E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জনবল সংকট 

পাকশী রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ব্যহত

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ০৯ ১৫:২১:৪০
পাকশী রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ব্যহত

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : জনবল সংকট, প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত সরঞ্জামাদির অভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বৃহত্তম পাকশী বিভাগীয় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতাটিই অসুস্থ থাকার কারণে রেল কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারবর্গ প্রাপ্য চিকিৎসা সেবা হতে তাঁরা বঞ্চিত।

হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে প্রায় ২৫ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে এখানকার অপারেশন থিয়েচার। ৪৪ বেডের হাসপাতালটিতে ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদে ৫৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৩৭ জন কর্মরত রয়েছেন। যে কারণে একই ব্যাক্তিকে পালন হচ্ছে ২-৩টি পদের দায়িত্ব। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের এই হাসপাতালটিতে খুলনা হতে সান্তাহার এবং জয়দেবপুর থেকে রাজবাড়ি পর্যন্ত এলাকার রেলওয়েতে চাকুরিজীবিদের এখানে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের ব্যকস্থা রয়েছে।

অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) এর মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি অলাভজনক এবং প্রায় বন্ধ প্রতিষ্ঠান চালু করে লাভজনক অবস্থায় পৌঁচেছে। এই প্রক্রিয়া পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় এই হাসপাতালটিকে চালুর ব্যবস্থা করা হলে নতুন উদ্যোমে হাসপাতালের দ্রুত উন্নতি সাধনের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে একদিকে যেমন রাজস্ব আয় বাড়বে, তেমনি, রেল কর্মকর্তা—কর্মচারীরা সহজেই সুষ্ঠু চিকিৎসা সেবা প্রাপ্ত হবেন। পাশাপাশি এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা ভোগ করার সুযোগ পাবেন।

পাকশী বিভাগীয় রেল কার্যালয় নথি হতে জানা যায়, ১৯৬৮ সালে তিন একর জায়গার উপর নির্মিত হয় পশ্চিমাঞ্চল রেলের পাকশী বিভাগীয় হাসপাতাল। পদ্মা নদীর তীরে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠা এই হাসপাতালটিতে বর্তমানে চিকিৎসা সেবা পাওয়া তো দূরের কথা, হাসপাতালটি নিজেই বিভিন্ন সমস্যায় রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে হাসপাতালের ছাদ দিয়ে অঝড়ে পানি পড়লে স্যাঁত স্যাঁতে অবস্থা বিরাজ করে। ফলে সাধারণ রোগীদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে হয়।

বর্তমানে এখানে প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১২০ জন রোগী ইনডোর এবং আউটডোরে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছেনা সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন রেলওয়ের হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ হয় দীর্ঘদিন।

সূত্র জানায়, রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন স্কেল বেশি হওয়ায় এখানে রোগীদের আর খাবার পরিবেশন করা হয়না। হাসপাতালের আশে পাশে কোন দোকানপাট না থাকায় খাবার কিনে খাওয়ারও উপায় নেই। যেকারণে এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে অনেকেই এখন অনিহা প্রকাশ করেন।

হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, এই পদে থাকার কথা ৩ জন। রয়েছে মাত্র ২ জন। তিনি একাই পালন করছেন দুটি দায়িত্ব। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে ৫ জন এমবিবিএস ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ১ জন।

প্রধান সহকারী কাজী হারুন অর রশিদ জানান, পোশাক এবং খাবার সঠিকভাবে সরবরাহ ও বরাদ্দ হচ্ছে কিনা তিনি তা দেখভাল করেন। হাসপাতালে উচ্চমান সহকারী পদ থাকলেও দায়িত্বে এখন কেউ নেই। হাসপাতালে ষ্টেনো পদ থাকলেও বর্তমানে তাও শূন্য রয়েছে। হাসপাতালে নার্সের পদ রয়েছে ৬ জন । কর্তব্যরত আছেন মাত্র ৩ জন। হাসপাতালের ক্লিনারের ৬টি পদ থাকলেও কর্মরত আছে ৩ জন।

হাসপাতালের দায়িত্বরত বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার সুজিত কুমার রায় জানান, জনবল স্বল্পতার কারণে চরম বেকায়দায় রয়েছি। তিনি একাই বেশ কয়েকটি দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আরও জানান, বর্তমানে রেলওয়েতে চলছে চরম লোকবল সংকট। এই হাসপাতালে আরো চারজন ডাক্তার থাকার কথা, কিন্তু তা নেই।

এ ব্যাপারে পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার (ডিআরএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, হাসপাতালে নতুন ডাক্তার আসেন সময় কাটানোর জন্য। কিছু দিন অতিবাহিত হলেই তারা রেল থেকে বাইরের অন্য ক্যাডারে চলে যান। সেই কারণেই চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। লোকবলের সংকট এবং চাহিদার কথা জানিয়ে আমরা রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি। নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু হলেই হাসপাতালের শূন্য পদ পূরণ হবে বলে তিনি আশা পোষণ করেছেন।

(এসকেকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test