E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে নিরাপত্তাহীনতায় মুক্তিযোদ্ধার পরিবার

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ১৪ ১৫:৪৬:০৬
বরিশালে নিরাপত্তাহীনতায় মুক্তিযোদ্ধার পরিবার

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : দুই বখাটের অনৈতিক কর্মকান্ড দেখে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পুত্রকে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানা পুলিশ দায়সারাভাবে তদন্ত ও ঘাতকরা ঘটনার পরপরই দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমানোর কারণে পুত্র হত্যার বিচার পায়নি একাত্তরের রণাঙ্গন কাঁপানো গেরিলাযোদ্ধা জেলার গৌরনদী উপজেলার পূর্ব শরিফাবাদ গ্রামের হারুন-অর রশিদের পরিবার। এ ঘটনায় ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার সকালে নিহতের স্ত্রী আইরিন আক্তার দিশা’র লিখিত অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী ইমরান হোসেন লালনকে ২০১৭ সালের ৫ মার্চ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায় একই গ্রামের রাধেশ্যাম বিশ্বাসের পুত্র তপন বিশ্বাস ও লাল মিয়া হাওলাদারের বখাটে পুত্র জসিম হাওলাদার।

তিনি আরও বলেন, লালনকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার দীর্ঘক্ষন পরেও তার (লালন) কোন সন্ধান না পাওয়ায় জসিম ও তপনের কাছে লালনের খোঁজ করতে গেলে তারা নানা তালবাহানা শুরু করে। এতে তাদের (নিহতের পরিবারের) সন্দেহ হয়।

এরপর বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজির পর তপন বিশ্বাসের মাছের ঘেরের পাশের ধান ক্ষেত থেকে বৈদ্যুতিক তারে জড়ানো অবস্থায় লালনকে উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষনিক তাকে (লালন) গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা লালনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে দিশা আরও জানান, লালনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অভিযোগ এনে তপন বিশ্বাস ও জসিম হাওলাদারের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ লালনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। ঘটনার পরপরই ঘাতক জসিম দেশ থেকে পালিয়ে সৌদিতে ও তপন বিশ্বাস পালিয়ে ভারতে চলে যায়। ফলে ঘাতকদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এরইমধ্যে থানা পুলিশ দায়সারাভাবে লিখিত অভিযোগের তদন্ত করেন।

পুরো ঘটনার বর্ননা করে দিশা আরও বলেন, তপন বিশ্বাসের মাছের ঘেরের জন্য বিদ্যুতের সাইড লাইন নেয়া হয় ঢাকায় অবস্থানরত লালনের চাচা সেকান্দার হাওলাদারের ঘর থেকে। সেই সাইড লাইন থেকে ঘাতক তপন তার মাছের ঘেরে বিদ্যুত সংযোগ নেয়। এমনকি তারা (তপন ও জসিম) ওই ঘেরে বসে নিয়মিত মাদক সেবন করতো।

দিশা অভিযোগ করে বলেন, জসিম ও তপনের অবৈধ কর্মকান্ড আমার স্বামী (লালন) দেখে ফেলায় সুপরিকল্পিতভাবে তারা বিদ্যুতের শক দিয়ে লালনকে মেরে ফেলেছে। পরিকল্পিত হত্যাকান্ডকে বিদ্যুতের শক বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ করে দিশা আরও জানান, ঘাতক জসিম হাওলাদার অতিসম্প্রতি দেশে এসে থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। ফলে স্বামী হত্যার বিচার না পেয়েও এখন নিজেদের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। ঘাতকদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবীতে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

(টিবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test