E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক উধাও

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ০৬ ১৮:৪৩:২০
গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক উধাও

বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ায় শিবগঞ্জ উপজেলার রূপালী ব্যাংক মহাস্থানগড় শাখায় গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে শাখা ব্যবস্থাপক জোবায়নুর রহমান নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানাজানি হবার পর মঙ্গলবার থেকে শতশত গ্রাহক ব্যাংকে এসে ভিড় জমাচ্ছেন তাদের হিসাব বিবরণ জানতে।

এদিকে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে চার সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, এমএমজি তোফায়েল আহমেদ, সুলতান মাহমুদ, শাহীন মাহমুদ ও চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। শাখা ব্যবস্থাপক নিখোঁজ হবার ঘটনায় রুপালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আব্দুল মজিদ মণ্ডল বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জানা গেছে, ২০০০ সালের দিকে পুন্ড নগরের রাজধানী শিবগঞ্জের মহাস্থানগড়ের রুপালী ব্যাংকের শাখাটি চালু হয়। এখন তাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় নয় হাজার। মহাস্থানের সবজির হাটের কারণে এ ব্যাংকে প্রচুর লেনদেন হয়। আর এ সুযোগে শাখা ব্যবস্থাপক জোবায়নুর রহমান বেশ কিছু গ্রাহকের হিসাবে গড়মিল করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তখন বেশকয়েকজন গ্রাহক বগুড়া অঞ্চলের রুপালী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে ঘটনাটি তদন্তের জন্য রাজশাহী বিভাগীয় চার সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে বগুড়ায় পাঠানো হয়।

সোমবার সেই তদন্ত কমিটি ব্যাংকে এসে তদন্ত করেন। এসময় ব্যবস্থাপক জোবায়েনুর রহমান স্বরন ব্যাংকে আসলেও বেলা এগারোটা ৪০ মিনিটে ব্যাংকের পাশে চা পান করার কথা বলে বেরিয়ে যান। এরপর আর তিনি ব্যাংকে ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জোবায়েনুর সোনাতলা উপজেলার আগুনের তাইর গ্রামের মনতেজার রহমানের ছেলে। তবে তিনি স্ব-স্ত্রীক বগুড়া শহরের নামাজগড় এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।

মঙ্গলবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তদন্ত টিম মহাস্থান শাখায় কাজ করছিলেন। তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে টিমের প্রধান এমএমজি তোফায়েল বলেন, প্রতিটি হিসাব যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। কোন গ্রাহকের কত টাকা হিসাবে ঘাটতি রয়েছে তা যাচাইয়ের মাধ্যমে জানা যাবে। তদন্ত শেষ না হলে কিছু বলা যাবেনা।

মহাস্থান মাজার কমিটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহেদুর রহমান জানান, মহাস্থান মাজার কমিটির নামে ব্যাংকে রক্ষিত চলতি হিসাব থেকে প্রায় ৮৪ লাখ টাকার গড়মিল ধরা পড়েছে। এছাড়াও নাসির কটকটি ভাণ্ডারের নামে রক্ষিত এফডিআর এর বিপরীতে ভুয়া ঋণ বানিয়ে প্রায় ৬৫ লাখ টাকা, ঠিকাদার জাহিদুর রহমানের প্রায় এক কোটি টাকা, আলহাজ আজমল হোসেনের প্রায় ৫০ লাখ টাকাসহ প্রায় ১৫ জনের নামে ভুয়া ঋণ সৃষ্টি করে কয়েক কোটি টাকার গড়মিল করা হয়েছে।

এছাড়াও মহাস্থান এলাকার মেসার্স মুক্তি ফল ও বীজ ভাণ্ডার এর প্রোপাইটার রহেদুল ইসলাম জানান, তার ব্যাংক হিসাবে ১৫ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকার সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। আমার মতো অনেক ব্যবসায়ী ও আমানতকারীদের অবস্থাও একই রকম।

রুপালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, বিভিন্ন হিসাবে কিছু গড়মিল পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাজশাহী ডিভিশনাল অফিস থেকে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে।

রুপালী ব্যাংকের বগুড়া অঞ্চলের ডিজিএম সরদার হাবিবুর রহমান জানান, এ বিষয়ে তদন্ত টিম কাজ করছেন। তদন্ত শেষে সব কিছু বলা সম্ভব হবে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, জিডির সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। নিখোঁজ জোবায়নুর রহমানকে খোঁজা হচ্ছে।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test