E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘হামরা গরিব ভূমিহীন, হামরা যামু কই’

২০১৮ এপ্রিল ০৬ ১৬:৫৯:৫৫
‘হামরা গরিব ভূমিহীন, হামরা যামু কই’

নওগাঁ প্রতিনিধি : ‘হামরা গরিব, অসহায়, ভূমিহীন, থাকোনের কোন জায়গা নেই, হামরা যামু কই’? এ আকুতি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদরপুর ইউনিয়নের নাকইলের গ্রামের অসহায় গরীব মৃত শেফাতুল্লাহর ছেলে আব্দুস সাত্তার, মৃত- মেছের আলীর ছেলে পচা, আইচাঁনের ছেলে শহিদুল ইসলাম। 

তাদের নিজস্ব কোন জায়গা না থাকায় নাকইল গ্রামের রাস্তার পাশে পড়ে থাকা খাস জায়গার উপর দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করে আসছে। নাকইল মৌজার ১০৩৬ দাগের ৪ দশমিক ৪৩ একরের যা বর্তমানে ডহর শ্রেণির, পূর্বে ছিল হাট।

রাস্তার পার্শ্বে বর্তমানের হাটের কোন অস্বিত্ব না থাকায় এলাকার অসহায় গরীব, ভূমিহীন প্রায় ২৭টি পরিবার কোন রকমে মাথাগুজার জায়গা করেছে। কিন্তু এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল তাদের উচ্ছেদের পায়তারা করছে। নাকইল গ্রামের হাফিজুর রহমানের স্ত্রী সামসুন্নাহারের সাড়ে ৮ বিঘা সম্পত্তি রাস্তার পাশে রয়েছে। তারা জমিতে নামতে পারে না বলে প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়ে তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালাচ্ছে।

সরেজমিনে জানা যায়, শামসুন্নাহার সাড়ে ৮ বিঘার জায়গায় ১২ বিঘা দখল করে রেখেছেন। ভূমিহীনরা যারা বসবাস করছেন তারা সামসুন্নাহারের জামিতে যাওয়ার কয়েকটি রাস্তা রেখেছে। সেখানে ২টি দোকান, ১টি ঈদগাহ, ১টি মসজিদ ও ২৭টি পরিবার রয়েছে।

অসহায়, ভূমিহীন আব্দুস সাত্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, হামরা গরীব, অসহায়, ভূমিহীন, হামারগে নিজস্ব কোন জায়গা নেই, থাকার জায়গা না থাকায় এই সরকারের সম্পত্তির উপর ২৭টি পরিবার হাট বন্ধ হওয়ার পর থেকে বসবাস করে আসছি। কিন্তু এই সামসুন্নাহার তার পরিবার আমাদের উচ্ছেদের জন্য বিভিন্ন রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে ভূয়া ২৬জন বাসিন্দা সাজিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেন, তার নেতৃত্বে থাকেন সামসুন্নাহার।

সাত্তার আরো বলেন, সামসুন্নাহার ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর দায়ের করা অভিযোগে বলেন, তার জমিতে নামার রাস্তা আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু জমিতে নামার ৫টি রাস্তা রয়েছে। তাছাড়া সেই তো সাড়ে ৮ বিঘার স্থলে ১২ বিঘা দখল করে রেখেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ ছিল।

শ্রীমন্তপুর-বাহাদুরপুর ভূমি অফিসের সহকারী তহসিলদার হারেজ আলী বলেন, বিষয়টি আমাদের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সামসুন্নাহারের পরিবার ও এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এই গরীব অসরহায়, ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করে নিজেরা দখল করবে বলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী ও অসহায় ভূমিহীনদের আকুতি তাদের যেন উচ্ছেদ করা না হয়। আর যদি উচ্ছেদ একান্তই প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের মাথাগুজার ঠাই করে যেন উচ্ছেদ করে।

(বিএম/এসপি/এপ্রিল ০৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test