ব্যববসায়ীকে আটক করেন ডিবি পুলিশ।

ভূবনকুড়া ইউনিয়নের তেলীখালী গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী শফিকুল ও আঁচকিপাড়া গ্রামের আমির উদ্দিনকে ফুলপুরের ঠাকুরবাখাই বাসস্টেন্ড এলাকা থেকে মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের সময় ২৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ এবং ১২ বোতল ভারতীয় মদসহ ডুমনিকুড়া গ্রামের উপজাতি সম্প্রদায়ের আপোস রিছিলের পুত্র মিকাইল রিছিল শিপন নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে ফুলপুর বাসস্ট্যান্ডে থেকে আটক করেন ফুলপুর থানা পুলিশ। জানুয়ারি মাসে অত্র থানায় মাদক নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা রুজু হয়েছে ৪ টি।

সীমান্ত এলাকায় কিছু চি‎িহ্নত স্পট দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এ সমস্ত নেশা জাতীয় মাদক দ্রব্য অত্র উপজেলায় প্রবেশ করে। তেলিখালী, ধনভাঙ্গা, মহিষলেঠি, কোচপাড়া, বানাইচিড়িংগীপাড়া,কড়াইতলী, গোবরাকুড়া, আইলাতলী, কাটাবাড়ী,সূর্যপুর, শিমুলকুচী, ডাকিয়াপাড়া ও বান্দরকাটা তন্মধ্য অন্যতম স্পট।

সম্প্রতি মদ্যপান করতে যেয়ে নিহত হয়েছেন চান মিয়া নামক এক যুবক। মদ্যপান করতে যেয়ে নিখোঁজের ৩ দিন পর দক্ষিণ মনিকুড়া গ্রামের মৃত খুরশেদ আলীর পুত্র চান মিয়ার লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান এ সমস্ত নেশা জাতীয় মাদক দ্রব্য সহজলভ্য হওয়াই মধ্য বয়স্ক থেকে শুরু করে স্কুল/ কলেজ, ছাত্র/ছাত্রী, কিশোর-তরুণেরা এ মরণ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট তৎপরতা না থাকায় গ্রামে গ্রামে মহল্লায় মহল্লায়, অলিতে গলিতে প্রতিনিয়তই জমজমাট মাদকের ব্যবসা বেড়েই চলছে। যার ফলে মাদকসেবীর সংখ্যা প্রতিনিয়তই অত্র উপজেলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি বৃদ্ধি পাচ্ছে খুন,ধর্ষণ,ছিনতাইসহ বিভন্নি প্রকারের অপরাধ। প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫টি রেজিঃবিহীন মটর সাইকেল নিয়ে কিছু চি‎িহ্নত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী সিমান্ত রাস্তা ধাবিয়ে বেড়াচ্ছে এবং প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে মুঠো ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে নির্ধারিত স্থানে মাদক দ্রব্য পৌছে দিচ্ছেন।

স্থানীয়রা আরো জানায়, ২-৪ জন মাদক ব্যবসায়ীকে থানা পুলিশ ধরলেও অধিকাংশই থেকে যাচ্ছে লোক চক্ষুর অন্তরালে। স্থানীয়রা হালুয়াঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর পিপিএম এর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন মনে করেন। পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের জোরালো অভিযানের আহব্বান জানান।

একজন মাদক ব্যবসায়ী একজন অস্ত্রধারীর চেয়েও জঘন্যতম খারাপ। একজন অস্ত্রধারী দুই-চারজন কে খুন খারপী করতে পারে, কিন্তু একজন মাদক ব্যবসায়ী গোটা জাতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাচিয়ে রাখার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোরালো দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

হালুয়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের আটক করতে থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(জেসিজি/এসপি/জানুয়ারি ২৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test