E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সুন্দরগঞ্জে নদী ভাঙনের শিকার পরিবার উচ্ছেদে ভূমি দস্যুদের নৈরাজ্য

২০১৮ এপ্রিল ০৭ ১৬:৩২:৩৭
সুন্দরগঞ্জে নদী ভাঙনের শিকার পরিবার উচ্ছেদে ভূমি দস্যুদের নৈরাজ্য

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : তিস্তা নদী বেষ্টিত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অন্যের ভিটেমাটি ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জবরদখল নিয়ে এক শ্রেণীর ভূমি দস্যুদের নৈরাজ্য চলছে। স্থানীয় থানায় মিথ্যা মমলার হিড়িকও পড়েছে। যার প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে একাধিক সূত্রে।

স্থানীয়রা জানান, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১১নং হরিপুর ইউনিযনের লখিয়ার পাড়া মৌজার মৃত নুরুল ইসলাম মন্ডলের ছেলে আব্দুল আজিজ মন্ডল ঢাকার একটি পোশাক শিল্প কারখানার কাজ করেন। তার বড় বোন খাদিজা বেগম কুড়িগ্রামের উলিপুরের একজন এনজিও কর্মী। প্রতিদিন সকালে সে কর্মস্থলে যায় এবং সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে আসে। একমাত্র বৃদ্ধা মাতা রাশেদা বেওয়া নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। উক্ত নিজ বসতবাড়িটিতে পৈত্রিক সূত্রে জন্মলগ্ন থেকে এরা বসবাসরত।

বর্তমানে নদী ভাঙ্গনের শিকার এই পরিবারটির বসতবাড়ি ও ভিটেমাটি ছাড়া আর কোন সম্পত্তি নেই। কিন্তু একই মৌজাবাসীর বাসিন্দা মোঃ হায়দার আলী উক্ত বসতবাড়ি জবর দখলের উদ্দেশ্যে সুন্দরগঞ্জ থানায় গত ২১/০৫/২০১৭ইং তারিখে একটি মামলা করেন, যার থানা কেস নং ২৯, জিআর নং ১৬০/১৭। একই দিন বাদী পক্ষ আসামীদের বসতবাড়িতে অনুপ্রবেশ করে প্রায় লক্ষাধিক টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ কর্তন ও ঘর বাড়ি ভাংচুর করে নতুন টিনসেড বাড়ি নির্মাণ করেন।

এ সময় তারা বাড়ীতে থাকা বৃদ্ধা রাশেদাকে অপহরণ করে নৌকা যোগে নদীতে নিয়ে শ্মাসরুদ্ধ করে হত্যা ও বস্তাবন্দি করে পানিতে নিক্ষেপের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি ছাড়া করে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার রাশেদাকে সুন্দরগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সুযোগও দেয়া হয়নি। নিকট প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তাকে গত ২৩/০৭/২০১৭ইং তারিখে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে তাকে ৩০/০৭/২০১৭ইং পর্যন্ত চিকিৎসাধিনে রাখা হয়। থানায় মামলা নেয়া হয়নি।

এ খবর পেয়ে আব্দুল আজিজ মন্ডল ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় ছুটে আসেন। কিন্তু থানা পুলিশের গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।শুধু তাই নয়, ভূমি দস্যূ হায়দার আলী গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতেও গত ১৩/০৭/২০১৭ইং তারিখে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৪৪/১৪৫ ধারায় নালিশী তফশীল বর্ণিত বসতবাড়িটি নিজ স্বত্ব দখলীয় দাবী করে অপর একটি পৃথক নিষেধাজ্ঞা মোকদ্দমা দায়ের করেন (যার নং পি-৩০৫/১৭)। বিজ্ঞ আদালতের রায়ে উক্ত মোকদ্দমার স্থিতি অবস্থার আদেশ জারি করা হলেও তা অমান্য করে বাদী পক্ষ পুলিশের ছত্র ছায়ায় বিবাদী পক্ষের একমাত্র বসতবাড়ী ভিটা জবর দখলেই রেখেছেন।

এ দিকে সুন্দরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত জিআর নং ১৬০/১৭ মামলার চার্জশিট পর্যালোচনায় থানার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার অসঙ্গতি ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করেছেন আসামী পক্ষ। এতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের ওয়ার্ডে গত ২১/০৪/১৭ থেকে ২৭/০৫/১৭ তারিখ পর্যন্ত ভিকটিম মোঃ আফছার আলী, পিতা-মৃত হাসেম আলী নামের কোন রোগী চিকিৎসাধীনে থাকার নজির নেই (যার তথ্য প্রমাণের নিবন্ধন সংখ্যা ২২২৩, তারিখ ২৫/০৩/২০১৮ইং)। এই তথ্যের ভিত্তিতে জিআর মামলার চার্জশীটের ত্রুটি ও বিভ্রাট প্রমাণিত হওয়ায় আসামী পক্ষ পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবী করেছেন। অপরদিকে, এ সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও হায়দার আলীকে পাওয়া যায়নি। ছবি ০৪

(এসআইআর/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test