E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরে মাছের উৎপাদন বেশী হলেও বাজারে আগুন

২০১৪ জুলাই ০৬ ১৬:৩৮:৩৮
নাটোরে মাছের উৎপাদন বেশী হলেও বাজারে আগুন

নাটোর প্রতিনিধি : চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরে চাহিদার তুলনায় মাছের উৎপাদন বেশী হলেও বাজারে মাছের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাহিরে। ফলে বেশী দামেই ক্রেতারা মাছ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

আবার বেশি দাম দিয়েও চাহিদানুযায়ী ভাল মাছ মিলছেনা। উৎপাদিত বেশীর ভাগ মাছ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাওয়ায় স্থানীয় ভোক্তাদের বেশী দামে মাছ কিনতে হয়।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, নাটোর জেলায় ১৭ লাখ ৬ হাজার ৬৭৩ জন মানুষের জন্য মোট মাছের চাহিদা ৩২ হাজার ৪৪২ মেট্রিক টন। উৎপাদন হচ্ছে ৩৮ হাজার ১১৩ মেট্রিক টন। বছরে প্রায় ৫ হাজার ৬৭১ মেট্রিক টন মাছ উদ্বৃত্ত উৎপাদন হচ্ছে। মাছ চাষ ও উৎপাদনের জন্য জেলার সাত উপজেলায় ছোট-বড় মিলে ২০ হাজার ৯৬৯টি পুকুর, ১৭টি বিল, ৩৬টি খাল, ৮৯টি প্লাবন ভুমি, ৩০টি অভয়াশ্রম, ৪৪৮টি বেসরকারী বানিজ্যিক ছোট খামার, ১৬৮টি মাঝারী খামার এবং ৭৫টি বড় খামার রয়েছে। জেলায় মোট মাছ চাষীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৮ জন ও মোট মৎস্যজীবির সংখ্যা ৩০ হাজার ৫২৭ জন। জেলায় মৎস্যজীবি সমিতির সংখ্যা রয়েছে ২০০টি।

জেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি বোয়াল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, আইড় ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাবদা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, শিং ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকা, চিতল সাড়ে ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে চাষের কৈ মাছ ২২০ থেকে ৩৮০ টাকা, রুই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতলা ২৫০ থেকে ৪৪০ টাকা, পাঙ্গাশ ৯০ থেকে ১২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৭৫ টাকা, দেশী পুঁটি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, টাকি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ও শৈল মাছ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত পাঁচ বছরে জেলায় মাছের চাহিদা ও উৎপাদন সন্তষজনক হারে বেড়েছে। ২০১০ সালে মাছ উৎপাদন হয়েছে ৩২ হাজার ৪ মেট্রিক টন, ২০১১ সালে ৩৩ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন, ২০১২ সালে ৩৬ হাজার ২৫ মেট্রিক টন এবং ২০১৩ সালে তা বেড়ে ৩৬ হাজার ৫৯৫ মেট্রিক টনে দাঁড়ায়। চলতি বছরে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয় ৩৭ হাজার ৬৫৬ মেট্রিক টন। অর্জিত হয়েছে ৩৮ হাজার ১১৩ মেট্রিক টন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান, নাটোর জেলায় এবার প্রায় ১২৫ কোটি টাকার মাছ উৎপাদন হয়েছে। এখানে উৎপাদিত মাছ দেশের মৎস্য সেক্টরে বিশেষ ভুমিকা রাখছে। এর মধ্যে জাতীয় জিডিপিতে শতকরা ৪ দশমিক ৩৭ ভাগ, কৃষি জিডিপিতে শতকরা ২৩ দশমিক ৩৭ ভাগ, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে শতকরা ২ দশমিক ০১ ভাগ, জাতীয় প্রাণীজ আমিষের ক্ষেত্রে শতকরা ৬০ ভাগ এবং পল্ল­ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচনে মৎস্য সেক্টর মোট জনসংখ্যার শতকরা ১০ ভাগ এবং মৎস্য খাতে গড় প্রবৃদ্ধি ৫দশমিক ৮৮ ভাগ।

তিনি বলেন, জেলায় উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাত উপজেলায় মোট ৩০টি অভয়াশ্রম স্থাপন করা হয়েছে। প্রকৃত মৎস্য চাষীদের মাঝে সহজ শর্তে ঋন ও আইডি কার্ড বিতরণ, পোনা অবমুক্তকরন, জাল বিনিময় কর্মসূচি ও মৎস্য প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে।

(এমআর/এটিঅার/জুলাই ০৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test