E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গাইবান্ধা ৩ : নিজেদের বিজয় দেখতে চায় বিএনপি

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ১১ ১৫:৫৫:৪১
গাইবান্ধা ৩ : নিজেদের বিজয় দেখতে চায় বিএনপি

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে বিএনপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ-জাপাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সাংগঠনিক ও জনসংযোগ তৎপরতা চালাচ্ছেন। তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্যসহ আছেন অন্তত এক ডজন প্রার্থী। বিএনপির একক প্রার্থী অধ্যাপক ডাঃ ময়নুল হাসান সাদিক।

১৯৮৬ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত একটানা ৩০ বছর আসনটি ধরে রেখেছিলেন জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরী। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যাওয়া-না ওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে জাপা ভেঙে গেলে তিনি কাজী জাফরের নেতৃত্বাধীন অংশে যোগ দেন। ফলে দশম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি প্রার্থী না দেয়ায় আসনটি হাতছাড়া হয়ে যায় তাদের। ওই নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন-প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সভাপতি ও শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিক। খ্যাতনামা এই চিকিৎসক সম্প্রতি গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে জেলার উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। সেখানে তিনি বিএনপির মনোনয়নে একক প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তার মনোভাব ব্যক্ত করেন।

বিএনপি সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মইনুল হাসান বলেন, দলীয় চেয়ারপারসন তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি এলাকার জনগণের সমর্থন নিয়ে বিজয়ী হবেন এ বিশ্বাস তার রয়েছে। তিনি কুড়ি বছরের বেশি সময় ধরে এলাকায় উন্নয়ন পরিষদ ব্যানারে মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। দীর্ঘদিন ধরে দলমত নির্বিশেষে সেবামূলক কর্মকান্ডে অংশ নেয়ার জন্য এলাকায় তার বিপুল জনসমর্থন রয়েছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে টকশো টিভি লাইফ নির্বাচনী হাওয়ায় অংশ নিয়ে বিএনপির হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন

জাপার চেয়ারম্যান এরশাদ এ আসনে তার দলের তরুণ প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার শিল্পীকে একাধিক কর্মী সম্মেলনে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার কথা ঘোষণা করেন। এর পর থেকে দিলারা খন্দকার মাঠে-ময়দানে চষে বেড়াচ্ছেন। জনসংযোগের পাশাপাশি অংশ নিচ্ছেন কর্মী বৈঠকে। নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে প্রচারণায় মাঠ গরম করে তুলেছেন তিনি। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের টক শোতে অংশ নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে তৈরি করেছেন আকর্ষণ।

এদিকে আওয়ামী লীগ এই আসনে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। মনোনয়ন-প্রত্যাশীর সংখ্যাও তাই অনেক বেশি দুই উপজেলার ২০ ইউনিয়ন (সাদুল্যাপুরে ১১ ও পলাশবাড়ী ৯) নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৩ আসনে। সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সাংসদ ডা. ইউনুস আলী সরকার এবং পলাশবাড়ীর বাসিন্দা সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি উম্মে কুলছুম স্মৃতি ছাড়াও এক ডজনের বেশি সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে মনোনয়ন-প্রত্যাশী অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর প্রধান, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ, ঢাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. শাহ মো. ইয়াকুব উল আজাদ, দলের উপজেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গাইবান্ধা জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার প্রধান বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ কবীর সুমন, সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদাক শাহরিয়ার খান বিপ্লব, সাদুল্যাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য এম এ ওয়াহেদ মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আজিজার রহমান বিএসসি ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম।

পলাশবাড়ী ও সাদুল্যাপুর উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের বর্ণনা দিয়ে সাংসদ ইউনুস আলী সরকার বলেন, পরিচ্ছন্ন রাজনীতি এবং উন্নয়ন কর্মকান্ডে বিশ্বাসী তিনি। বঙ্গবন্ধু-কন্যা তার কর্ম তৎপরতায় সন্তুষ্ট হয়ে থাকলে নিশ্চয়ই তিনি মনোনয়নের বিষয়টি দেখবেন বলে আশা করেন ইউনুস আলী।

মনোনয়ন-প্রত্যাশী মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি এলাকার উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করবেন। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করবেন।

অন্য দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতাসীন জোটের শরিক জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সাদুল্যাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদি দলের মনোনয়ন চাইবেন। তিনি বলেন, মহাজোটের শরিক হিসেবে তিনি ১৪ দলের প্রার্থিতা চাইবেন।

টানা ৩০ বছর যে আসন নিজেদের দখলে ছিল সেটি এবার ফেরত পেতে চায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি (জাপা)। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবার আর আসনটি ছাড় দিতে নারাজ তারা। ইতিমধ্যে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে জনসংযোগে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

(এসআইআর/এসপি/ফেব্রয়ারি ১১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test