E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

স্থলবন্দর ঘোষণার ৫ বছর

কড়ইতলী-গোবরাকুড়া ব্যবসা পর্যটন শিল্পে অপার সম্ভাবনা

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ০৫ ১৫:৫১:৫২
কড়ইতলী-গোবরাকুড়া ব্যবসা পর্যটন শিল্পে অপার সম্ভাবনা

জোটন চন্দ্র ঘোষ, হলুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) : হালুয়াঘাটের  কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া ব্যবসা ও পর্যটন শিল্পে অপার সম্ভাবনা। উপজেলার কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া স্থলবন্দর কে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর ঘোষণার ৫ বৎসর অতিবাহিত। প্রায় শতকোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ব্যহত হচ্ছে কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া স্থলবন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রম। 

জানা যায়, গত ২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে দুটি স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর ঘোষণার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলে ছিলেন, ২৫ একর জমি অধিগ্রহন, বিদ্যুৎ সংযোগ,ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট স্থাপন, ল্যান্ড কাস্টমস অফিসের অবকাঠামোসহ সেডঘর নির্মাণ, গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী সংযোগ সড়ক নির্মাণ, হালুয়াঘাট বাজার থেকে কড়ইতলী জিরো পয়েন্ট পযর্ন্ত রাস্তা প্র্রশস্ত করণের প্রতিশ্র“তি দেন। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি গোবরাকুড়া কড়ইতলী বিদ্যুায়িত হয়েছে এবং দুটি স্থলবন্দরের সংযোগ সড়কের ১.৫০ কিলোমিটার রাস্তার মাটি কাটার কাজ হয়েছে। বাকি কাজ গুলো এই সরকারের আমলে বাস্তবায়নের কোন সমূহ সম্ভাবনা দেখছেন না বলে জানান কয়লা আমদাীনকারক সমিতির সদস্যরা।

এ বিষয়ে কড়ইতলী কোল এন্ড কোক ইম্পোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম সুরুজ মিয়া জানান, ১৯৮৯ সালে কড়ইতলী স্থলবন্দর দিয়ে সর্বপ্রথম কয়লা আমদানী শুরু হয় অত্র উপজেলায়। ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় ৩ একর ভূমির উপর সম্প্রতি স্থাপন করেন নান্দনিক কড়ইতলী পিকনিক স্পট। স্থলবন্দর দিয়ে প্রতি বছর কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও বন্দরের উন্নয়নকল্পে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেনা। স্থলবন্দর উন্নয়নের ইমিগ্রেশন চেক পোষ্ট স্থাপন এর মাধ্যমে সারা বছর এলসি স্টেশন চালু রেখে বিভিন্ন পণ্য আমদানি রপ্তানি করতে স্থলবন্দর কতৃপক্ষ এন, বি, আর, এর নিকট লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

অপরদিকে ১৯৯৭ সালের পহেলা জানুয়ারীতে গোবরাকুড়া স্থলবন্দরটি স্থাপিত হয়। দুটি স্থলবন্দরে জন্য বাইপাস সড়ক অতিব জরুরী। হালুয়াঘাট বাজারের রাস্তার আয়তন প্রশস্ত না থাকায় কয়লা বাহী ট্রাক আসা যাওয়ার কারনে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগে পোহাতে হয় সাধারন জনগন ও স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের। দুটি স্থল বন্দরে প্রায় ৮ হাজার শ্রমিকের কর্ম সংস্থান রয়েছে, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপির দেওয়া প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়ন হলে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে। বন্দরের চাহিদা স্বরূপ উন্নয়ন হলে দুটি বন্দর দিয়ে কয়লা আমদানির পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য সামগ্রী আমদানী করা সম্ভব হবে । পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর রূপ কবে নাগাদ হবে, সেই আশার অপেক্ষায় উপজেলাবাসী।

হালুয়াঘাট আমদানি রপ্তানি কারক গ্রুপের মহাসচিব আলহাজ্ব আলী আজগর বলেন, সর্বপুরি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন যেমন হালুয়াঘাট থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত চার লাইন সড়ক নির্মাণ তা না হলে কমপক্ষে দুই লাইন সড়ক স্থাপন, স্থলবন্দর এলাকায় বাইপাস রাস্তা নির্মাণ, ব্যাংকের শাখা স্থাপন, ইমিগ্রেশান স্থাপনের জন্য প্রয়োজনে সরকারি জমি না পাওয়া গেলে আমদানি রপ্তানি কারক গ্রুপের পক্ষ থেকে জমি ক্রয় করে দিবেন। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের যে সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদ হয়েছে সে সমস্ত প্রকল্প টেন্ডারের মাধ্যমে দ্রুত বাস্তবায়ন করা। ল্যান্ড ফোন প্রদান করা, কয়লা পাথরসহ অনান্য সকল পর্ণ্য আমদানি করতে সুযোগ দিতে হবে। তাহলে এই স্থলবন্দর থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব আদায় হতে পারে। গত অর্থ বছরে প্রায় ১শত কোটি টাকা উক্ত স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে । আমদানি রপ্তানি কারক গ্রুপে পাঁচশতাধিক আমদানি কারক ও প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক রয়েছে বলে জানান।

এ বিষয়ে কাস্টমস্ কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ’র মুঠো ফোনে স্থল বন্দরের সমস্যা ও রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তার স্ত্রী হাসিনা আক্তার জানায়, তার স্বামী কাস্টমস্ কর্মকর্তা গত চার দিন পূর্বে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বারিধারার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি তার স্বামীর সুস্থ্যতার জন্য সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, ময়মনসিংহের সিমান্ত উপজেলা হালুয়াঘাট সিমান্ত এলাকায় ২৮ কিলোমিটার ও ধোবাউড়া সিমান্ত এলাকায় ১৬ কিলোমিটার রাস্তার পাকা করণ কাজ চলমান রয়েছে পাশাপাশি ৪ টি ব্রীজের কাজ করা হচ্ছে। স্থলবন্দরটি উন্নয়নে ভারতের শিলংয়ে জেলা প্রশাসক ও ডিএম পর্যায়ে তাদের উপস্থিতিতে মিটিং এর সিদ্ধান্ত রয়েছে ।

উক্ত মিটিংয়ে উভয় দেশের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্ধসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন। সম্প্রতি প্রায় ২ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ২টি ভবন নির্মাণ কাজের উদ্ভোধন করা হবে। স্থলবন্দরটির উন্নয়নে মন্ত্রনালয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন বলে জানান।

(জেসিজি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test