E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

দুই মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে মানববন্ধন

২০১৮ এপ্রিল ০১ ১৬:০৭:২৬
দুই মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে মানববন্ধন

জামালপুর প্রতিনিধি : বাংলার চিরায়ত স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন সোয়া ৩’শ বছরের পুরনো শ্রী শ্রীঁরী দয়াময়ী ও রাধামোহন জিউ মন্দিরে দেবোত্তর সম্পত্তি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে রোববার সকাল ১০টায় শহরের দয়াময়ী মোড়ে মানববন্ধন পালন করেছে মন্দির পরিচালনা কমিটি। দু ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে সারা জেলা থেকে আগত সানাতন ধর্মাবলম্বী কয়েক হাজার নারী পুরুষ এই মানববন্ধনে অংশ নেয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, দয়াময়ী মন্দিরের সভাপতি গোপাল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক অপু দত্ত, রাধামোহন জিউ মন্দিরের সভাপতি বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ শংকর রায়, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবু রমেন বণিক, মেলান্দহ পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কবি ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ মুকুল, মন্দিরের পুরোহিত বিপুল কাঞ্জি লাল, সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতা মনিকা চক্রবর্তী, লক্ষ্মী কান্ত প-িত, প্রদীপ কুমার সোম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সাংস্কৃতিক পল্লী নির্মাণের নামে সোয়া ৩ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মন্দির ও ১২১ বছরের পুরনো রাধামোহন জিউ মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি অধিগ্রহণের অপচেষ্টা করছে জেলা প্রশাসন। বাংলার নবাব মুর্শিদকুলির খাঁর শাসনামলে ১৪’শ ৪ বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মন্দির ও মার্কেট ভেঙে ফেলা থেকে বিরত থাকার আহবান জানান সরকারের প্রতি। অন্যাথায় বৃহত্তর আন্দোলনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বক্তারা।

মানববন্ধন শেষে দুপুর ১২টায় দয়াময়ী মন্দির প্রাঙ্গনে এক সংবাদ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জিউ মন্দির সভাপতি বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন, দয়াময়ী মন্দির ও রাধামোহন জিউ মন্দিরের আয়ের উৎস বাণিজ্যিক ভবন দুটি ভাঙার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। মন্দির, উপসানালয়, কবরস্থান, শ্মশাণ ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি অধিগ্রহণের নীতিমালা না থাকলেও জামালপুর শহরের নগর স্থাপত্যের পুনঃসংস্কার ও সাস্কৃতিক কেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্পের নামে এই অধিগ্রহণের অপচেষ্টা চলছে।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১১ ফেব্রুয়ারির জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভায় দয়াময়ী মন্দির ও রাধামোহন জিউ মন্দিরের ১৩ দশমিক ৫০ শতক জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেখানে ভুল তথ্য পরিবেশ করে বলা হয়, প্রস্তাবিত জমিতে কোনো ধর্মীয় উপসনালয়, কবরস্থান, শ্মশাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই।

এছাড়া আরও বলা হয়, ২০১৬ সালের ৩১ জুলাই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব জামালপুর জেলা প্রশাসকের কাছে এক পত্রে (স্মারক৪৩.০০.০০০০.১১৪.০১৬.১৫-৬০) প্রস্তাবিত সাংস্কৃতিক পল্লী নির্মাণের নামে দয়াময়ী মন্দিরের পুরোহিত-কর্মচারীদের বাসস্থান, দুই মন্দিরের বাণিজ্যিক ভবন, বিভিন্ন স্থাপনা, প্রধান সড়ক থেকে দয়াময়ী মন্দিরের প্রবেশপথসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম পালনের অধিকার অক্ষুণ্ণ রেখে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই পত্রের কোনো তোয়াক্কা না করে দুই মন্দিরের বাণিজ্যিক ভবন ভাঙার পায়তারা চলছে।

মন্দির ও এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে স্থাপত্যকলার এই অনন্য নিদর্শন রক্ষার জন্য সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা কামনা করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

(আরআর/এসপি/এপ্রিল ০১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test